ক) সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন(Type-1) প্রশমান-২
খ) সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন (Type-2) প্রশ্নমান-৩
গ) রচনাধর্মী বা বর্ণনাধর্মী প্রশ্নোত্তর। প্রশ্নমান-৫
বাংলা গীতিকবিতার ধারায় বিহারীলাল চক্রবর্তীর অবদান নিয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলো।:একাদশ শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার।
ক) সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন(Type-1) প্রশমান-২
১) গীতিকবিতা কাকে বলে?
উত্তর:কবির সুতীব্র হৃদয় অনুভূতি থেকে গীতিকবিতার জন্ম হয়।কবির ব্যক্তিগত অনুভূতি কল্পনা,সৌন্দর্য ও সংগীতের পাখায় ভর করে নিটোল রস মূর্তি ধারণ করে। সেই সংগীতময় বাকমূর্তির নাম গীতিকবিতা বা লিরিক।
২) বিহারীলাল এর দুই প্রধান অনুগামী গীতিকবি হিসেবে কাদের নাম উল্লেখযোগ্য?
উত্তর:বিহারীলাল এর দুই প্রধান অনুগামী গীতিকবি হিসেবে উল্লেখযোগ্য হলেন- দেবেন্দ্রনাথ সেন ও অক্ষয় কুমার বড়াল।
৩) বিহারীলাল এর শ্রেষ্ঠ গীতিকাব্যের নাম কী? কাব্যটির প্রকাশকাল উল্লেখ করো।
উত্তর;বিহারীলাল এর শ্রেষ্ঠ গীতিকাব্যের নাম হল 'সারদামঙ্গল'। কাব্যটির প্রকাশকাল হল-১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে।
৪) ভোরের পাখি কাকে বলা হয়? তাঁর একটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর:বিহারীলাল চক্রবর্তীকে ভোরের পাখি বলা হয়। তাঁর একটি কাব্যগ্রন্থের নাম হল- 'বঙ্গসুন্দরী'।
৫)বিহারীলাল চক্রবর্তী রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর: বিহারীলাল চক্রবর্তী রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থ হল 'সারদামঙ্গল' ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে এবং 'সাধেরআসন' ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে রচিত হয়।
৬) বিহারীলালের লেখা একটি ক্ষুদ্র কাব্যের নাম লেখো। কাব্যটি প্রকাশকাল উল্লেখ করো।
উত্তর:বিহারীলাল এর লেখা একটি ক্ষুদ্র কাব্যের নাম হলো- 'বঙ্গসুন্দরী'।কাব্যটির প্রকাশকাল হলো ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে।
খ) সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন (Type-2) প্রশ্নমান-৩
১)বাংলা গীতিকবিতার ধারায় বিহারীলাল চক্রবর্তীর ভূমিকা সম্বন্ধে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো।
উত্তর:আধুনিক বাংলা কাব্যের প্রথম গীতিকবি হলেন-বিহারীলাল চক্রবর্তী। বিহারীলালের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল-সঙ্গীত শতক-১৮৬২ খ্রি.বঙ্গসুন্দরী-১৮৭০ খ্রি. নিসর্গসন্দর্শন-১৮৭০ খ্রি. বন্ধুবিয়োগ-১৮৭০ খ্রি. প্রেমপ্রবাহিনী-১৮৭১ খ্রি.সারদামঙ্গল-১৮৭৯ খ্রি.এবং সাধের আসন-১৮৮৯ খ্রি.।
*'নিসর্গসন্দর্শন কাব্যের কবিতাগুলিতে নিসর্গ প্রকৃতিতে ব্যক্তিসত্তা আরোপ করেছেন। জননী-জায়া-কন্যা-ভগিনী প্রভৃতি বিবিধ মূর্তিধারিণী নারীর স্নেহ-মায়া-মমতাময় রূপ ও সৌন্দর্যের সন্ধান করেছেন কবি বঙ্গসুন্দরী কাব্যে। কবি নিজের এবং বন্ধুবর্গের জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতার পাশাপাশি নিজের প্রেমানুভূতিকে কাব্যের আকারে রূপদান করেছেন তাঁর বন্ধুবিয়োগ ও প্রেমপ্রবাহিনী কাব্যদুটিতে। তবে বিহারীলালের শ্রেষ্ঠ কাব্য সারদামঙ্গল,যেখানে কবির সৌন্দর্যচেতনা,গীতিবৈশিষ্ট্য পূর্ণতা লাভ করেছে। সাধের আসন কাব্যটিতে কবি সৌন্দর্যতত্ত্বের তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা করেছেন।
২) বঙ্গসুন্দরীর বিষয়বস্তু কী ছিল?
উত্তর:‘বঙ্গসুন্দরী’ কাব্যে বিহারীলাল কয়েকটি নারীচরিত্র অঙ্কন করে তার মধ্য দিয়ে গৃহচারিণী নারীকে সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রের সৌন্দর্যস্বর্গে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। যে নারী প্রত্যেকের পরিচিত পরিবেশে জননী-জায়া-কন্যা-ভগিনীরূপে গৃহসংসারে আসীন তাকেই তিনি স্বর্গের ইন্দ্রাণী করে এঁকেছেন।
গ) রচনাধর্মী বা বর্ণনাধর্মী প্রশ্নোত্তর। প্রশ্নমান-৫
১)বাংলা গীতি কবিতার ধারায় কবি বিহারীলাল চক্রবর্তীর অবদান আলোচনা করো।
উত্তর: লিরিক বা গীতিকবিতা: কবিমনের আবেগ-অনুভূতি-কল্পনা ছন্দময়ভাবে প্রকাশিত হয় যেসব কাহিনিবিহীন কবিতায়,সংক্ষেপে তাই হল, লিরিক বা গীতিকবিতা।
বিহারীলাল চক্রবর্তীর কাব্যচর্চা:আধুনিক বাংলা কাব্যের প্রথম গীতিকবি হলেন- ভোরের পাখি বিহারীলাল চক্রবর্তী (১৮৩৫-১৮৯৪ খ্রি.)।তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল-সঙ্গীত শতক (১৮৬২ খ্রি.), বঙ্গসুন্দরী (১৮৭০ খ্রি.), নিসর্গসন্দর্শন (১৮৭০ খ্রি.), বন্ধুবিয়োগ (১৮৭০ খ্রি.),প্রেমপ্রবাহিনী (১৮৭১ খ্রি.) সারদামঙ্গল, (১৮৭৯ খ্রি.)এবং সাধের আসন (১৮৮৯ খ্রি.)।সঙ্গীত শতক কাব্যে কবি তাঁর কৈশোর ও প্রথম যৌবনের অভিজ্ঞতা ও অন্যান্য ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বিহারীলাল নিসর্গসন্দর্শন কাব্যের কবিতাগুলিতে নিসর্গ প্রকৃতিতে ব্যক্তিসত্তা আরোপ করেছেন এবং কবি হৃদয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে যে কাব্যশৈলীর উদ্ভাবন ঘটিয়েছেন,তা গীতিকবিতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।জননী,জায়া,কন্যা,ভগিনী-প্রভৃতি বিবিধ মূর্তিধারিণী নারীর স্নেহ-মায়া-মমতাময় রূপ ও সৌন্দর্যের সন্ধান করেছেন কবি বঙ্গসুন্দরী কাব্যে। তবে বিহারীলালের শ্রেষ্ঠ কাব্য সারদামঙ্গল,যেখানে কবির সৌন্দর্যচেতনা, গীতিবৈশিষ্ট্য পূর্ণতা লাভ করেছে।সাধের আসন কাব্যটিতে কবি সৌন্দর্যতত্ত্বের তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা করেছেন।
২)বাংলা গীতিকাব্য ধারায় কবি বিহারীলালের কাব্যপ্রতিভার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
উত্তর:বিহারীলালের কাব্যপ্রতিভা:‘ভোরের পাখি' নামে অভিহিত কৰি বিহারীলালের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল-সঙ্গীত শতক (১৮৬২ খ্রি.), বঙ্গসুন্দরী (১৮৭০ খ্রি.),নিসর্গসন্দর্শন (১৮৭০ খ্রি.), বন্ধুবিয়োগ (১৮৭০ খ্রি.),প্রেমপ্রবাহিনী (১৮৭১ খ্রি.), সারদামঙ্গল (১৮৭৯ খ্রি.) এবং সাধের আসন (১৮৮৯ খ্রি.)। সঙ্গীত শতক কবির গানের সংকলন। নিসর্গসন্দর্শন কাব্যে মানবিক প্রকৃতির সঙ্গে কবি হৃদয়ের সম্পর্ক স্থাপন হতে দেখা যায় | প্রকৃতিকে যথাযথভাবে দেখার ফলে কবি-হৃদয়ের মুগ্ধতার পরিচয় ছড়িয়ে আছে সমুদ্র-দৰ্শন,নভোমণ্ডল,প্রভৃতি কবিতায়। জননী-জায়া-কন্যা- ভগিনী—প্রভৃতি বিবিধ মূর্তিধারিণী নারীর স্নেহ-মায়া-মমতাময় রূপ ও সৌন্দর্যের সন্ধান করেছেন কবি বঙ্গসুন্দরী কাব্যে। নিজের এবং বন্ধুবর্গের জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং নিজের প্রেমানুভূতিকে কাব্যের আকারে রূপদান করেছেন কবি তাঁর বন্ধুবিয়োগ ও প্রেমপ্রবাহিনী কাব্যে। বিহারীলালের শ্রেষ্ঠ কাব্য হল সারদামঙ্গল, যেখানে কবির সৌন্দর্যচেতনা ও গীতিবৈশিষ্ট্য পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। রবীন্দ্রনাথের নতুন বউঠান কাদম্বরী দেবীর অনুরোধে কবি বিহারীলাল সাধের আসন কাব্যে তাঁর সৌন্দর্যভাবনার তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন।
পরিশেষে বলা যায়, বিহারীলালের কবিতার অতিআবেগ ছন্দে ও ভাষায় কিছু কিছু শিথিলতা ধরা পড়েছে। তা সত্ত্বেও তাঁর কবিতা বাংলা কাব্যসাহিত্যের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কারণ আখ্যানকাব্য-মহাকাব্য ধারার পর তিনিই প্রথম বাংলা কাব্যের ইতিহাসে গীতিকবিতার উৎস-মুখ খুলে দিয়েছিলেন।
আরো পড়ুন:
একাদশ শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর click here
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর click here
লালন শাহ ফকিরের গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click here
ভাব সম্মিলন কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click here
ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click here
আগুন নাটকের প্রশ্ন উত্তর click here
আজব শহর কলকেতা প্রবন্ধ প্রশ্ন উত্তর Click here
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান আলোচনা করো। Click here
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান আলোচনা করো। Click here
বাংলা কাব্য সাহিত্যে বিহারীলাল চক্রবর্তী অবদান click here
আড্ডা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click here
0 Comments