ব্যঞ্জনধ্বনি কয়টি ও কি কি।ব্যঞ্জনধ্বনি কাকে বলে।

 

ব্যঞ্জনধ্বনি কয়টি ও কি কি।ব্যঞ্জনধ্বনি কাকে বলে।


*ব্যঞ্জনধ্বনি:


১) ব্যঞ্জনধ্বনি কাকে বলে? বাংলায় ব্যঞ্জনধ্বনি কয়টি? 

উত্তর: যে ধ্বনি স্বরধ্বনির সাহায্য ছাড়া উচ্চারিত হতে পারে না তাকে ব্যঞ্জনধ্বনি বলে। যেমন- ক, খ,গ, ঘ, ঙ ইত্যাদি।

* বাংলা ব্যঞ্জনধ্বনির সংখ্যা মোট ৩৯ টি। 


** ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় শ্বাসবায়ু মুখবিবরের কোথাও না কোথাও বাধা প্রাপ্ত পায়। মুখ বিবরের যে যে স্থানে শ্বাস বায়ু বাধা পায়, সেই সেই স্থানকে বলা হয় উচ্চারণ স্থান। আবার সেই শ্বাসবায়ু দুই ধরনের গতিপথ ও তাতে নানা ধরনের বাধা থাকে। যেমন- কখনো বাইরে থেকে শ্বাসবায়ু ভিতরে যায়,কখনো ভেতর থেকে বাহিরে আসে। শ্বাসবায়ুতে বাধা কখনো আংশিক হয়, কখনো পূর্ণ হয়। বাধার এইসব নানা ধরনকে বলা হয় উচ্চারণপ্রকৃতি।তাহলে ব্যঞ্জনধ্বনির উচ্চারণে বা তার শ্রেণীবিভাগে দুটো বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ-

১)উচ্চারণ স্থান 

২)উচ্চারণ প্রকৃতি

১) উচ্চারণস্থান অনুযায়ী ব্যঞ্জনধ্বনির শ্রেণীবিভাগ: 


 ক)কণ্ঠ্য ব্যঞ্জনধ্বনি:

 উত্তর: কোমল তালুতে জিভের পিছন দিক ঠেকিয়ে ক,খ,গ,ঘ,ঙ- এই পাঁচটি বাংলা ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণ করা হয় বলে এদের কণ্ঠ্য ব্যঞ্জন ধ্বনি বলা হয়।এ ধরনের ব্যঞ্জনধ্বনির অপর নাম হল স্নিগ্ধ তালব্য ধ্বনি।


খ) তালব্য ব্যঞ্জনধ্বনি:

জিভের প্রসারিত সামনের অংশ কঠিন তালুতে টুইয়ে যেসব ধ্বনি উচ্চারণ করা হয়, সেগুলিই হল তালব্য ব্যঞ্জনধ্বনি।যেমন-চ,ছ,জ,ঝ,ঞ,শ।


গ) মূর্ধন্য ধ্বনি:

জিভের সামনের দিকটা যখন তালু স্পর্শ করে এবং শ্বাসবায়ুকে বাধা দেয়,তখন সেই ব্যঞ্জনধ্বনি গুলিকে মূর্ধন্য ব্যঞ্জনধ্বনি বলা হয়।যেমন-ট,ঠ,ড,ঢ,ণ,ড়,ঢ় ।

 

ঘ) দন্ত্য ব্যঞ্জনধ্বনি:

  ত,থ,দ,ধ,- এই ব্যঞ্জনধ্বনি গুলি উচ্চারণ করার সময় জিভের ডগা উপরের দাঁত স্পর্শ করে শ্বাসবায়ুকে বাধা দেয়। তাই এইসব ব্যঞ্জনবর্ণকে দন্ত্য ব্যঞ্জনধ্বনি বলা হয়।


ঙ) ওষ্ঠ্য ব্যঞ্জনধ্বনি:

দুটি ঠোঁট বন্ধ করে ভিতরের শ্বাসবায়ুকে আটকে রাখার পর ঠোঁট দুটি সামান্য খুলে যে ধ্বনি উচ্চারণ করা হয়, তাকেই বলে ওষ্ঠা ব্যঞ্জনধ্বনি।যেমন-প, ফ,ব,ভ,ম।


চ) দন্ত্যমূলীয় ব্যঞ্জনধ্বনি:

জিভের ডগা দন্তমূল স্পর্শ করে। শ্বাসবায়ুকে বাধা দিলে যে ধ্বনি উচ্চারিত হয় তাকে বলে দস্ত্যমূলীয় ব্যঞ্জনধ্বনি। যেমন- র,ল,ন ।


ছ) স্বরতন্ত্রী বা কণ্ঠ নালীয় ব্যঞ্জনধ্বনি: 

স্বরতন্ত্রী দুটি পরস্পরের মধ্যবর্তী শ্বাসবায়ুর পথ সংকুচিত করে,যে ধ্বনি সৃষ্টি করে, তাকেই স্বরতন্ত্রীয় ব্যঞ্জনধ্বনি বা কণ্ঠনালীয় ব্যঞ্জনধ্বনি বলে। যেমন- হ।


২) উচ্চারণপ্রকৃতি অনুযায়ী ব্যঞ্জনধ্বনির শ্রেণিবিভাগ:


 উচ্চারণের প্রকৃতি অনুসারে ব্যঞ্জনধ্বনিকে প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা হয়-


ক) স্পর্শ বা ধ্বনি:

যে ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় মুখবিবরে শ্বাসবায়ু কিছুক্ষণের জন্য সম্পূর্ণ বুদ্ধ হয়ে যায়, তাকেই বলা হয় স্পর্শ ব্যঞ্জনধ্বনি। বাংলা ধ্বনিমালায় ক থেকে ম পর্যন্ত মোট পঁচিশটি ব্যঞ্জনধ্বনি আছে। এদেরকে বলা হয় স্পর্শ বা ব্যঞ্জনধ্বনি। 


** স্পর্শ ধ্বনিগুলি উচ্চারণের সময় আমাদের জিভের কোনো-না-কোনো অংশের সঙ্গে কন্ঠ, তালু,  মূর্ধা, দন্ত, কিংবা ঠোঁট দুটির স্পর্শ ঘটে। জিতের এই স্পর্শের স্থান অনুসারে স্পর্শ ব্যঞ্জনধ্বনি গুলিকে পাঁচটি বর্গ বা শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। এগুলি হল-

১) ক- বর্গ- ক, খ, গ, ঘ, ঙ- কণ্ঠ্য ব্যঞ্জন,

২) চ- বর্গ- চ, ছ, জ,ঝ,ঞ - তালব্য ব্যঞ্জন, 

৩) ট- বর্গ-ট,ঠ,ড,ঢ, ণ- মূর্ধন্য ব্যঞ্জন,

৪) ত- বর্গ- ত,থ,দ,ধ,ন -দন্ত্য ব্যঞ্জন,

৫)প-বর্গ- প, ফ, ব, ভ, ম – ওষ্ঠা ব্যঞ্জন

-

খ)প্রবাহিত ব্যঞ্জনধ্বনি বা প্রবাহী ব্যঞ্জনধ্বনি:

যে ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণে শ্বাসবায়ু বেরিয়ে যাওয়ার সময় বাকযন্ত্রে পুরোপুরি বাধা পায় না কিন্তু একটা বাধার ভাব সৃষ্টি হয় এবং যার উচ্চারণ কিছুক্ষণ ধরে চলতেই থাকে, তাকে প্রবাহিত বা প্রবহী ব্যঞ্জনধ্বনি বলা হয়। যেমন- র, ল, শ ইত্যাদি।


*প্রতিহত ও প্রবাহী ব্যঞ্জনের আবার দুটো করে ভাগ- 


 ক)নাসিক্য ব্যঞ্জনধ্বনি:

যে ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণ করার সময় শ্বাসবায়ু একইসঙ্গে মুখবিবর এবং নাসাপথের মধ্য দিয়ে বের হয়, তাকে বলা হয় নাসিকা ব্যঞ্জনধ্বনি।যেমন- বর্গের শেষ ব্যঞ্জন ধ্বনিটি।যেমন-ও,ঞ,ণ,ন,ম।


খ)মৌখিক ব্যঞ্জনধ্বনি:

যে ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণ করার সময় শ্বাসবায়ু কেবল মুখ দিয়েই বেরিয়ে আসে, তাকে বলা হয় মৌখিক ব্যঞ্জনধ্বনি।যেমন-বর্গের প্রথম চারটি ব্যঞ্জনধ্বনি হল - মৌখিক ব্যঞ্জনধ্বনি।এছাড়াও র, ল, শ, স, হ, ড় ঢ় এই সাতটি ধ্বনি হল প্রবাহী মৌখিক ব্যঞ্জনধ্বনির উদাহরণ।


*এই প্রবাহী মৌখিক ব্যঞ্জনগুলিকে আবার নানা ভাগে ভাগ করা যায়-


১)কম্পিত ব্যঞ্জনধ্বনি:

যে ব্যঞ্জনের উচ্চারণে জিভের ডগা কেঁপে গিয়ে দাঁতের গোড়া বা দন্তমূল স্পর্শ করে, তাকে বলে কম্পিত ব্যঞ্জনধ্বনি। যেমন- র


২) তাড়িত ব্যঞ্জনধ্বনি: 

শ্বাসবায়ুর গতিপথে জিভের সামনের দিকটা যদি তালুতে একবার মাত্র টোকা দিয়ে ছোঁয় এবং শ্বাসবায়ু তাকে জোরে ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দিতে চায়, তবে যে ধ্বনি সৃষ্টি হয়, তাকে তাড়িত ব্যঞ্জনধ্বনি বলে। যেমন-ড়,ঢ়,


৩)নৈকট্য ব্যঞ্জনধ্বনি: 

শ্বাসবায়ুর গতিপথে বাধা যদি এত কম হয় যে, কোনো ঘর্ষণধ্বনি শোনা যায় না অথচ

মনে হয় বাধার ভাবটি রয়েছে,তবে তাকে বলে নৈকট্য ব্যঞ্জনধ্বনি। নৈকট্য ব্যঞ্জন হল উষ্ম ব্যঞ্জনধ্বনি ও স্বরধ্বনির মাঝামাঝি এক ধরনের ধ্বনি।তাই একে অন্তস্থ ব্যঞ্জনও বলা হয়।


৪)উষ্ম ব্যঞ্জনধ্বনি:

উচ্চারণের সময় শ্বাসবায়ু বেরিয়ে যাওয়ার পথ একেবারে বন্ধ না হলেও খুবই সংকুচিত হয়। ফলে চাপের সৃষ্টি হয়ে একটা শিস-জাতীয় ধ্বনি উৎপন্ন হয়। তাকে উষ্ম ব্যঞ্জনধ্বনি বলে। যেমন-শ,স,হ


৫) পার্শ্বিক ব্যঞ্জনধ্বনি: 

ব্যঞ্জনধ্বনির উচ্চারণে জিভের ডগা দন্তমূলকে

দৃঢ়ভাবে স্পর্শ করে এবং শ্বাসবায়ু জিভের দুই পাশ

দিয়ে বেরিয়ে আসে। তাকে পার্শ্বিক ব্যঞ্জনধ্বনি বলে। যেমন-ল


**ঘোষ-অঘোষ ব্যঞ্জনধ্বনি:

ব্যঞ্জনধ্বনির- ঘোষ,অঘোষ বিচার করা হয়, উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রীর কম্পন অনুযায়ী।এর বিভাগগুলি হল-


ক)ঘোষ ব্যঞ্জনধ্বনি:

যেসব ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণ করার সময় আমরা সেই ধ্বনিটির সঙ্গে স্বরতন্ত্রীর কম্পনজাত সুর বা ঘোষ মিশিয়ে উচ্চারণ করি, সেইসব ব্যঞ্জনধ্বনিকে ঘোষ বা ঘোষবৎ ব্যঞ্জনধ্বনি বলা হয়।যেমন- বর্গের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম ধ্বনি হল ঘোষ ধ্বনি। এ ছাড়া র, ল, হ, ড়, ঢ়, য় প্রবাহী ব্যঞ্জনগুলিও ঘোষ ধ্বনি।


খ) অঘোষ ব্যঞ্জনধ্বনি:

যে ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় আমরা সেই ধ্বনিটির সঙ্গে স্বরতন্ত্রীর কম্পনজাত সুর বা ঘোষ

মিশিয়ে দিই না, তাকে অঘোষ ব্যঞ্জনধ্বনি বলে। যেমন- বর্গের প্রথম ও দ্বিতীয় এবং শ ও স অঘোষ ধ্বনি।


** অল্পপ্রাণ মহাপ্রাণ ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণপ্রকৃতি অনুসারে ব্যঞ্জনধ্বনির শ্রেণিবিভাগের ক্ষেত্রে শেষতম উল্লেখযোগ্য শ্রেণিবিভাগটি হল-


ক) অল্পপ্রাণ ব্যঞ্জনধ্বনি:

যে ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় শ্বাসবায়ু  কম পরিমাণে নির্গত হয়,তাকে অল্পপ্রাণ ব্যঞ্জনধ্বনি বলা হয়।যেমন- বর্গের প্রথম ও তৃতীয় ধ্বনি হল অল্পপ্রাণ। এ ছাড়া প্রবাহী ব্যঞ্জনধ্বনি ড় হল অল্পপ্রাণ ধ্বনি।


খ)মহাপ্রাণ ব্যঞ্জনধ্বনি:

যে ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় শ্বাসবায়ু বা প্রাণ বেশি পরিমাণে নির্গত হয়, তাকে বলে মহাপ্রাণ ব্যঞ্জনধ্বনি যেমন বর্গের দ্বিতীয় ও চতুর্থ ধ্বনি এবং ঢ়  হল মহাপ্রাণ ধ্বনি।


CONTENTS:

আরো পড়ুন:

কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here 

ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশের প্রশ্ন উত্তর Click Here 

ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here

 দাম গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here 

নব নব সৃষ্টি প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click Here 

 হিমালয় দর্শন গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here 

ভাঙার গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর click Here  

আবহমান কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here

 আমরা কবিতা প্রশ্ন উত্তর click Here

খেয়া কবিতার প্রশ্ন উত্তর click Here  

নিরুদ্দেশ গল্পের প্রশ্ন উত্তর click Here

চন্দ্রনাথ গল্পের প্রশ্ন উত্তর part-1 click Here  

চন্দ্রনাথ গল্পের প্রশ্ন উত্তর part-2 click Here 


ব্যোমযাত্রীর ডায়েরির প্রশ্ন উত্তর Click Here 

কর্ভাস গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here 




Teles of Bhola grandpa Lesson1 Unit 1 Click Here

Teles of Bhola grandpa Unit 2 Click Here


All about a Dog Lesson 2-Unit -1 -Click Here

All about a Dog Lesson 2 Unit 2 Click Here


Autumn poem Lesson 3 Part 1 Click Here


A Day in the zoo Lesson 4 Part 1 Click Here

A Day in the zoo Lesson 4 part 2 Click Here


All Summer in a Day Lesson 5 part 1 Click Here

The price of bananas part 1 click Here 

The price of bananas part 2 click Here 

Hunting snake poem question answer click Here 

Cucumber is beneficial for the body click Here



ডাবের জলে উপকারিতা click Here 

দুধের উপকারিতা click here

ওজোন গ্যাস click here 

রক্ত সম্পর্কে আলোচনা click here 


অস্থি বা হাড়ের কার্যাবলী Click here 

থাইরয়েড গ্রন্থির প্রশ্ন উত্তর Click here 



প্রবন্ধ রচনা দৈনন্দিন জীবনের বিজ্ঞান Click here 

একটি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা প্রবন্ধ রচনা click here 

বাংলার উৎসব প্রবন্ধ রচনা Click here 

বিজ্ঞান ও কুসংস্কার প্রবন্ধ রচনা Click here 

গাছ আমাদের বন্ধু প্রবন্ধ রচনা Click here 


ধ্বনি ও স্বরধ্বনির প্রশ্ন উত্তর Click here 

ব্যঞ্জনধ্বনি প্রশ্ন উত্তর Click here 
















Post a Comment

0 Comments