ক। বিষয় সংক্ষেপ
খ। নামকরন
গ) সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন(Type-1) প্রশমান-২
ঘ) সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন (Type-2) প্রশ্নমান-৩
ঙ) রচনাধর্মী বা বর্ণনাধর্মী প্রশ্নোত্তর। প্রশ্নমান-৫
ক) বিষয় সংক্ষেপ:
রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর সাহচর্যের কারণে একান্ত ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী রবীন্দ্রনাথের মূল্যায়ন করতে চেয়েছেন। ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার, নাট্যকার কিংবা কবি হিসেবে রবীন্দ্রনাথের যে খ্যাতি ও দক্ষতা তাকে লেখক অস্বীকার করেননি,রবীন্দ্রনাথের রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি কিংবা শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তাঁর যে বিকল্প শিক্ষাভাবনা তার কৃতিত্বকেও তিনি শিরোধার্য করেছেন। কিন্তু প্রাবন্ধিক মনে করেন যে, রবীন্দ্রনাথের অমরত্ব তাঁর গানের জন্য। বহু বিখ্যাত কবি এবং গীতিকারদের সৃষ্টির সঙ্গে লেখক পরিচিত হয়েছিলেন এবং নিজেকে ধন্য মনে করেছিলেন। কিন্তু কোথাও একটা অতৃপ্তি তার মধ্যে কাজ করেছে। রবীন্দ্রনাথের গান শুনতে গিয়ে সেই অতৃপ্তির কারণ তিনি উপলব্ধি করেছেন। তাঁর মনে হয়েছে রবীন্দ্রনাথের গান যে অখণ্ড রূপ দিয়ে তাঁর মনকে অভিভূত করতে পারে তা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। এর সঙ্গে কিছুটা তুলনা করা যায়, জার্মানদের ‘লীডার’ কিংবা ইরানিদের গজলের, কিন্তু সেখানেও রয়েছে অসম্পূর্ণতা, যা রবীন্দ্রনাথের গানে কখনোই নেই। রবীন্দ্রগানে অতৃপ্তি কখনো-কখনো আসে, কিন্তু সে অতৃপ্তি আসলে তার ব্যঞ্জনার কারণে। তা রবীন্দ্রনাথের গানকে আরও ভালোভাবে শুনতে, আরও গভীরে ডুব দিতে আমাদের বাধ্য করে। রবীন্দ্রনাথের গান কখনোই নিজেকে সম্পূর্ণ নিঃশেষ করে না। গানের শব্দচয়ন, শব্দসংস্থাপন যে ভাব, অর্থ এবং মাধুর্যের পরিসমাপ্তিতে পৌঁছে দেয় তা বিকল্পহীন।
খ) নামকরণ:
পঁচিশে বৈশাখের মধ্যে যে উদযাপনের ইঙ্গিত আছে সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রবন্ধ তা নয়। বরং কবির ভাবনার স্বীকরণের মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথের জন্মদিনকে সম্মান জানিয়েছেন লেখক।
প্রবন্ধের আলোচ্য বিষয় রবীন্দ্রনাথ।গানের মধ্য দিয়ে কীভাবে রবীন্দ্রনাথ লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর জীবনে একক হয়ে উঠেছেন সমগ্র প্রবন্ধে তারই ভাষ্য রচনা করেছেন প্রাবন্ধিক। সৃষ্টির মধ্য দিয়েই রবীন্দ্রনাথ নিজের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। সেই দক্ষতা তাঁর রাজনৈতিক দূরদৃষ্টিতে পাওয়া গিয়েছে। কিংবা অন্যান্য কাজকর্মেও। কিন্তু গান তাঁর মধ্যে জাগিয়ে তুলেছে এক অখণ্ড স্বরূপের বোধ, যেখানে কোনো অসম্পূর্ণতা নেই, অতৃপ্তি আছে। কিন্তু সে অতৃপ্তি আরও বেশি করে সেই গানের গভীরে ডুব দেওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। রবীন্দ্রনাথের গান কখনোই নিজেকে সম্পূর্ণ নিঃশেষ করে না। আকাশ আর মৃত্তিকা, স্বর্গ আর মর্ত্যের মধ্যে সে গান প্রতিনিয়ত চলাচল করে। তৈরি হয় পাঠকের অনুভূতির নবপ্রস্থান। ‘পঁচিশে বৈশাখ' এই নামকরণে যেন সেই গানের সৃষ্টিকর্তা রবীন্দ্রনাথের অলৌকিক ক্ষমতাকে প্রণতি জানিয়েছেন প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী।
গ) সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন(Type-1) প্রশমান-২
১)'রবীন্দ্রনাথের সাহচর্য পেয়েছিলুম,'সেই কারণে প্রাবন্ধিক কী বলতে চেয়েছেন।
উত্তর:প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত 'পঁচিশে বৈশাখ'প্রবন্ধে,রবীন্দ্রনাথের সাহচর্য পেয়েছিলেন বলে প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী প্রথাগত মূল্যায়নের বাইরে গিয়ে তাকে ব্যক্তিগতভাবে দেখতে চেয়েছিলেন। সেই কারণে সুশীল পাঠক এবং সদয় পাঠিকাদের কাছে তিনি ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন।
২)''প্রথাগত মূল্যায়নে সাহিত্যসৃষ্টিতে রবীন্দ্রনাথের যেসব গুণের দিকে ইঙ্গিত করা হয় তা আলোচনা করো ।
উত্তর:প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলির রচিত 'পঁচিশে বৈশাখ' প্রবন্ধে, রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস সৃষ্টির দক্ষতাকে স্বীকার করা হয়, ছোটোগল্পে তিনি মপাসাঁ, চেখব-কে ছাপিয়ে গিয়েছেন কিংবা নাট্যসাহিত্যে তিনি যে-কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন,কবি হিসেবে তিনি বিশ্বের সকল মানুষের কাছে প্রশংসার অধিকারী তাঁর গবেষণা,পণ্ডিতদের নির্বাক করে দেয় এই রকমটা ভাবা হয়।
৩) নির্বাক করে দিয়েছে - কাদের কীভাবে নির্বাক করে দিয়েছে লেখো।
উত্তর:প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত'পঁচিশে বৈশাখ' প্রবন্ধ, রবীন্দ্রনাথ শব্দতত্ত্ব বিষয়ে যে গবেষণা করেছেন, তাঁর গভীরতা পণ্ডিতদের নির্বাক করে দিয়েছে বলে সৈয়দ মুজতবা আলী মনে করেছেন
৪)'সে বিষয়েও কোনো সন্দেহ নেই।'- কোন বিষয়ে কোনো সন্দেহ না-থাকার কথা বলা হয়েছে।
উত্তর:প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুক্তবা আলীর রচিত 'পঁচিশে বৈশাখ' প্রবন্ধে, উপন্যাস, নাটক, কবিতা সৃষ্টিতে, শব্দতত্ত্ব নিয়ে গবেষণায় রাজনৈতিক দূরদৃষ্টিতে রবীন্দ্রনাথ চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। এসবের পাশাপাশি গুরুদের হিসেবে তিনি যে শান্তিনিকেতন নির্মাণ করেছিলেন, তাঁর ছায়ায় পৃথিবীর মানুষ একদিন সুখ লাভ করবে সে বিষয়ে লেখকের কোনো সন্দেহ নেই।
৫)'সুরের দিক দিয়ে বিচার করব না।'- কেন প্রাবন্ধিক এ কথা বলেছেন?
উত্তর:প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত 'পঁচিশে বৈশাখ' প্রবন্ধে,রবীন্দ্রনাথের গান রবীন্দ্রনাথের অমরত্বের জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখে প্রাবন্ধিক এ কথা মনে করলেও, তিনি সুরের দিক থেকে সেই গানের বিচার করতে চাননি। কারণ তিনি মনে করেন,রবীন্দ্র-সংগীতে এমন কোন জিনিস বাদ দেননি, যা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
৬)'রবীন্দ্রনাথের গানের সঙ্গে 'লীডার' বা গজল-এর যে পার্থক্য প্রাবন্ধিক লক্ষ করেছেন তা লেখো।
উত্তর:প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলির রচিত পঁচিশে বৈশাখ' প্রবন্ধে, রবীন্দ্রনাথের গানের সঙ্গে জার্মানদের ‘লীডার' বা ইরানের গজল গানের কিছু সাদৃশ্য রয়েছে। কিন্তু মূল পার্থক্য হল রবীন্দ্রনাথের গান যেখানে অখণ্ড,সেখানে ‘লীডার ’ বা গজল শুনে মনে হয়, সেই গান হঠাৎই শেষ হয়ে গেছে অর্থাৎ তা অসম্পূর্ণ মনে হয়।
৭)'শুধু যে অতৃপ্ত রেখে গিয়েছে তাই নয়,অসম্পূর্ণ বলেই মনে হয়ছে'- যে বিষয়ে লেখক এ কথা বলেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর:প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলির রচিত'পঁচিশে বৈশাখ' প্রবন্ধে, প্রাবন্ধিক রবীন্দ্রসংগীতের স্বাদ কিছুটা পেয়েছিলেন জার্মানদের 'লীডার' এবং ইরানিদের গজল গানে। কিন্তু তাঁর মনে হয়েছে যে, লীডার কিংবা গজল আরও কিছুক্ষণ ধরে চললে ভালো হত। অর্থাৎ তা যেন সম্পূর্ণ তৃপ্তির আগেই শেষ হয়ে গেছে। এই প্রসঙ্গেই লেখক উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছেন।
৮)'..তখন মনে হয়,'- কী মনে হওয়ার কথা এখানে বলা হয়েছে?
উত্তর: প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলির রচিত 'পঁচিশে বৈশাখ' প্রবন্ধে, রবীন্দ্রনাথের গান অন্তিমে যদি কোনো অতৃপ্তি রেখে যায় তা তার অসম্পূর্ণতা নয়। তা আসলে অতৃপ্তির মধ্য দিয়ে আকাঙ্ক্ষার জন্ম দেয়।লেখক মনে করেন যে, তাঁর গান তাঁর সামনে যে ভুবন গড়ে দিয়েছে প্রথম পরিচয়ে তার সবকিছু জানা না হলেও কোনো কষ্ট নেই। সে গান আবার শুনতে হবে এবং সেই ভূবনের আরও অনেকটা তাঁর কাছে উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে।
৯)'..কিন্তু আরেকটি কথা তার চেয়েও সত্য'- কীসের থেকে,কী সত্য বলে প্রাবন্ধিক মনে করেছেন?
উত্তর:প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলির রচিত'পঁচিশে বৈশাখ' প্রবন্ধে,রবীন্দ্রনাথের গানে অন্তরে যে অতৃপ্তি থাকে তা আসলে তাঁর গান শুনতে আরও আগ্রহী করে তোলে এবং এই ভাবেই গানের ভিতর দিয়ে অন্তর্ভুবনের সন্ধান পাওয়া যায়। এই বিষয়টির থেকে অধিকতর সত্যের কথা লেখক এখানে বলতে চেয়েছেন।
ঘ) সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন (Type-2) প্রশ্নমান-৩
১)'যদি তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে দেখি'- প্রাবন্ধিক কার সম্পর্কে এ কথা বলেছেন ? 'ব্যক্তিগতভাবে' দেখা বলতে তিনি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর:প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত'পঁচিশে বৈশাখ' প্রবন্ধে,রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছেন।
* রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ছিল প্রাবন্ধিকের ব্যক্তিগত সাহচর্য।এই কারণে সাহিত্য সমালোচকের দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি রবীন্দ্রনাথকে ভাবতে চাননি। উপন্যাসে, নাটকে, ছোটোগল্পে, কবিতায়, কথায় সামগ্রিক সাহিত্য সৃষ্টিতে রবীন্দ্রনাথের যে দক্ষতা,শব্দতত্ত্ব নিয়ে তাঁর যে গবেষণা কিংবা রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি অথবা শান্তিনিকেতন নির্মাণে তাঁর যে বিকল্প ভাবনা; সবই সমালোচক কিংবা বিশেষজ্ঞদের আলোচনার বিষয় হয়েছে বারে বারে। কিন্তু সৈয়দ মুজতবা আলী রবীন্দ্রনাথকে ধরতে চেয়েছেন ব্যক্তিগত অনুভবে, বিশেষত তাঁর গানের মধ্য দিয়ে। তিনি উপলব্ধি করেছেন,নিজস্ব অনুভবে রবীন্দ্রনাথকে দেখেন বলেই সেখানে তাঁর ব্যক্তিগত ভাব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
২)'আমার কিন্তু ব্যক্তিগত বিশ্বাস'- লেখক কোন্ প্রসঙ্গে, কী ব্যক্তিগত বিশ্বাসের কথা বলেছেন?
উত্তর: প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত 'পঁচিশে বৈশাখ' প্রবন্ধে, রবীন্দ্রনাথের মূল্যায়ন হয় তাঁর উপন্যাস,ছোটোগল্প, নাটক, কবিতা অর্থাৎ সাহিত্য সৃষ্টি নিয়ে। তাঁর রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি কিংবা সমাজ সংগঠন শিক্ষার বিকল্প ভাবনা এসবও আলোচনার বিষয় হতে পারে। প্রথাগত এই রবীন্দ্র মূল্যায়ন প্রসঙ্গেই প্রাবন্ধিক নিজের বিশ্বাসের কথা জানিয়েছেন। প্রাবন্ধিক মনে করেন, রবীন্দ্রনাথ অমর হয়ে থাকবেন তাঁর গানের জন্য।
৩)'..কতকগুলো অপূর্ব গুণের সমন্বয় হলে পর এ রকম গান সৃষ্ট হতে পারে।'- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
উত্তর:সৈয়দ মুজতবা আলীর মতো তিনি সাহিত্যে সন্ধান করেছেন তা হল গীতিরস। শেলি,কীটস থেকে কালিদাস, জয়দেব কিংবা গালিব সর্বত্রই এই রসাস্বাদনই ছিল তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। তিনি এমন এক অখণ্ড রূপের সন্ধান পেয়েছিলেন,যা মনকে অভিভূত করে রাখে পারে। এই মুগ্ধতা থেকেই লেখক উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছেন।
৪)'জীবন ধন্য মেনেছি কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে বার বার বলেছি '- কখন প্রাবন্ধিক ধন্য হয়েছেন এবং তিনি কী বলেছেন?
উত্তর:প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত পঁচিশে বৈশাখ প্রবন্ধে,কবিতা বা গানের কাছে চিরজীবন দ্বারস্থ হয়েছেন রসের সন্ধানে। সেই রস হচ্ছে গীতিরস।শেলি,কীটস,গ্যেটে, হাইনে,হাফিজ আত্তার, কালিদাস,জয়দেব,গালিব, এঁদের গান কিংবা কবিতার রসাস্বাদন করতে গিয়ে তিনি নিজের জীবনকে ধন্য মনে করেছেন।
* প্রাবন্ধিকের মনে হয়েছে,'এমনটি আর পড়িল না চোখে,আমার যেমন আছে।' অর্থাৎ তাঁর নিজের যে সম্পদ আছে সেই সম্পদ তিনি আর কোথাও খুঁজে পাননি। সেই সম্পদেরই নাম রবীন্দ্রনাথ।
৫)' কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বার বার হার মেনেছি ।'- হার মানা বলতে প্রাবন্ধিক কী বুঝিয়েছেন ?
উত্তর: প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুস্তাফা আলীর রচিত 'পঁচিশে বৈশাখ' প্রবন্ধ,শেলি,কীটস,গ্যেটে,হাইনে,হাফিজ আত্তার,কালিদাস,জয়দেব,গালিব, এঁদের গান কিংবা কবিতার রসাস্বাদন করতে গিয়ে প্রাবন্ধিক নিজের জীবনকে ধন্য মনে করলেও কোথাও একটা অতৃপ্তি মনের মধ্যে থেকে গিয়েছে।
* প্রাবন্ধিক মনে করেছেন যে,রবীন্দ্রনাথের গান এমন এক অখণ্ড রূপ নিয়ে হৃদয় ও মনকে অভিভূত করে দেয় যে সমস্ত রকমের বিশ্লেষণ ক্ষমতা তখন সম্পূর্ণ লোপ পায়।
ঙ) রচনাধর্মী বা বর্ণনাধর্মী প্রশ্নোত্তর। প্রশ্নমান-৫
১)'একদিন সে ভুবন আমার নিতান্ত আপন হয়ে উঠবে।'- কোন্ ভুবনের কথা বলা হয়েছে ? কীভাবে তা লেখকের আপন হয়ে উঠবে?
উত্তর: প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত 'পঁচিশে বৈশাখ' প্রবন্ধে, রবীন্দ্রনাথের গানের মধ্য দিয়ে লেখক যে ভুবনের সন্ধান পান এখানে তার কথাই বলা রয়েছে।
* রবীন্দ্রনাথের গান কখনোই অসম্পূর্ণ নয়, কিন্তু তা কখনো-কখনো অতৃপ্তি রেখে যায়। কারণ এই অতৃপ্তি কবিতা বা গানের রস-সার্থকতা ও ব্যঞ্জনার স্বাভাবিক ধর্ম। শ্রোতা হিসেবে প্রাবন্ধিকের মনে হয়েছে যে, প্রথম পরিচয়ে গান অন্তর্ভুবনের সবটুকুর সন্ধান দিতে না পারলেও আবার যে শোনার আগ্রহ তৈরি হয় তা ওই ভুবনকে আবার উদ্ভাসিত করে তুলবে এবং একদিন তা শ্রোতার নিতান্ত আপন হয়ে উঠবে।
২)'তারায় তারায় দীপ্ত শিখার অগ্নি জ্বলে'- এই গানটি 'পঁচিশে বৈশাখ' প্রবন্ধে উদ্ধৃত করার কারণ কী?
উত্তর: সৈয়দ মুজতবা আলী রবীন্দ্রগানের সন্ধানে বলেছেন যে, রবীন্দ্রনাথের গান 'নীলাম্বরের মর্মমাঝে' বিচরণের পর আবার পৃথিবীতে ফিরে আসবে। স্বর্গসভার মহাঙ্গন থেকে এই ‘শ্যামল মাটির ধরাতলে', যেখানে ঘাসে ঘাসে রঙিন ফুলের আলপনা, আর বনের পথে আঁধার-আলোর আলিঙ্গন সেখানে খেলার ছলে কবির দিন কাটে। লোকোত্তর থেকে মর্ত্য-পৃথিবীতে কবির এই ফিরে আসার দৃষ্টান্ত হিসেবেই গানটির উল্লেখ করা হয়েছে।
৩)' অলৌকিক কর্ম যিনি করতে পারেন তিনিই বিশ্বকর্মা মহাত্মা ।'- কার সম্পর্কে বলা হয়েছে ? এরূপ মন্তব্যের কারণ আলোচনা করো।
উত্তর:প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলির রচিত 'পঁচিশে বৈশাখ' প্রবন্ধে,রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে উল্লিখিত মন্তব্যটি করা হয়েছে।
* রবীন্দ্রনাথের গান কখনও শ্রোতা বা পাঠককে ‘মৃত্তিকার বন্ধন’ থেকে নিয়ে যায় ‘নীলাম্বরের মর্মমাঝে'। আবার সেই গানই মৃত্তিকাকে স্বর্গের থেকে মধুময় করে তোলে। এভাবে কখনও স্বর্গে, কখনও মর্ত্যে, কখনও ‘আপন অজানার সন্ধানে, কখনও মানুষকে দেবতা বানিয়ে আবার কখনও দেবতার থেকে মানুষকে মহৎ করে তুলে রবীন্দ্রনাথের গান শুধুমাত্র শব্দ আর সুরের সাহায্যে এক অদ্ভুত কাজ করে। প্রাবন্ধিকের ভাষায় এ হল অলৌকিক কর্ম। যিনি এ কাজ করতে পারেন তিনি মহাত্মা বিশ্বকর্মার সঙ্গে তুলনীয়।
৪) পঁচিশে বৈশাখ প্রবন্ধে সৈয়দ মুজতবা আলীর গান ছাড়া রবীন্দ্রনাথের অন্য কোন কোন গুণের উল্লেখ করেছেন ? তাঁর কাছে কবির গান অসম্পূর্ণ রূপে প্রতিভাত কেন হয় না?
উত্তর: প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলির রচিত 'পঁচিশে বৈশাখ' প্রবন্ধে,- উপন্যাসে, নাটকে, ছোটোগল্পে, কবিতায়, সাহিত্য সৃষ্টিতে রবীন্দ্রনাথের যে দক্ষতা, শব্দতত্ত্ব নিয়ে তাঁর যে গবেষণা কিংবা রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি অথবা শান্তিনিকেতন নির্মাণে তাঁর যে ভাবনা,সমালোচক কিংবা বিশেষজ্ঞদের আলোচনার বারে বারে উঠে এসেছে।
* রবীন্দ্রনাথের গান কখনোই অসম্পূর্ণ নয়, কিন্তু তা কখনো-কখনো অতৃপ্তি রেখে যায়। কারণ এই অতৃপ্তি কবিতা বা গানের রস-সার্থকতা ও ব্যঞ্জনার স্বাভাবিক ধর্ম। শ্রোতা হিসেবে প্রাবন্ধিকের মনে হয়েছে যে, প্রথম পরিচয়ে গান অন্তর্ভুবনের সবটুকুর সন্ধান দিতে না পারলেও আবার যে শোনার আগ্রহ তৈরি হয় তা ওই ভুবনকে আবার উদ্ভাসিত করে তুলবে এবং একদিন তা শ্রোতার নিতান্ত আপন হয়ে উঠবে।
আরো পড়ুন:
একাদশ শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর click here
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর click here
লালন শাহ ফকিরের গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click here
ভাব সম্মিলন কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click here
ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click here
আগুন নাটকের প্রশ্ন উত্তর click here
আজব শহর কলকেতা প্রবন্ধ প্রশ্ন উত্তর Click here
পঁচিশে বৈশাখ প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click here
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান আলোচনা করো। Click here
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান আলোচনা করো। Click here
বাংলা কাব্য সাহিত্য মাইকেল মধুসূদন দত্তের অবদান
চরিত্র গঠনে খেলাধুলার ভূমিকা Click here
বাংলা কাব্য সাহিত্যে বিহারীলাল চক্রবর্তী অবদান click here
আড্ডা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click here
মানস- মানচিত্র অবলম্বনে ইন্টারনেট ও আধুনিক জীবন সম্পর্কে প্রবন্ধ রচনা Click here
0 Comments