সূচিপত্র:
ক।কবি পরিচিত
খ। উৎস
গ। বিষয়সংক্ষেপ
ঘ। নামকরণ
ঙ। সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো।MCQ-১
চ) অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর।SAQ-১
ছ) ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর-৩
জ)বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্নমান-৫
ক)কবি পরিচিতি:
জন্ম ও শৈশব :
কথাসাহিত্যিক সুবোধ ঘোষ ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে ১৪ সেপ্টেম্বর বিহারের হাজারিবাগে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আদি বাড়ি ছিল বাংলাদেশের ঢাকা জেলার বিক্রমপুরে।
শিক্ষাজীবন:
সুবোধ ঘোষ হাজারিবাগের সেন্ট কলেজের ছাত্র ছিলেন। দার্শনিক ও গবেষক মহেশ ঘোষের লাইব্রেরিতে তিনি পড়াশোনা করতেন। প্রত্নতত্ত্ব, পুরাতত্ত্ব, এমনকি সামরিকবিদ্যায় তাঁর যথেষ্ট দক্ষতা ছিল।
কর্মজীবন ও সাহিত্যজীবন:
সুবোধ ঘোষের কর্মজীবন শুরু হয় বিহারের আদিবাসী অঞ্চলে বাসের কনডাক্টর হিসেবে। এরপর সার্কাসের ক্লাউন,মুম্বাই পৌরসভার চতুর্থ শ্রেণির কাজ,চায়ের ব্যাবসা,বেকারির ব্যাবসা, মালগুদামের স্টোরকিপার প্রভৃতি কাজে তিনি তাঁর জীবনের বেশ কিছুটা সময় ব্যয় করেন। বহু পথ ঘুরে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকার রবিবাসরীয় বিভাগে সহকারী হিসেবে যোগ দেন। তাঁর লেখালেখির সময়কাল ১৯৪০ থেকে ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দ। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ আগস্ট দাঙ্গাবিধ্বস্ত নোয়াখালিতে গান্ধিজির সহচর হিসেবে তিনি অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছিলেন।সুবোধ ঘোষের প্রথম গল্প 'অযান্ত্রিক ,।তাঁর লেখা উপন্যাসগুলি হল- তিলাঞ্জলি। বিচিত্র জীবিকার সঙ্গে যুক্ত ছিল তাঁর কর্মজীবন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলি হল-'ভারত প্রেমকথা,গঙ্গোত্রী,ত্রিযামা, ভালবাসার গল্প,‘শতকিয়া' প্রভৃতি। এ ছাড়াও তাঁর কয়েকটি গল্পসংকলন হল-ফসিল,পরশুরামের কুঠার,জতুগৃহ প্রভৃতি।
পুরষ্কার:
সুবোধ ঘোষ তাঁর অসাধারণ সাহিত্যচর্চার জন্য তাঁকে আনন্দ পুরস্কার এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জগত্তারিণী পদকে ভূষিত করেন।
জীবনাবসান:
১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে ১০ মার্চ কবি পরলোক গমন করেন।
খ)উৎস:
সুবোধ ঘোষের 'গল্পসমগ্রের'- তৃতীয় খণ্ড থেকে ‘বহুরূপী' গল্পটি গৃহীত হয়েছে।
গ)বিষয়সংক্ষেপ:
‘বহুরূপী' গল্পটি মূলত এক বহুরূপীর জীবন নিয়ে লেখা। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদা শহরের সবচেয়ে ছোটো গলির মধ্যেই বাস করেন। সেখানে আড্ডাও বসে প্রতিদিন।রোজকার কাজকর্ম করতে যাওয়া হরিদার কোনোদিনই পোষাত না। তিনি ছিলেন বহুরূপী। তিনি মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন রূপ ধারণ করতেন—কখনও পাগল সাজতেন, কখনও বাউল, কোনোদিন কাপালিক, কখনও কাবুলিওয়ালা, কখনও-বা পুলিশ।তাঁর এই রূপ দেখে অনেকেই কিছু পয়সা দিত।এটা তাঁর একরকম রোজগার ছিল। পুলিশ সেজে তিনি ঘুষও নিয়েছেন।বহুরূপী সেজে তিনি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতেন। জাগদীশবাবুর বাড়ীতে হিমালয়ের গুহানিবাসী এক সন্ন্যাসীর আগমন। মোটা রকমের উপার্জনের আশায় তিনি সন্ন্যাসী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। জগদীশবাবু সাদা ছোটো বহরের থান পরে এক বিরাগী মানুষের বেশ ধরে বহুরূপী হরিদা হাজির হয়েছিলেন জগদীশবাবুর বাড়িতে। তাঁর সাজপোশাক,শান্ত,উজ্জ্বল দৃষ্টি দেখে কেউ বুঝতেও পারেনি তিনি আসলে হরিদা। হরিদা সত্যিই যেন বিরাগী হয়ে উঠেছিলেন । তাই জগদীশবাবু তাঁকে তীর্থভ্রমণের জন্য টাকা দিতে চাইলেও তিনি তা ফিরিয়ে দেন। আসলে এইভাবে বহুরূপী পেশাটাকেই তিনি যোগ্য সম্মান দিয়েছিলেন। কারণ এই পেশা ছিল তাঁর ভালোবাসা।
ঘ)নামকরণ:
যে-কোনো সাহিত্যের ক্ষেত্রেই নামকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়,যা সাধারণত বিষয়বস্তুকেন্দ্রিক, ভাবকেন্দ্রিক বা ব্যঞ্জনাধর্মী হয়ে উঠে।শহরের সবচেয়ে সরু গলির ভিতরের ঘরটাই হরিদা বসবাস করেন।তবে তাঁর জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্য হল- তিনি বহুরূপী সাজেন। বহুরূপী সেজে তিনি কখনও বাসস্ট্যান্ডে, কখনও বাজারে, কখনও আবার অন্য সাজ দেখিয়ে রোজগার করেন। বহুরূপী সাজাটাই তাঁর পেশা। এই পেশাগত বিচারে গল্পের নামকরণ যথাযথ। কিন্তু সুবোধ ঘোষ গল্প কাহিনিতে একটু বাঁক ফেরালেন জগদীশবাবুর বাড়িতে হরিদাকে এনে। হরিদা চেয়েছিলেন কৃপণ,ধনী জগদীশবাবুর কাছ থেকে বেশি করে টাকা আদায় করবেন।সেইমতো তিনি বিরাগীর বেশে সেজেওছিলেন ভালো। জগদীশবাবু হরিদাকে বিরাগীর বেশে দেখে মুগ্ধ হয়ে যান। জগদীশবাবু বুঝতেই পারেন না যে, তাঁর বাড়িতে বিরাগী বেশে আসা লোকটা আসলে একজন বহুরূপী। তিনি বিরাগী হরিদাকে একশো এক টাকার একটি থলি দিতে গেলে হরিদা তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি জানান, বিরাগীর কোনো অর্থের প্রয়োজন নেই। ত্যাগই তাঁর জীবনের ধর্ম। অর্থাৎ বহুরূপী সাজলেও হরিদার চরিত্রের ঢং নষ্ট করেননি। এখানেই হরিদার বহুরূপী পেশা পাঠকদের কাছে গৌরবের হয়ে উঠেছে।তাই নামকরণটি সার্থক হয়েছে।
ঙ। সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো।MCQ-১
১) জগদীশবাবুর বাড়িতে সন্ন্যাসী কত দিন ধরে ছিলেন?
ক) আট দিন
খ) সাত দিন
গ)চার দিন
ঘ) দশ দিন
উত্তর:(খ) সাত দিন
২)সন্ন্যাসী কোথায় থাকতেন?
ক) হিমালয়ের গুহাতে
খ)জঙ্গলে
গ) মানস সরোবরের কাছে
ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর:(ক) হিমালয়ের গুহাতে
৩)জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসীর বয়স আনুমানিক-
ক) একশো বছর
খ) পাঁচশো বছর
গ) দু-হাজার বছর
ঘ) হাজার বছরের বেশি
উত্তর:(ঘ) হাজার বছরের বেশি
৪)জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসী সারা বছর কী খেতেন?
ক) একটি আমলকী
খ) চারটি রুটি
গ)দুধ
ঘ)সাবু
উত্তর:(ক) একটি হরিতকি
৫)সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস”-দুর্লভ জিনিসটি হল-
ক) সন্ন্যাসীর আশীর্বাদ
খ)সন্ন্যাসীর পদধূলি
গ) সন্ন্যাসীর উপদেশ
ঘ) সন্ন্যাসীর সান্নিধ্য
উত্তর:(খ) সন্ন্যাসীর পদধুলি
৬)কীসের জন্য হরিদার আক্ষেপ ছিল?
ক) সন্ন্যাসীর সঙ্গে না থাকতে পারা
খ)সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিতে না পারা
গ) সন্ন্যাসীকে নিজের বাড়িতে এনে রাখতে না পারা
ঘ) কোনোটাই নয়
উত্তর:(খ) সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিতে না পারা
৭)জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর ঝোলায় ফেলেছিলেন-
ক) পাঁচশো টাকা
খ) পঞ্চাশ টাকা
গ)দুশো টাকা
ঘ) একশো টাকা
উত্তর:(ঘ)একশো টাকা
৮)সন্ন্যাসীকে নতুন খড়ম দিয়েছিলেন-
ক)জগদীশবাবু
খ) অনাদি
গ) ভবতোষ
ঘ) হরিদা
উত্তর:(ক) জগদীশ বাবু
৯) জগদীশ বাবুর সন্ন্যাসীর কাঠের খড়মে লাগিয়েছিলেন-
ক) রুপোর বোল
খ)মুক্তো বোল
গ)মূল্যবান রত্নের বোল
ঘ)সোনার বোল
উত্তর:(ঘ) সোনার বোল
১০) হরিদার ঘরে আড্ডা দিতেন-
ক) চার জন
খ) পাঁচ জন
গ) সাত জন
ঘ) তিন জন
উত্তর:(ক) চার জন
১১) হরিদার অবস্থা কেমন ছিল?
ক) নিম্নমধ্যবিত্ত
খ) মধ্যবিত্ত
গ) গরিব
ঘ) বড়োলোক
উত্তর:(গ) গরিব
১২)বাস ড্রাইভারের নাম ছিল-
ক) হরি
খ) জগদীশ
গ) কাশীনাথ
ঘ) দেবনাথ
উত্তর:(গ) কাশীনাথ
১৩)বাইজির ছদ্মবেশে হরিদার রোজগার হয়েছিল-
ক) বারো টাকা আট আনা
খ) টাকা দশ সাত আনা
গ) মাত্র পাঁচ টাকা
ঘ)আট টাকা দশ আনা
উত্তর:(ঘ) আট টাকা দশ আনা
১৪. হরিদা বাইজি সাজলে তাঁকে একটা সিকি দিয়েছিল-
ক) ভবতোষ
খ) বাসের ড্রাইভার
গ)দোকানদার
ঘ) স্কুলের মাস্টার
উত্তর:(গ) দোকানদার
চ) অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর।SAQ-১
১)'হরিদার কাছে আমরাই গল্প করে বললাম'- আমরা' বলতে এখানে কাদের বোঝানো হয়েছে?
উত্তর:সুবোধ ঘোষের রচিত ‘বহুরূপী' গল্পে ‘আমরা’ বলতে স্বয়ং গল্পকার ও তাঁর বন্ধু ভবতোষ, অনাদি ছাড়াও অন্যদের বোঝানো হয়েছে।
২) হরিদার কাছে লেখক ও তাঁর বন্ধুরা কী গল্প করেছিলেন?
উত্তর:সুবোধ ঘোষের রচিত 'বহুরূপী' গল্পে হিমালয়ের এক সন্ন্যাসী জগদীশবাবুর বাড়িতে সাতদিন ছিলেন। তাঁর বয়স হাজার বছরেরও বেশি। তিনি বছরে একটি মাত্র হরীতকী খান। সেই গল্পই লেখক ও তার বন্ধুরা করেছিলেন।
৩) 'আক্ষেপ করেন হরিদা'-হরিদার এই আক্ষেপের কারণ কী ছিল?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের রচিত 'বহুরূপী'গল্পে, হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে হিমালয় থেকে এক সন্ন্যাসী এসেছিলেন।তার কথা শুনে তাঁর পায়ের ধুলো নিতে চায়।কিন্তু সন্ন্যাসী চলে যাওয়ায় হরিদার সেই ইচ্ছা আক্ষেপে পরিণত হয়।
৪)‘গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা’-হরিদার গম্ভীর হওয়ার কারণ কী?
উত্তর:সুবোধ ঘোষের রচিত বহুরূপী গল্পে, সন্ন্যাসী সোনার বোল লাগানো কাঠের খড়ম ও একশো টাকা পেয়ে তৃপ্তির হাসি হাসেন। এ কথা শুনে হরিদার বিশ্বাস টলে যায়। তিনি গম্ভীর হয়ে যান।
৫) ‘কিন্তু ওই ধরনের কাজ হরিদার জীবনের পছন্দই নয়।-কোন্ ধরনের কাজের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের রচিত 'বহুরূপী' গল্পে হরিদা ইচ্ছে করলেই কোনো অফিসে বা দোকানে একটা কাজ পেতে পারত। কিন্তু ঘড়ি ধরে নিয়ম করে রোজ একটা চাকরি করা,হরিদার পছন্দ ছিল না।
৬)চকের বাসস্ট্যান্ডে বহুরূপী হরিদা কী রূপে হাজির হয়?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের রচিত 'বহুরূপী' গল্পে, হরিদা লাল চোখ করে, এমনকি মুখ থেকে লালা ঝরছে, কোমরে ছেঁড়া কম্বল ,গলায় টিনের কৌটোর মালা ঝোলানো এক পাগলের ছদ্মবেশে চকের বাসস্ট্যান্ডে হাজির হয়।
৭) ‘খুব হয়েছে হরি,এইবার সরে পড়ো। অন্যদিকে যাও।'- কে,কেন কথাটি বলেছেন?
উত্তর:সুবোধ ঘোষের রচিত ' বহুরূপী' গল্পে,একদিন দুপুরে বাসস্ট্যান্ডে হরিদা পাগলের ছদ্মবেশে হাতে ইট নিয়ে বাসে বসা যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময় বাস ড্রাইভার কাশীনাথের এই উক্তি।
৮)'কিন্তু দোকানদার হেসে ফেলে-হরির কাণ্ড'-হরির কোন কাণ্ড দেখে দোকানদার হেসে ফেলেছিলেন?
উত্তর:সুবোধ ঘোষের রচিত'বহুরূপী'গল্পে,এক সন্ধ্যায় বাইজির ছদ্মবেশে হরি শহরের পথে ঘুঙুরের মিষ্টি শব্দ করে হেঁটে চলে। নতুনরা অবাক হলেও দোকানদার হরিকে চিনতে পেরে হেসে ফেলে।
৯) ‘এবারের মতো মাপ করে দিন ওদের।-এ কথা কে, কাকে বলেছিলেন?
উত্তর:সুবোধ ঘোষের রচিত ‘বহুরূপী' গল্পে, হরিদা দয়ালবাবুর লিচু বাগানে যখন পুলিশের ছদ্মবেশে স্কুলের চারটে ছেলেকে ধরেছিল,তখন স্কুলের মাস্টারমশাই এ কথা বলেছিল।
১০)' সত্যি, খুব চমৎকার পুলিশ সেজেছিলহরি!-কে, কখন এ কথা বলেছিলেন?
উত্তর:সুবোধ ঘোষের রচিত 'বহুরূপী'গল্পে দয়ালবাবুর লিচু বাগানে স্কুলের মাস্টারমশাই পুলিশের কাছে ক্ষমা চেয়ে আট আনা ঘুষ দিয়ে ছেলেদের ছাড়িয়ে আনার পরে পুলিশের আসল পরিচয় জানতে পেরে তখনই এই আলোচ্য মন্তব্য করেন।
১১)জগদীশবাবুর বাড়িতে খেলা দেখাবার জন্য হরিদার এত উৎসাহ জেগে উঠেছিল কেন?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের রচিত 'বহুরূপী ' গল্পে, হরিদা সারা দিন বিভিন্ন ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়িয়ে দু-তিন টাকার বেশি ইনকাম হয় না। তাই মোটা টাকা আদায়ের জন্য হরিদার মধ্যে এই উৎসাহ জেগেছিল।
ছ) ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর-৩
১)'হিমালয় থেকে এসেএক সন্ন্যাসী জগদীশবাবুর বাড়িতে ছিলেন।' - জগদীশবাবুর বাড়িতে যে সন্ন্যাসী এসেছিলেন তাঁর বর্ণনা দাও ।
উত্তর: গল্পকার সুবোধ ঘোষের রচিত বহুরূপী গল্পে জগদীশবাবুর বাড়িতে এক সন্ন্যাসী এসে ছিলেন, এবং তিনি সাত দিন ছিলেন।তিনি খুব নামকরা সন্ন্যাসী হিমালয়ের গুহাতে থাকতেন। তিনি সারাবছরে শুধু একটি হরীতকী খেতেন,আর কিছু না, অনেকেই মনে করত, সন্ন্যাসীর অনেক বয়স হয়েছে। তাঁর পায়ের ধুলো সহজে পাওয়া যায় না।একমাত্র জগদীশবাবুই সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো পেয়েছিলেন।
২)'সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস।'-দুর্লভ জিনিসটা কী? কে,কীভাবে তা লাভ করেছিল?
উত্তর:গল্পকার সুবোধ ঘোষ রচিত বহুরূপী গল্পে দুর্লভ জিনিসটি হল,সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো।
* জগদীশবাবুর বাড়িতে একবার এক সন্ন্যাসী এসে সাত দিন ছিলেন। সেই সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো পাওয়া খুব কঠিন ছিল। তিনি যে কোনো উপায়ে সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিতে চেয়েছিলেন। তাই তিনি একজোড়া কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরেছিলেন। সন্ন্যাসী তখন বাধ্য হয়ে তাঁর পা এগিয়ে দিয়েছিলেন আর সেই সুযোগে জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন।
৩) দয়ালবাবু লিচু বাগানে কি ঘটনা ঘটেছিল?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের রচিত বহুরূপী গল্পে, দয়ালবাবুর লিচু বাগানে স্কুলের চারটি ছেলে এসেছিল লিচু পাড়ার জন্য। সেখানে হরিদা পুলিশ সেজে দাঁড়িয়েছিলেন আর সেই চার জন ছেলেকে তিনি ধরেছিলেন। সব ছেলে তাঁকে সত্যিকারের পুলিশ বলেই মনে করেছিল এবং ভয়ে কেঁদে ফেলেছিল। তারপর সেই ছেলেদের স্কুলের মাস্টারমশাই সেখানে এসে ছেলেদের ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশের কাছে ক্ষমা চান এবং তাকে আট আনা ঘুষও দেন। সেই আট আনা ঘুষ পাওয়ার পর নকল পুলিশ হরিদা সেই চার জন ছেলেকে ছেড়েছিলেন।
৪) হরিদা পুলিশ সেজে কোথায় দাঁড়িয়েছিলেন? তিনি কীভাবে মাস্টারমশাইকে বোকা বানিয়েছিলেন?
উত্তর:গল্পকার সুবোধ ঘোষের রচিত'বহুরূপী' গল্পে , হরিদা পুলিশ সেজে দয়ালবাবুর লিচু বাগানেদাঁড়িয়েছিলেন।
* আলোচ্য গল্পে হরিদা দয়ালবাবুর লিচু বাগানে পুলিশ সেজে স্কুলের চারটি ছেলেকে ধরেছিলেন। ছেলেরা তাঁকে সত্যিকারের পুলিশ বলেই মনে করেছিল এবং ভয়ে কেঁদে ফেলেছিল। তারপর সেই ছেলেগুলির স্কুলের মাস্টারমশাই সেখানে এসে নকল পুলিশের কাছে ক্ষমা চেয়ে, তাকে আট আনা ঘুষ দিয়েছিলেন। ঘুষ পাওয়ার পর তবেই নকল পুলিশ হরিদা সেই চার জন ছেলেকে ছেড়েছিলেন। হরিদা এভাবেই মাস্টারমশাইকেও বোকা বানিয়েছিলেন।
৫)'ঠিকই আমাদের সন্দেহ মিথ্যে নয়।'- কারা, কী সন্দেহ করেছিল? সেই সন্দেহ যে ঠিক, তা কীভাবে বোঝা গেল?
উত্তর:সুবোধ ঘোষের রচিত বহুরূপী গল্পে কথক ও তাঁর বন্ধুরা ভেবেছিলেন হরিদা সন্ন্যাসীর কথা শুনে গম্ভীর হয়ে গেছেন। হয়তো মনে মনে কোনো মতলব ফাঁনছেন।
* হরিদা একদিন কথক ও তাঁর বন্ধুদের বলেন তিনি তাঁদের একটা জবর খেলা দেখাবেন।আর তিনি খেলা দেখাবে জগদীশবাবুর বাড়িতে। জগদীশবাবু ধনী লোক। সন্ন্যাসীর গল্প শুনে হরিদা তাই সন্ন্যাসীর চরিত্রটিকেই বেছে নিয়েছেন।
৬)'আমি বলছি তোমরা সেখানে থেকো।'-এখানে বক্তা কাদের থাকতে বলেছেন? তাদের থাকতে বলার কারণ কী?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের রচিত 'বহুরূপী' গল্পে হরিদা গল্পকথক এবং তাঁর বন্ধুদের থাকতে বলেছেন।
*কথকেরা হরিদাকে জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা হিমালয়ের সন্ন্যাসীর কথা শুনিয়েছিলেন।সেই সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো ছিল দুর্লভ। কিন্তু জগদীশবাবু কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে তা সন্ন্যাসীকে পরতে দিয়ে তাঁর পায়ের ধুলো নেন।এ গল্প শুনেই হরিদা গম্ভীর হয়ে যান এবং বলেন যে, তিনি একটা জবর খেলা দেখাবেন। এই খেলা দেখতেই হরিদা কথকদের আমন্ত্রণ জানান।
জ)বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্নমান-৫
১)গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা'- গল্পটি কী ছিল?হরিদার গম্ভীর হয়ে যওয়ার কারণ কী ছিল?
উত্তর:সুবোধ ঘোষের রচিত 'বহুরূপী' গল্পে জগদীশবাবুর বাড়িতে এক সন্ন্যাসী সাত দিন ধরে ছিলেন। তিনি হিমালয়ের গুহায় থাকতেন। অনেকে মনে করেন,তাঁর বয়স হাজার বছরেরও বেশি। তিনি সারাবছরে একটি হরীতকী ছাড়া আর কিছুই খেতেন না। জগদীশবাবু ছাড়া আর কাউকে তিনি পায়ের ধুলো দেননি। জগদীশবাবুও তা পেয়েছিলেন কৌশল করে। একজোড়া কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরেন আর সন্ন্যাসী বাধ্য হয়ে তাতে পা ভরতে গেলে সেই সুযোগে জগদীশবাবু সন্ন্যসীর পায়ের ধুলো নিয়ে নেন। জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর ঝোলার ভিতরে একশো টাকার একটি নোট জোর করে ফেলে দেন। সন্ন্যাসী হেসে সেখান থেকে চলে যান। এই গল্পই হরিদাকে শোনানো হয়েছিল।
* সন্ন্যাসী এবং জগদীশবাবুর এই গল্প শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে যান। কথক ও তাঁর বন্ধুরা হরিদার এই গাম্ভীর্যের কারণ বুঝতে পারেন না। এই সময়েই হরিদা তাদের জগদীশবাবুর বাড়িতে খেলা দেখাতে যাওয়ার কথা বলেন। জগদীশবাবুর কাছ থেকে সারা বছরের প্রয়োজনীয় অর্থ হাতিয়ে নেওয়াই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য।জগদীশবাবুর ধর্মের প্রতি দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়েই হরিদা নিজের উদ্দেশ্য সফল করতেচেয়েছিলেন।
২) 'হরিদার জীবনে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে ।'- হরিদার জীবনে নাটকীয় বৈচিত্র্যের যে পরিচয় পাওয়া যায় তা সংক্ষেপে লেখো ।
উত্তর:সুবোধ ঘোষের রচিত 'বহুরূপী' গল্পে হরিদা ছিলেন অত্যন্ত গরিব মানুষ। কিন্তু ধরাবাঁধা জীবন কাটানো হরিদার পছন্দ ছিল না। তাই অভাবের মধ্যেই তিনি জীবনের বৈচিত্র্য খুঁজতেন। বহুরূপীর পেশাককে সঙ্গী করেই তিনি অন্নসংস্থানের চেষ্টা চালাতেন।নানান ছদ্মবেশ ধরে পথে বের হতেন হরিদা।কখনও বাসস্ট্যান্ডের কাছে,আবার কখনও শহরের রাজপথ ধরে বাইজির বেশে ঘুঙুর বাজিয়ে চলে যেতেন।শহরে নতুন আসা মানুষ যারা হরিদাকে চিনত না,তারা অবাক করে তাকিয়ে থাকত আর পরিচিতরা তার কাণ্ড দেখে হেসে ফেলত। কখনও বুড়ো কাবুলিওয়ালা,কখনও কোট, প্যান্টালুন পরা ফিরিঙ্গি সাহেব-এরকম অজস্র রূপেই হরিদাকে দেখতে পাওয়া যেত। এমনকি পুলিশ সেজে স্কুলের মাস্টারমশাইকেও তিনি বোকা বানিয়েছিলেন। তাঁর বিচিত্র সব সাজ আর চরিত্রের সঙ্গে মানুষ কখনও হাসত, কখনও তারিফ করত, কখনও-বা বিরক্ত হত। আর হরিদার যা সামান্য বকশিশ জুটত তাতেই দারিদ্র্যের মধ্যেও হরিদা যেন মুক্ত প্রাণের আনন্দ খুঁজে নিতেন।
৩)'আজ তোমাদের একটা জবর খেলা দেখাব।'- কে কাদের উদ্দেশে এ কথা বলেছেন? তিনি কোন জবর খেলা দেখিয়েছিলেন?
উত্তর:সুবোধ ঘোষের রচিত 'বহুরূপী' গল্পে কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদা,কথক ও তাঁর বন্ধুদের উদ্দেশে উত্ত্বিটি করেছেন।
* হরিদা বহুরূপী সেজে টাকা রোজগার করাই ছিল তার নেশা এবং পেশা।তাই জগদীশবাবুকে বোকা বানিয়ে নিজের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে হরিদা সাদা কাপড়ের থান পরে হাজির হন জগদীশবাবুর বাড়িতে। জগদীশবাবু হরিদার নিখুঁত ছদ্মবেশের কারণে তাঁকে চিনতে না পেরে ভক্তিতে গদগদ হয়ে যান। নিজেকে 'সৃষ্টির মধ্যে এককণা ধূলি' বলে উল্লেখ করে জগদীশবাবুকে নীচে নেমে আসতে বাধ্য করেন তিনি।কণ্ঠস্বরে গাম্ভীর্য,হরিদা নিজের সাজকে পূর্ণাঙ্গতা দান করেন। বিরাগীবেশী হরিদা জানান যে তাঁর কোনো রাগ নেই,তিনি ঘরে থাকতে চান না। তীর্থযাত্রার জন্য জগদীশবাবু হরিদাকে একশো এক টাকার থলি দিতে চাইলে তিনি তা ছুঁয়েও দেখেন না এবং সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। হরিদার এরকম ছদ্মবেশ ধারণ করে জগদীশবাবুকে ধোঁকা দেওয়াকেই 'জবর খেলা' বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
৪)'তোমরা যদি দেখতে চাও,তবে আজ ঠিক সন্ধ্যাতে জগদীশবাবুর বাড়িতে থেকো।'- বক্তা কে? সেই সন্ধ্যায় কোন দৃশ্য দেখা গিয়েছিল? সেই ঘটনার মধ্য দিয়ে বক্তার কোন পরিচয় পাও?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের রচিত 'বহুরূপী' গল্পে মন্তব্যটি করেছিলেন বহুরূপী হরিদা।
* সন্ধ্যায় বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে গিয়েছিলেন হরিদা। জগদীশবাবু নীচে নেমে তাঁকে অভ্যর্থনা না করায় তিনি একে তাঁর সম্পত্তির অহংকার বলে উল্লেখ করেন।পরম সুখ,বলতে তিনি বোঝান- সব সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়া। জগদীশবাবু তাঁকে কয়েকদিন থাকতে বললে তিনি জানিয়ে দেন যে, খোলা আকাশের নিচে থাকতে দালান বাড়িতে তিনি থাকবেন না। জগদীশবাবু প্রণামি হিসেবে একশো এক টাকা দিতে গেলে বিরাগী হরিদা তা নেন না।
* হরিদা বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে গিয়েছিলেন সারাবছরের রোজগার করে আনার জন্য। কিন্তু চরিত্রটার সঙ্গে তিনি এতটাই একাত্ম হয়ে যান যে তাঁর আর উপার্জনের লক্ষ্য থাকে না। বহুরূপীর বেশে নিজের সৃষ্টিতে তিনি মগ্ন হয়ে যান। তাই খাঁটি সন্ন্যাসীর মতো সব কিছুকে তুচ্ছ করে হরিদা চলে যান। নইলে তাঁর ঢং নষ্ট' হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
Contents:
আরো পড়ুন:
জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
অসুখী একজন কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
আফ্রিকা কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click Here
অভিষেক কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
পথের দাবী গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
সিন্ধুতীরে কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
নদীর বিদ্রোহ গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
সিরাজদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর Click here
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click here
বহুরূপী গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click here
the passing away of bapu question answerUnit 1 Click Here
The passing away of bapu question answer unit 2 Click Here
The passing away of bapu question answer unit 3 Click Here
My Own True family poem Lesson 4 Click Here
শসার স্বাস্থ্য উপকারিতা click Here
Tea benefits for health click hair
চোখ click here
মধুর উপকারিতা click here
শব্দ দূষণ click here
একাদশ শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার
নুন কবিতা প্রশ্ন উত্তর click here
0 Comments