ক।কবি পরিচিত
খ। উৎস
গ। বিষয়সংক্ষেপ
ঘ। নামকরণ
ঙ। সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো।MCQ-১
চ) অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর।SAQ-১
ছ) ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর-৩
জ)বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্নমান-৫
ক)লেখক পরিচিতি:
আধুনিক বাংলা কবিতার সেরা কবি হলেন জয় গোস্বামী। তাঁর কবিতাগুলি ভাষা,শব্দ ও ছন্দের অপূর্ব কাজে অনন্য হয়ে উঠেছে।
জন্ম এবং শৈশব:
১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ নভেম্বর কলকাতায় জয় গোস্বামীর জন্ম। পাঁচ বছর বয়সে তাঁরা সপরিবারে রানাঘাটে চলে যান। মাত্র আট বছর বয়সে তাঁর বাবা মারা যান। জয় গোস্বামীর মা ছিলেন শিক্ষিকা।
সাহিত্যকীর্তি:
জয় গোস্বামীর প্রথম কবিতা লেখা তেরো বছর বয়সে বাড়ির পুরোনো সিলিং পাখা নিয়ে। উনিশ বছর বয়সে তাঁর প্রথম কবিতা ছাপা হয়। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে দেশ পত্রিকায় নিয়মিত তাঁর লেখা প্রকাশিত হতে থাকে। ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কবিতা-সংকলন ক্রীসমাস ও শীতের সনেটগুচ্ছ। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল- প্রত্নজীব,আলেয়াহ্রদ,উম্মাদের পাঠক্রম, ভূতুমভগবান,ঘুমিয়েছ, ঝাউপাতা?,আজ যদি আমাকে জিগেস করো,গোল্লা,পাগলী,তোমার সঙ্গে ' বজ্রবিদ্যুৎ ভর্তি খাতা,পাখি, হুস,ওঃ স্বপ্ন, ইত্যাদি কবিতার বই।কবি দু-বার ‘আনন্দ পুরস্কার' পেয়েছেন।১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে জয় গোস্বামী তাঁর বজ্রবিদ্যুৎ ভর্তি খাতা কাব্যগ্রন্থের জন্য পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি পুরস্কার পান।২০০০ খ্রিস্টাব্দে আগস্ট মাসে পাগলী,তোমার সঙ্গে, কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার। এ ছাড়াও তিনি বঙ্গবিভূষণ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
লিখনশৈলী:
কবি জয় গোস্বামী এই বাস্তব জীবন থেকেই সংগ্রহ করে নেন তাঁর কবিতার উপকরণ। তাই কখনও লালগোলা-বনগাঁর ট্রেনে চাল-তোলা মাসিপিসি, কখনও বিয়ে না হওয়া সেলাই দিদিমণি তাঁর কবিতার বিষয় হয়ে ওঠে। আবার প্রেম ও নিঃসঙ্গতা তাঁর কবিতায় বারে বারে ফিরে আসে। তীব্রতার সঙ্গে কোমলতা মিশিয়ে নিজস্ব কাব্যভাষা তৈরি করেছেন কবি। তাঁর কবিতায় ছন্দের বৈচিত্র্য আছে,প্রতীকের ব্যবহার আছে।
খ)উৎস:
১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত জয় গোস্বামীর'পাতার পোশাক' কাব্যগ্রন্থ থেকে অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতাটি নেওয়া হয়েছে।
গ)সারসংক্ষেপ:
গানের শক্তিতে শক্তিশালী কবি অস্ত্রের বিরুদ্ধে তাঁর যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।এই গানকে সঙ্গে নিয়েই যে-কোনো প্রতিবাদের মিছিলে তিনি হাজার মানুষের সঙ্গে হেঁটেছেন,এগিয়ে যাওয়ার শক্তি খুঁজে পেয়েছেন।গানকে বর্মের মতো ব্যবহার করে তিনি বুলেটকেও আটকাতে পেরেছেন। অর্থাৎ গানের মধ্যেই কবি খুঁজে পেয়েছেন সেই শক্তি,যার মাধ্যমে যুদ্ধ থেমে যায়,সৃষ্টি হয় শান্তির বাতাবরণ। মাথার কাছে শকুন বা চিল উড়ে চললেও কবি তাঁর ভেতরে থাকা কোকিলের গানের উপরেই ভরসা রেখেছেন। বর্ম খুলে ফেললে যুদ্ধ মানসিকতা সরে যায়, তখন এই গানকেই তাঁর মনে হয় বালকের মতো শান্ত,গান মানুষকে নিয়ে যায় নদীতে কিংবা গ্রামে। গানের হাত ধরেই কবি সর্বত্র মানুষের কাছে পৌঁছে যান। গানের বিপুল ক্ষমতাকে উপলব্ধি করে কবি যুদ্ধ-বাজদের বলেন গানের কাছে যাবতীয় অস্ত্রকে মাথা নত করতে।
ঘ)নামকরণ:
সাহিত্যে নামকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর এই নামকরণ নানান দিক থেকে হতে পারে, কখনও বিষয়বস্তুকেন্দ্রিক, কখনও চরিত্রধর্মী, কখনও ব্যঞ্জনাধর্মী।'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতার শিরোনামটি ব্যঞ্জনাধর্মী।কবিতার বিষয়বস্তু অবশ্যই যুদ্ধবিরোধী কিন্তু এই বিরোধিতার কৌশল আলাদা। কবিতার শুরুতেই কবি বলেছেন-অস্ত্র ফেলার মধ্য দিয়ে আর পাঁচ জন শান্তিকামী মানুষের মতোই কবি শান্তির জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।পায়ের কাছে অস্ত্র রাখার আহ্বান যুদ্ধবাজদের আত্মসমর্পণের দিকটিকেই বড়ো করে তোলে। গানকে বর্ম হিসেবে ব্যবহার করে কবি সমস্ত অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চান। তাই অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান গাইতে গাইতেই কবি হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়াতে পারেন। অর্থাৎ গানের শান্তি দিয়ে তিনি অনায়াসে যুদ্ধ আর ধ্বংসকে রুখে দিতে পারেন। সমাজে যখন লোভী চিল- শকুন রূপে যুদ্ধবাজদের আনাগোনা, কবির সম্বল তখন শুধু একটা কোকিল যা আসলে মানুষের সৃজনশীল সত্তা। এই কোকিলই কবিকে হাজার উপায়ে গান বেঁধে দেবে। গানই ঋষিবালকের মতো পবিত্রতার প্রতীক হয়ে কবি তথা সমাজকে মনুষ্যত্বের পথ দেখাবে। তাই হিংসার বিরুদ্ধে হিংসা বা অস্ত্রের বিরুদ্ধে অস্ত্র নয়—যাবতীয় অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে গানকে বর্ম করে কবি শান্তিতে পৌঁছোতে চান। এই মূলভাবকে সামনে রেখে কবিতাটির নাম গভীর ব্যঞ্ছনার ইঙ্গিত দেয়। তাই কবিতাটির নামকরণ সার্থক ও যথার্থ হয়েছে।
ঙ। সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো।MCQ-১
১)'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় অস্ত্র রেখে দিতে বলা হয়েছে-
ক)গানের পাযে
খ) দেশগাঁয়ে
গ) বনে-বাদাড়ে
খ) কবির কাছে
উত্তর;(ক) গানের পায়ে
২)'আমি এখন হাজার হাতে পায়ে এগিয়ে আসি'-এখানে 'আমি' হল-
ক) কবি
খ) গান
গ) দেশবাসী
ঘ) সৈন্য
উত্তর:(ক) কবি
৩)'আঁকড়ে ধরে সে-খড়কুটো'-উদ্ধৃতাংশে ‘খড়কুটো’ হল-
ক) পোশাক-পরিচ্ছদক
খ)গান
গ) অস্ত্র
গ) বাড়িঘর
উত্তর:(খ) গানে
৪)কবি গানের গায়ে কী মোছেন?-
ক) অশ্রু
খ) ঘাম
গ) রক্ত
ঘ) কান্না
উত্তর:(গ) রক্ত
৫) “মাথায় কত শকুন বা চিল”- মাথায় শকুন বা চিল ওড়ার অর্থ-
ক) চারিদিকে পাখিদের ভিড়
খ) সমাজটা যেন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে
গ) তারা কোকিলকে আক্রমণ করতে চায়
ঘ) কবি শিকারি পাখিদের পোষ মানিয়েছেন
উত্তর:(খ) সমাজটা যেন ভাগারে পরিণত হয়েছে
৬)'আমার শুধু একটা কোকিল'-এই কোকিলটি হল-
ক) কবির অনুভূতির জগৎ
খ) বসন্তের দূত
গ) এক ঋষিবালক
ঘ) একটি গ্রামের মানুষ
উত্তর:(ক) কবির অনুভূতির জগত
৭)গান বাঁধবে সহস্ৰ উপায়ে'-সহস্ৰ উপায়ে গান বাঁধবে-
ক) চিল
খ) শকুন
গ) কোকিল
ঘ) ঋষি বালক
উ:(গ) কোকিল
৮) হাত নাড়িয়ে কবি কী তাড়ান?-
ক) শত্রু
খ) কান্না
গ) ভয়
ঘ) বুলেট
উত্তর:(ঘ) বুলেট
৯)কবি গায়ে কী পরেছেন ?-
ক) লোহার বর্ম
খ) গানের বর্ম
গ) রক্তমাখা জামা
ঘ) শান্তির নামাবলি
উত্তর:(খ) গানের বর্ম
১০) কবি কোথায় রক্ত মোছেন?-
ক) দেয়ালে
খ) জামায়
গ) শরীরে
ঘ) গানের গায়ে
উ:(ঘ) গানের গায়ে
১১) মাথার উপরে কবি কী দেখেছেন?-
ক) নতুন সূর্য
খ) শকুন-চিল
গ) নক্ষত্র
ঘ) নীল আকাশ
উত্তর:(খ) শকুন-চিল
১২)কবির শুধু কী আছে?-
ক) একটা কোকিল
খ) একটা মানুন
গ) একটা ঘর
ঘ) একটা গাছ
উত্তর:(ক) একটা কোকিল
চ) অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর।SAQ-১
১)অস্ত্র ফ্যালো, অস্ত্র রাখো পায় বলতে কী বলা হয়েছে?
উত্তর:কবি জয় গোস্বামীর রচিত'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায়, গানের পায়ে অস্ত্র ফেলার কথা বলেছেন।অস্ত্রই সভ্যতার শেষ কথা নয়। তার বদলে চাই গান।যা ভালোবাসার কথা বলে।
২)অস্ত্রের বিরুদ্ধে কবির হাজার হাতে-পায়ে এগিয়ে আসার অর্থ কী?
উত্তর:কবি জয় গোস্বামী রচিত 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায় অস্ত্র যেহেতু মানুষের দৈনন্দিন জীবনের হাতিয়ার তাই তাকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করতেই কবি হাজার হাতে-পায়ে এগিয়ে আসার কথা বলেছেন।
৩)কবি ছুটে আসা বুলেটের প্রতিরোধ করতে কি ব্যবস্থা নেন?
উত্তর: জয় গোস্বামী রচিত‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায়- কবি বন্দুক থেকে ছুটে আসা বুলেটের প্রতিরোধ গড়তে গানের বর্ম ধারণ করেন।
৪)'গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে- বলার কারণ কী?
উত্তর:জয় গোস্বামী রচিত'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায় কবির মতে,অশুভ শক্তির সাথে অসহায় মানুষের ও মানবতার যে সংগ্রাম,সেই সংগ্রামে অসহায় মানুষের একমাত্র পথ হল গান। গানই পারে অমঙ্গলের হাত থেকে মানবতাকে বাঁচাতে।
৫) ‘গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে-গানের বর্ম পরিধান করে কবি কোন্ কাজ করতে পারেন?
উত্তর:জয় গোস্বামী রচিত ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায় কবি আশাবাদী,সারা পৃথিবীতে অস্ত্রের ঝন ঝন শব্দকে তিনি গান দিয়ে জয় করবেন। তাই তিনি গানের বর্ম পরেছেন।
৬) কবি কোথায় রক্ত মোছেন?
উত্তর: জয় গোস্বামী রচিত 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতার কবি গানের গায়ে রক্ত মোছেন। এখানে 'রক্ত' হয়ে ওঠে মানুষের বিবেক। আর এই বিবেককে রুখতে পারে একমাত্র মানুষের সৃষ্টি গান।
৭) মাথায় কত শকুন বা চিল'- শকুন বা চিল' শব্দটি কবিতায় কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তর: জয় গোস্বামী রচিত 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায় 'শকুন বা চিল'-এই দুটি মাংসাশী পাখিকে যুদ্ধবাজ পাখি বলা হয়,একে মানুষের প্রতীকরূপে ব্যবহার করা হয়েছে।সংখ্যায় এরা অল্প হলেও এরা চিরকাল থাকবে।
৮)কবি কেন কোকিলকে সহস্ৰ উপায়ে গান বাঁধতে বলেছেন?
উত্তর:কবি জয় গোস্বামী রচিত:অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায় কবি মাথার উপরে চিল-শকুনের উড়ে চলা দেখেছেন,তার মধ্যে একটা কোকিল,যা কবির সত্তা, তা আসলে ধ্বংসের মধ্যে সৃষ্টির গান গাইতে পারে।
৯) কবিতায় 'অস্ত্র রাখো, অস্ত্র ফ্যালো পায় বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর:কবি জয় গোস্বামী রচিত অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতায় অস্ত্রের অবস্থান কখনও উচ্চ আসনে হতে পারে না।তার অবস্থান সব সময় পায়ে অর্থাৎ নীচে।
১০) 'বর্ম খুলে দ্যাখো আদুড় গায়ে বলতে কবি কী বলেছেন?
উত্তর: জয় গোস্বামী রচিত ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায়, কবি ‘বর্ম’ বলতে ক্ষমতা,অহংকার, লোভ, মোহ প্রভৃতির ‘বর্ম’ খুলে দেখার কথা বলেছেন।
ছ) ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর-৩
১)'আমি এখন হাজার হাতে পায়ে/এগিয়ে আসি, উঠে দাঁড়াই'-কে,কেন এগিয়ে আসেন?
উত্তর: জয় গোস্বামী রচিত‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায়, কবি শান্তিকামী সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে।
* অস্ত্রের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী মানুষের একজোট হওয়া।মানুষের প্রতিরোধ যে-কোনো অস্ত্রকে আটকাতে পারে। যে মানুষেরা অস্ত্রের উপর নির্ভরশীল তাদের কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে, অস্ত্র আসলে মানবতা বিরোধী। অস্ত্র নয়,মানুষের সঙ্গে মানুষের সুসম্পর্কই হল শ্রেষ্ঠ। সেই অজস্র শুভবুদ্ধি মানুষের শক্তিতেই তিনি শক্তিশালী হয়ে এগিয়ে আসেন।
২)'হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়াই'-হাত নাড়িয়ে কবি কীভাবে বুলেট তাড়ান?
উত্তর:জয় গোস্বামী রচিত অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতায়,যুদ্ধবাজদের নেশা মানুষকে হত্যা করা, মানবিকতাকে ধ্বংস করে ক্ষমতা দখল করা। কবি গানকে হাতিয়ার করে সেই অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চান। গান মানুষের শুভচেতনার বিকাশ ঘটায়, সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে। মিলিত শুভচেতনার কখনও পরাজয় হয় না। তাই কবি গানকে হাতিয়ার করে সহজেই হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়ান।
৩)'গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে'-কবির এই মন্তব্যের তাৎপর্য আলোচনা করো।
উত্তর: জয় গোস্বামী রচিত 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায়,অস্ত্রের ভয় আর পেশিশক্তির হুংকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বর্ম হয়ে উঠতে পারে মানুষ।
* অশুভ প্রতিরোধের কাজে সংগীত একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।গানের মধ্য দিয়ে যেমন আনন্দ আর সুন্দরের বিকাশ ঘটে,ঠিক সেরকমই গান হয়ে উঠতে পারে প্রতিবাদের বাহন। তাই বুলেট অর্থাৎ যুদ্ধকে বাধা দিতে কবি গানকেই বর্মের মতো ব্যবহার করেন।
৪)'আঁকড়ে ধরে সে খড়কুটো'-কবি কাকে ‘খড়কুটো’ বলেছেন? তাকে আঁকড়ে ধরতে চেয়েছেন কেন?
উত্তর: জয় গোস্বামী রচিত অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতায়,-অস্ত্রের বিরুদ্ধে গানকে কবি আঁকড়ে ধরতে চেয়েছেন। সারা পৃথিবী জুড়ে চলতে থাকা হিংসা ও হানাহানির বিরুদ্ধে কবির একমাত্র সম্বল একটি-দুটি গান। সামান্য বোঝাতেই কবি ‘খড়কুটো’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
* ডুবন্ত মানুষ কিছু আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চায়। যদি সেটা খড়কুটোও হয়, তবে তাকেই সে অবলম্বন করে আঁকড়ে ধরে।কবিও ভাবছেন গানই হল পৃথিবীতে মানুষের চেতনা বদলানোর মাধ্যমে।এই গান জীবনের গান।
জ)বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্নমান-৫
১)'অস্ত্র রাখো, অস্ত্র ফ্যালো পায়ে- কার উদ্দেশ্যে এমন আবেদন? এমন আবেদন করার কারণ কী? এআবেদনের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:কবি জয় গোস্বামী রচিত ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায়,সারা পৃথিবী জুড়ে থাকা শুভবুদ্ধি মানুষদের উদ্দেশ্যে বলেছেন।
* অস্ত্রকে সঙ্গী করার কারণে মানবসভ্যতা খুব তাড়াতাড়ি ধ্বংস হচ্ছে। কবি জানেন,অস্ত্র কখনও শুভবুদ্ধি মানুষের চিন্তা, চেতনা ও শান্তিলাভের বিষয় হতে পারে না।অস্ত্র মানুষকে বিদ্বেষ, হিংসা, ক্ষমতা ও দম্ভের উপর নির্ভরশীল।কবি জানেন, প্রবলের অত্যাচার দমন করতে হলে, মানুষের একতার প্রয়োজন। আর একমাত্র গানই পারে মানুষকে একত্রিত করতে।অস্ত্রের দ্বারা মানুষ শুধু অন্য মানুষকে ভয় দেখাতে পারে। এই অস্ত্রের হাত থেকে একমাত্র বাঁচাতে পারে গানই।তাই কবি অস্ত্রকে পায়ে ফেলে মানব সমাজকে সার্থক করতে পার।গান মানুষের বিবেককে জাগ্রত করে এবং মানুষের মধ্যে একতা, মূল্যবোধের জাগরণ ঘটিয়ে মানবসভ্যতার বিকাশে সাহায্য করে।
২)আমার শুধু একটা কোকিল/গান বাঁধৰে সহস্ৰ উপায়ে'- 'শুধু একটা কোকিল' আসলে কী ? এই গান বাঁধার প্রয়োজনীয়তা কী?
উত্তর:জয় গোস্বামী রচিত ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায়, সারা পৃথিবী জুড়ে চলতে থাকা হিংসা ও হানাহানির প্রতিবাদ করেছেন।মাথার উপরে শকুন' এবং ‘চিল' অর্থাৎ যুদ্ধবাজ শক্তিকে দেখেও ভরসা রেখেছেন নিজের বিবেককে,যা সামাজিক বিশৃঙ্খলা,ধ্বংস এবং হত্যালীলাকে বন্ধ করতে পারে।এই শুভবোধ এবং সৃজনশীল সত্তাকেই কবি ‘শুধু একটা কোকিল' বলে অভিহিত করেছেন।
* ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কবি সৃষ্টিকেই প্রতিরোধের একমাত্র উপায় করে তুলতে চেয়েছেন। এই গানই মানুষকে পৃথিবীর যাবতীয় জ্বালা,যন্ত্রণা ভুলিয়ে রাখতে পারে।ভুলিয়ে দেয় সভ্যতার ওপরে নেমে আসা অস্ত্রের অভিশাপ। যুদ্ধপ্রিয় বন্দুকবাজরা পৃথিবীকে ধ্বংস করতে চায়,তাদের হিংসার উপরে শান্তির বাণী দিয়ে যায় গান।তাই গানকে কবি ব্যবহার করেছেন অস্ত্রের বিরুদ্ধে হাতিয়ার।‘গানের বর্ম’ পরে কবি সহজেই বুলেটকে রক্ষা করতে পারেন। এই গানই তাঁকে হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে যুক্ত করে এবং উঠে দাঁড়ানোর শক্তি জোগায়। যাবতীয় রক্তাক্তকে ভুলে যেতে সাহায্য করে এই গান।এই কারণেই সহস্র উপায়ে গান বাঁধাপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।
আরো পড়ুন:
জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
অসুখী একজন কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
আফ্রিকা কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click Here
অভিষেক কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
পথের দাবী গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
সিন্ধুতীরে কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
নদীর বিদ্রোহ গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
সিরাজদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর Click here
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতা প্রশ্ন উত্তর Click here
0 Comments