ক। কবি পরিচিতি
খ। সারসংক্ষেপ
গ। নামকরন
ঘ। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (TYPE-1) প্রশ্নমান-২
ঙ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(TYPE-2) প্রশ্নমান-৩
চ) রচনাধর্মী বা বর্ণনাধর্মী প্রশ্নোত্তর। প্রশ্নমান-৫
ক) কবি পরিচিতি:
ভূমিকা:সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর সাহিত্যকীর্তির জন্য পাঠকের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।
জন্ম এবং শৈশব:
১৯০৪ খ্রিস্টাব্দের ১৩ সেপ্টেম্বর ভারতের সিলেটের করিমগঞ্জে তাঁর জন্ম হয়।বাবার নাম সিকান্দার আলী।
ছাত্রজীবন:
বাবার চাকরি বদলি হওয়ায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা ঘটে। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে তিনি শান্তিনিকেতনে আসেন এবং এখান থেকে সংস্কৃত, ইংরেজি,আরবি,ফারসি,হিন্দি,গুজরাটি প্রভৃতি একাধিক ভাষা শেখেন। ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে শান্তিনিকেতন থেকে তিনি বিএ ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবন:
তাঁর কর্মজীবন আরম্ভ হয় আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা দিয়ে। এরপর দর্শন পড়ানোর জন্য তিনি জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। তিনি ১৯২৭-২৯ খ্রিস্টাব্দে কাবুলের একটি কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯৩৪-৩৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি মিশরের কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে বরোদার মহারাজার আমন্ত্রণে বরোদা কলেজে তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব পড়ান। এখানে আট বছর কাটানোর পর দিল্লির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন।পরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে অধ্যাপকের দায়িত্ব পালন করেন।
সাহিত্যজীবন:
শান্তিনিকেতনে পড়তে পড়তেই তিনি বিভিন্ন পত্রিকা যেমন-দেশ,আনন্দবাজার,বসুমতী,সত্যযুগ প্রভৃতি পত্রিকায় নিয়মিত তাঁর লেখা প্রকাশ হত। বহু দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণকাহিনি, ছোটোগল্প, উপন্যাস, রম্যরচনা দ্বারা বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন তিনি। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাগুলি হল—
ভ্রমণকাহিনি— দেশে বিদেশে, জলেডাঙায়। রম্যরচনা-পঞ্চতন্ত্র,ময়ূরকণ্ঠী প্রভৃতি। প্রবন্ধ-চতুরঙ্গ। উপন্যাস-অবিশ্বাস্য,শবনম প্রভৃতি।ছোটোগল্প—চাচাকাহিনী, টুনিকাহিনী। গল্পমালা—রাজাউজির, ধূপছায়া, বেঁচে থাক, পুনশ্চ প্রভৃতি।
সম্মান ও স্বীকৃতি:
তাঁর সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি নানা পুরস্কার ও সম্মান পেয়েছেন। ১৯৪৯-এ 'নরসিংহ দাস পুরস্কার' পান। ১৯৬১-তে পান 'আনন্দ পুরস্কার'। ২০০৫-এ বাংলাদেশ সরকার তাঁকে মরণোত্তর 'একুশে পদক'-এ ভূষিত করেছেন।
জীবনাবসান:
১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের এই মহান লেখকের জীবনাবসান ঘটে।
খ) বিষয় সংক্ষেপ:
কলকাতাকে সকলে আজব শহর বললেও শহরের আজব চরিত্রের সঙ্গে লেখকের কোনো পরিচয় ঘটেনি।হঠাৎই একদিন প্রচন্ডবৃষ্টি শহরের রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় তিনি একটি ফরাসি বইয়ের দোকান দেখতে পান। বাঙালি প্রকাশকরা যেখানে ভালো বই বিক্রি হবে না বলে খারাপ উপন্যাস ছাপাতে বাধ্য হন, সেখানে লেখক বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করেন সেই ফরাসি বইয়ের দোকানে কেবল ফরাসি বইই বিক্রি হচ্ছে।লেখকের উচ্চারণে ফরাসি শব্দের প্রয়োগ। শেষপর্যন্ত লেখক সাহস করে তিনি ফরাসিতে কথা বলা শুরু করেন এবং দেখা যায় যে, মেমসাহেব তাঁর ফরাসি ভাষা ব্যবহারকে প্রশংসা দিচ্ছেন।যা দেখে ফরাসি জাতির প্রতি লেখকের শ্রদ্ধা বেড়ে যায়। মহিলা ফরাসি-দোকানদার তিনি জানান যে, দোকানটি তাঁর বান্ধবীর,তাঁর অনুপস্থিতিতে তিনি শুধু ফরাসি ভাষা ও সাহিত্যের প্রচারের জন্যই দোকানে বসেছেন।এই দোকানে এক বাঙাল যুবকের কমার্শিয়াল আর্ট-এর বইয়ের অনুসন্ধান লেখকের মনে ভরসা জোগায়,বাঙালি তাঁর মনের জায়গায় কিছুটা এগোতে পারছে। তিনি নিজে একটি বই হাতে পান, যার বিষয় হিটলারের চরিত্র বর্ণন এবং সেই বইটির সঙ্গে পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য প্রাবন্ধিক আগ্রহী হয়ে ওঠেন। কিন্তু কাকের ডাকে রাত ভোর হয়ে যাওয়ায় আপাতত সেই সময় তিনি পান না।
গ) নামকরণ:
আজব শহর কলকেতা' প্রবন্ধে লেখক এই শহরের মধ্যে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতাকে উপলক্ষ্য করে-এই শহরের রাস্তার ধারে তিনি একটি ফরাসি বইয়ের দোকান দেখতে পান। ফরাসি বই বিক্রি করে এখানে কেউ রোজগার করতে পারবে তা লেখক ভরসা করেননি, কিন্তু দোকানে ঢুকে দেখেন সেখানে শুধুই ফরাসি বইয়ের ভাণ্ডার। অন্য কোনো কিছুই নেই।
শহরে একজন মহিলা ফরাসি-দোকানদার কেবল ফরাসি বইকে কেন্দ্র করে দোকান খুলেছেন তা ভাবতে আশ্চর্য লাগে লেখকের।ফরাসি ভাষার যখন তিনি সেই মহিলা-দোকানদারের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন,তখন তিনি জানতে পারেন যে, দোকানটি তাঁর বান্ধবীর। তাঁর অনুপস্থিতিতেই তিনি দোকানে বসেছেন শুধু ফরাসি ভাষা ও সাহিত্য প্রচারের জন্য। একজন ফরাসি মানুষ ফ্রান্স থেকে বইয়ের সম্ভার নিয়ে কলকাতায় এসে দোকান খুলেছেন-এই ঘটনা প্রাবন্ধিকের কাছে যেন এই শহরের আজব চরিত্রকেই স্পষ্ট করে তুলেছে।
ঘ। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (TYPE-1) প্রশ্নমান-২
১)'তাই নিয়ে একখানা প্রামাণিক প্রবন্ধ লিখব ভাবছি'-প্রাবন্ধিক কোন বিষয়ে প্রবন্ধ লেখার কথা ভেবেছিলেন ?
উত্তর:লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী ছোটথেকেই কলকাতা সম্পর্কে শুনে আসছে যে কলকাতা হল আজব শহর কিন্তু প্রবীণ বয়সেও তিনি তার প্রমাণ পান নি।তাই কলকাতা সম্পর্কে একটি প্রবন্ধ লেখার কথা ভেবেছিলেন।
২) 'যদিও পথ হারায় নি তবু সমস্যাটা একই।'-এখানে প্রাবন্ধিক যে সমস্যার কথা বলেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত 'আজব শহর কলকেতা'প্রবন্ধে-প্রচন্ড বৃষ্টিতে পথ না হারালেও সেই পথ হারানোর বেদনা প্রাবন্ধিকের মনের মধ্যে জেগে উঠেছিল। কারণ বৃষ্টিতে তার ছাতা কিংবা বর্ষাতি, কোনোটাই ছিল না, ট্রামে চড়ার মতো শরীরের সক্ষমতাও ছিল না। খরচের ভয়ে তিনি বাস-ট্যাক্সিও চড়তে চাননি।সুতরাং,বাড়ি ফেরার চিন্তাটা তাঁর কাছে পথ হারানোর বেদনার মতো মনে হয়েছিল।
৩)'এমন সময় সপ্রমাণ হয়ে গেল'- কী প্রমাণ হয়েছিল এবং কীভাবে?
উত্তর:লেখক সৈয়দ মুস্ত আলীর রচিত'আজব শহর কলকলকেতা'প্রবন্ধে প্রমাণ হয়ে গিয়েছিল যে, 'কলকেতা আজব শহর'।
* কলকাতা শহরের রাস্তায় লেখক দেখেছিলেন, সামনে বড়ো বড়ো হরফে লেখা আছে 'ফ্রেঞ্চ বুক শপ' লেখক তখন ফরাসি বইয়ের দোকান দেখে তাঁর মনে হয়েছিল যে কলকাতা সত্যিই আজব শহর।
৪)বাঙালী প্রকাশকরা বলেন'- বাঙালি প্রকাশকরা কী বলেন ?
উত্তর:সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত'আজব শহর কোলকেতা'প্রবন্ধে, উল্লেখ করেছেন যে,বাঙালি প্রকাশকেরা বলে থাকেন,শুধু ভালো বই ছাপিয়ে অর্থ রোজগার করা যায় না,তার জন্য 'রদ্দি'অর্থাৎ খারাপ খারাপ উপন্যাসও প্রচুর পরিমাণে প্রকাশ করতে হয়।
৫)'এই ফ্রেঞ্চ বুক শপ' বোধ হয় হাতীর দাঁতের মত'- মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত'আজব শহর কোলকেতা'প্রবন্ধে,কলকাতার বুকে শুধু ফরাসি বই বিক্রি করে রোজগার করা অসম্ভব।সেই কারণেই লেখকের মনে হয়েছিল যে তাঁর চোখে পড়া ফরাসি বইয়ের দোকানটি বোধহয় হাতির দাঁতের মতো, অর্থাৎ বাইরে ফরাসি বই কিন্তু তার আড়ালে লুকানো আছে অন্য কিছু,যেমন-খুশবাই,সাঁঝের পীর, লোথ্র-রেণু,ওষ্ঠ-রাগ,ইত্যাদি।
৬)'আপনাদের আশীর্বাদে আর শ্রীগুরুর কৃপায়..' প্রসঙ্গটি উল্লেখের কারণ কী ?
উত্তর:প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত 'আজব শহর কলকাতা' প্রবন্ধে, লেখক ব্যাকরণের নিয়মকে অগ্রাহ্য করে এবং উচ্চারণের বিধি রক্ষা না করে কলকাতার ফরাসি বইয়ের দোকানের মহিলা ফরাসি-দোকানদারের সঙ্গে লেখক সাহসের সঙ্গে যেভাবে কথাবার্তা বলতে শুরু করেছিলেন তার পূর্ব-ভূমিকা হিসেবেই কৌতুক করে তিনি প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছেন।
৭)'মেমসাহের খুশ।'- এই মেমসাহেব কে? তিনি কী কারণে খুশি হয়েছিলেন?
উত্তর:প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত 'আজব শহর কলকাতা' প্রবন্ধে,মেমসাহেব' বলতে কলকাতার ফরাসি বইয়ের দোকানের মহিলা-দোকানদারকে বোঝানো হয়েছে।লেখক দোকানে ঢুকে তাঁর সঙ্গে ফরাসি ভাষায় কথা বলছিলেন,সে কারণেই ‘মেমসাহেব' অর্থাৎ ওই ফরাসি মহিলা-দোকানদার খুশি হয়েছিলেন।
৮)'বইয়ের দোকান তাঁর নয়।'- বইয়ের দোকানটি কার? সেখানে বক্তার উপস্থিতির কারণ কী ?
উত্তর: প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত 'আজব শহর কলকেতা' প্রবন্ধে-কলকাতার 'ফ্রেঞ্চবুক শপ'-এর যে ফরাসি মহিলা-দোকানদারকে লেখক দেখেছিলেন,তিনি জানিয়েছিলেন যে, দোকানটি আসলে তাঁর বান্ধবীর।
* ফরাসি মহিলার বান্ধবীর অনুপস্থিতিতে তিনি দোকান চালাচ্ছিলেন,শুধু ফরাসি ভাষা ও সাহিত্যের প্রচারের জন্য।
৯)তুলসীদাস বলেছেন'- তুলসীদাস কে ছিলেন? তিনি কী বলেছিলেন?
উত্তর: ষোড়শ শতকের হিন্দু কবি ছিলেন তুলসীদাস। তিনি 'রামচরিতমানস' রচনা করেছিলেন।
* তুলসীদাস বলেছিলেন যে,পৃথিবীর রীতি খুব অদ্ভুত।শুড়িরা দোকানে জাঁকিয়ে বসে থাকে,আর গোটা পৃথিবীর লোক তার দোকানে গিয়ে মদ কেনে। অন্যদিকে দুধওয়ালাকে দুধ বিক্রি করতে হয় মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়ে।
১০)'দোকানে ঢুকে জিজ্ঞেস করলো'-কে, কী জিজ্ঞাসা করেছিল?
উত্তর: প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত 'আজব শহর কলকাতা' প্রবন্ধে-এক বাঙ্গাল ছোকরা’ ‘ফ্রেঞ বুক শপ'-এ ঢুকে সে জিজ্ঞাসা করেছিল যে, সেখানে কমার্শিয়াল আর্ট সম্বন্ধে কোনো বই আছে কিনা।
ঙ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(TYPE-2) প্রশ্নমান-৩
১)এমন সময় সপ্রমাণ হয়ে গেল'-কী প্রমাণ হয়েছিল এবং কোন্ সময়ে?
উত্তর:সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত ‘আজব শহর কলকেতা' প্রবন্ধে কলকাতা যে সত্যিই ‘আজব শহর' তা প্রমাণ হওয়ার জন্য এ কথা বলা হয়েছে।
* প্রবল বৃষ্টির মধ্যে ছাতা নেই,লেখক বাড়ি ফেরা নিয়ে সমস্যায় পড়েন।শারীরিক কারণে ট্রামে উঠতে পারছেন না, আবার বাস-ট্যাক্সি চড়তে গেলে বেশি খরচ হয়ে যাবে।সবমিলিয়ে তাঁর মনে যখন একটা ‘পথহারানোর বেদনা জেগে উঠেছে,সেই সময়ে তিনি দেখেন সামনে বড়ো বড়ো হরফে লেখা আছে,'ফ্রেঞ্চ বুক শপ'।কলকাতা শহরে ফরাসি বইয়ের দোকান দেখে তাঁর উপলব্ধি হয়েছে, সত্যিই কলকাতা ‘আজব শহর’।
২)সামনে দেখি বড় বড় হরফে লেখা'-কী লেখা ছিল? তা দেখে প্রাবন্ধিকের মনে কোন ভাবনার জন্ম হয়েছিল?
উত্তর: সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ‘আজব শহর কলকেতা'প্রবন্ধে লেখক রাস্তার পাশে বড়ো বড়ো হরফে 'ফ্রেঞ্চ বুক শপ’লেখা থাকতে দেখেছিলেন।
* প্রাবন্ধিকের মনে হয়েছিল যে, কলকাতা সত্যিই ‘আজব শহর'।তিনি ভেবেছিলেন,কোনো ফরাসি ব্যক্তি পথ হারিয়ে কলকাতা এসে পড়েছেন এবং তাঁর কাছে যেটুকু সঞ্চয় আছে তা নষ্ট করার জন্যই তিনি ফরাসি বইয়ের দোকান খুলেছেন।
৩) 'তাই আন্দাজ করলুম'-কোন পরিপ্রেক্ষিতে প্রাবন্ধিক কী আন্দাজ করেছিলেন ?
উত্তর: প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত 'আজব শহর কলকেতা'-প্রবন্ধে প্রকাশকরা যেখানে ভালো বই ছাপিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন
না বলে রদ্দি উপন্যাস ছাপানোর কথা বলেন, সেখানে কলকাতায় ফরাসি বইয়ের দোকান কী করে লাভ করবে তা নিয়ে লেখক চিন্তায় ছিলেন। তাই তিনি দোকানের সম্পর্কে কিছু আন্দাজ করেছিলেন।
* লেখক আন্দাজ করেছিলেন যে, ফরাসি বইয়ের দোকানটি হয়তো হাতির দাঁতের মতো, যা শুধু দেখবার জন্য, চিবোবার জন্য রয়েছে অন্য গোপন দাঁত। অর্থাৎ দোকানের নাম বাইরে যদিও ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ', তার ভিতরে গিয়ে পাওয়া যাবে খুশবাই, 'সাঁঝের পীর,লোধ্র-রেণু,ওষ্ঠ-রাগ,-ইত্যাদি বই।
৪)' আজব শহর কলকেতাই বটে '- কেন প্রাবন্ধিকের এই ধারণা হয়েছে লেখো ।
উত্তর:প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত 'আজব শহর কলকেতা'- প্রবন্ধে কলকাতায় লেখক ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ'দেখে প্রথম থেকেই শুধু ফরাসি বই বিক্রি করে কীভাবে দোকানি ইনকাম করবে তা নিয়ে লেখক চিন্তায় ছিলেন।তিনি প্রত্যাশা করেছিলেন যে, দোকানে ফরাসি বইয়ের আড়ালে খুশবাই,সাঁঝের পীর,লোথ্র-রেণু,ওষ্ঠ-রাগ, ইত্যাদি বই পাওয়া যাবে। এই ভরসায় দোকানে ঢোকার পরে তিনি অবাক হয়ে দেখেন যে,শুধু ফরাসি বই বিক্রি করেই দোকানদার পয়সা উপার্জন করতে চায়। দোকানে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফরাসি বই, যার কিছু সাজানো, কিছু এলোমেলোভাবে ছড়ানো।দোকানদারের সাহস দেখেই লেখকের মনে হয়েছিল কলকাতা সত্যিই ‘আজব শহর'।
চ)বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্নমান-৫
১)'আমার মনে বড় আনন্দ হল।'কী দেখে, কেন প্রাবন্ধিকের মনে আনন্দ হয়েছিল?
উত্তর: প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত 'আজব শহর কলকাতা'- প্রবন্ধে কলকাতার‘ফ্রেঞ্চ বুক শপে' লেখক দেখেন একটি বাঙাল ছোকরা সেখানে এসেছিল এবং জিজ্ঞাসা করেছিল যে, সেখানে কমার্শিয়াল আর্ট বিষয়ে কোনো বই আছে কিনা। যা শুনে লেখকের মনে অত্যন্ত আনন্দ হয়েছিল। তিনি অনুমান করেছিলেন যে, বাঙালি বেশ খানিকটা এগিয়ে গিয়েছে।লেখক ফরাসি বইয়ের দোকানটিতে দেখছিল অজস্র ফরাসি বই, যার কিছু সাজানো গোছানো আর কিছু যেখানে সেখানে ছড়ানো, তা দেখে লেখকের মনে হয়েছিল এই বই কিনবে কে? তারপর লেখক দেখেন, এক বাঙালি ফরাসি ভাষায় কমার্শিয়াল আর্টের বই খুঁজছে -এটাই ছিল লেখকের আনন্দের কারণ।
২)'আজব শহর কলকেতায় ফরাসি বইয়ের দোকান দেখে লেখকের মনে কীরূপ ভাবের উদয় হয়েছিল? দোকানের ভিতর ঢুকে লেখক কীরূপ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলেন?
উত্তর: প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত 'আজব শহর কলকাতা'প্রবন্ধে প্রচন্ডবৃষ্টি থেকে কিভাবে রক্ষা পাওয়ার জন্য লেখক যখন খুব চিন্তিত এরকম সময়ে তাঁর চোখে পড়ে বড়ো বড়ো হরফে লেখা ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ'।তা দেখে লেখকের মনে হয়েছিল কোনো ফরাসি পথ হারিয়ে কলকাতায় এসে পড়েছে, আর তার যা সামান্য পয়সা আছে সেটাকে নষ্ট করার জন্য বইয়ের দোকান খুলেছে। অথচ এই দোকান হল হাতির দাঁতের মতো শুধু দেখানোর জন্য, চিবানোর দাঁত রয়েছে লুকানো। অর্থাৎ দোকানের নাম বাইরে যদিও ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’, ভিতরে গিয়ে পাওয়া যাবে-খুশবাই,সাঁঝের পীর, লোথ্ররেণু,ওষ্ঠ রাগ, ইত্যাদি।দোকানের ভিতরে ঢুকে লেখক আশ্চর্য হয়ে দেখেন, সেখানে শুধুই ফরাসি বই, কিছু বই সাজানো-গোছানো এবং কিছু এলোমেলো ভাবে ছড়ানো। কলকাতার বাঙালি দোকানদারদের মতো করেই বইগুলো সাজানো রয়েছে। দোকানের ফরাসি মেমসাহেব ফরাসি ভাষাতেই লেখকের কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে তিনি কী ধরনের বই চান। দীর্ঘকাল ফরাসিতে কথা না বলার জন্য লেখক দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু দোকানের মেমসাহেব লেখকের ইংরেজি ভালোভাবে বুঝতে পারছিলেন না, তাই লেখককে ফরাসিতে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন।এরকম পরিস্থিতিতে সাহস করে লেখক তাঁর দশ বছরের পুরানো অনভ্যাসকে ফরাসিতে কথাবার্তা শুরু করেন এবং মেমসাহেব তাঁর কথা তাঁকে বাহবা দেন।তারপর দোকানদার মেমসাহেব লেখকের বইয়ের ফর্দ টুকে নেন এবং প্রতিশ্রুতি দেন বই আসা মাত্র লেখককে খবর দেবেন। কথাবার্তা সূত্রে জানা যায় যে, বইয়ের দোকান প্রকৃতপক্ষে সেই মেমসাহেবের বান্ধবীর, তার অনুপস্থিতিতে 'শুধুমাত্র ফরাসি ভাষা ও সাহিত্যের প্রচার কামনায়'- তিনি দোকানে বসে আছেন। এর মধ্যে এক বাঙালি যুবক কমার্শিয়াল আর্টের বইয়ের সন্ধান করতে আসায় লেখক আনন্দিত হয়ে পড়েন। এর মধ্যে হিটলারের চরিত্র বিষয়ক একটা বই তিনি পেয়ে যান।
আরো পড়ুন:
একাদশ শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর click here
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর click here
লালন শাহ ফকিরের গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click here
ভাব সম্মিলন কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click here
ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click here
আগুন নাটকের প্রশ্ন উত্তর click here
আজব শহর কলকেতা প্রবন্ধ প্রশ্ন উত্তর Click here
0 Comments