ক। কবি পরিচিতি
খ) উৎস
গ। সারসংক্ষেপ
ঘ। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (TYPE-1) প্রশ্নমান-২
ঙ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(TYPE-2) প্রশ্নমান-৩
চ) রচনাধর্মী বা বর্ণনাধর্মী প্রশ্নোত্তর। প্রশ্নমান-৫
ক) কবি পরিচিতি:
জন্ম ও শৈশব:
আনুমানিক সাধক লালন সাঁই ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে নদিয়া জেলার অধীন কুষ্টিয়ার চাপড়ার অন্তর্গত গড়াই নদীর তীরে ভাঁড়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি হিন্দু কায়স্থ পরিবারের একমাত্র সন্তান ছিলেন লালন সাঁই। তাঁর বাবা-মা ছিল মাধব কর এবং পদ্মাবতী। শৈশবেই তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। ফলে আর্থিক দুরবস্থার জন্য লালন পড়াশোনা করতে পারেননি।কারো কারো মতে,লালনের জন্ম হয়েছিল যশোহর জেলার হরিশপুর গ্রামে।
পরিণত জীবন:
শৈশবে বাবা মারা যাওয়ার পরেই লালনের ওপর সংসারের দায়িত্ব এসে পড়ে এবং এইসময় তাঁর বিয়েও হয়। এরপর জ্ঞাতিদের সঙ্গে বিবাদের জন্য তিনি ঘরবাড়ি ছেড়ে মা ও স্ত্রীকে নিয়ে আলাদাভাবে বাস করতে থাকেন।এই সময়েই প্রতিবেশী বাউলদাসের সঙ্গে তিনি নবদ্বীপে গঙ্গাস্নানে যান। বাড়ি ফেরার পথে বসন্তরোগে আক্রান্ত হলে সঙ্গীরা লালনকে মৃত মনে করে কোনোরকমে মুখাগ্নি করে নদীতে ফেলে দিয়ে যায়। লালনের দেহ ভাসতে দেখে এক মুসলমান মেয়ে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে সেবা-যত্ন করে সুস্থ করে তোলেন।এরপর লালন বাড়ি ফিরে গেলেও হিন্দুসমাজ মুসলমানের ঘরে অন্নজল গ্রহণ করায় তাঁকে সমাজে জায়গা দিতে রাজি হয় না।এই ঘটনায় হতাশ লালন তখন সিরাজ সাঁই নামক বাউলগুরুর কাছে দীক্ষাগ্রহণ করে জীবনের নতুন অর্থ খুঁজে পান।
বাউলসাধনা:
বাউলসাধনায় লালন ছেউড়িয়ায় তাঁর আখড়া গড়ে তোলেন। অল্পদিনের মধ্যেই লালনের প্রভাব দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বাউলগুরু হিসেবে তিনি পরিচিত হন। লালন জ্ঞানের পথে না গিয়ে মনের পথে ঈশ্বরকে খুঁজেছেন।তিনি মনে করতেন'মনের মানুষই তাঁর ঈশ্বর। তাঁকে পাওয়ার জন্য তীর্থদর্শনের কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি জাতপাতের কোন কথা না বলে মানবাত্মার খোঁজ করেছিলেন। এইভাবে লালনের গান সেখানে জাতিভেদ নেই, মানুষই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ।
সম্মান ও স্বীকৃতি:
শোনা যায়, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ,সত্যেন্দ্রনাথ, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথ প্রমুখ বিখ্যাত মানুষের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছিল।জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্ভবত ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের ৫ মে শিলাইদহে বোটের ওপর বসে লালনের একটি ছবি এঁকেছিলেন। সম্ভবত লালন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।অবশ্য রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর সত্যিই দেখা হয়েছিল কি না সে বিষয়ে গবেষকদের মধ্যে যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে। তবে শচীন্দ্রনাথ অধিকারী তাঁর পল্লীর মানুষ, রবীন্দ্রনাথ বইতে শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে কবির সঙ্গে লালনের সাক্ষাতের একটি বিশদ বর্ণনা দিয়ে জানিয়েছেন। আনুমানিক ১৩১১ সালে গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার সম্পাদক কাঙাল হরিনাথের নাম অবশ্যই স্মরণীয়। লালনের সমসাময়িক এই মানুষটি তাঁর পত্রিকার মাধ্যমে বাঙালি সমাজের সঙ্গে প্রথম লালনের গানের পরিচিতি ঘটান।
জীবনাবসান:
১৮৯০ খ্রিস্টাব্দের ১৭ অক্টোবর ছেউড়িয়ার আখড়াতেই ১১৬ বছর বয়সে লালন ফকির দেহত্যাগ করেন।।
খ)উৎস:
লালন গীতিকা নামক লালনের গানের সংকলন থেকে সংগৃহীত। লালন শাহ ফকিরের গানটি এই সংকলন গ্রন্থের ৩৯১ সংখ্যক গান।
গ) সারসংক্ষেপ:
খাঁটি মানুষ হতে গেলে মানুষকেই ভজনা করতে হবে। মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হলে মনের মানুষের সন্ধান পাওয়া যাবে না। দ্বি-দল প্রস্ফুটিত হয় আজ্ঞাচক্রে। আর সেই দ্বি-দলের পদ্মে সোনার মানুষ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। কেবল গুরুর কৃপা হলেই এই সত্য জানা সম্ভব। মানুষের মধ্যেই মানুষের কাহিনি রচিত হয়ে আছে আলেক লতার মতো,অর্থাৎ পার্থিব মানবশরীরের মধ্যেই বিরাজ করেন। আর সহজ মানুষ ঠিক যেমন লতা গাছের অলক্ষে আড়ালে থাকে। সে আসলে ‘জাত’-কে অবলম্বন করে মুক্তি খোঁজে।কিন্তু মানুষের সুখ ছাড়া মানুষের মন অর্থহীন এবং মহাশূন্য। তাই লালন বলেন যে, মানুষকে ভজনা করলেই একমাত্র ত্রাণ পাওয়া যাবে।
ঘ। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (TYPE-1) প্রশ্নমান-২
১).'ক্ষ্যাপারে তুই মূল হারাবি।'—এখানে মূল কী? কীভাবে তা হারিয়ে যাবে?
উত্তর:'লালন শাহ্ ফকিরের গান'-কবিতায় ‘মূল' বলতে 'মনের মানুষকে বোঝানো হয়েছে,কারণ বাউল সাধকের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হল 'মনের মানুষ'।
* বাউল সাধকরা মানবতত্ত্বের সাধনা করেন। তাই লালনের মনে হয়েছে যে,এই মানবতত্ত্ব সম্পর্কে জ্ঞান না থাকলে মনের মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয় না।
২)'দ্বি-দলের মৃণালে/সোনার মানুষ উজ্জ্বলে'- মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:লালন শাহের রচিত 'লালন শাহ ফকিরের গান' কবিতায় দ্বি-দল’ বলতে আসলে দুটি অক্ষর-হ, এবং ক্ষ,। হ- হৃদয়ের এবং ক্ষ- ক্ষণিকের প্রতীক।এই দুই দলযুক্ত পদ্মে সোনার মানুষ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে এবং গুরুর কৃপা হলেই সে কথা জানতে পারা যায়।
৩)'মানুষ-গুরু কৃপা হলে/ জানতে পারি।'-কী জানতে পারার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর:লালন শাহের রচিত 'লালন শাহ ফকিরের গান' কবিতা, মানুষকে ভজনা করলে সোনার মানুষ হওয়া যায় এবং দ্বি-দলের মৃণালে সোনার মানুষ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।গুরুর কৃপায় বাউল সাধক এই সত্য জানতে পারেন।
৪)'দেখা যেমন আলেক লতা..'- যে প্রসঙ্গে কবি এ কথা বলেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর:লালন শাহের গানে দেখা যায়,গাছের মধ্যে অলক্ষে অবস্থান করে লতা। সেরকমই মানুষের মনের মধ্যে থাকে আর এক মানুষ অর্থাৎ'মনের মানুষ'।তার অবস্থান দৃশ্যমানতার আড়ালে। সাধনার মধ্য দিয়ে তার স্বরূপকে উপলব্ধি করতে হয়। এই প্রসঙ্গেই মন্তব্যটি করা হয়েছে।
৫)'মানুষ ছাড়া মন আমার'- মানুষ ছাড়া মন বলতে কী বোঝ? এর পরিণতি কী?
উত্তর:'মানুষ ছাড়া মন' বলতে,মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকাকে বোঝানো হয়েছে।
* মন যদি মানব সর্বজনীন না হয় তাহলে 'মনের মানুষ'-এর সন্ধান করা যায় না। লালন এই অবস্থাকে বলেছেন 'শূন্যকারে পর্যবসিত হওয়া।
৬)'পড়বি রে তুই শুন্যকার'-কবির এই মন্তব্যের কারণ কী?
উত্তর: মানুষের যদি মানবতত্ত্ব সম্পর্কে ধারণা না থাকে তাহলে তার পক্ষে মনের মানুষের সন্ধান পাওয়া বা ঈশ্বর সন্ধান খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।এই পরিপ্রেক্ষিতেই লালন উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছেন।
ঙ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(TYPE-2) প্রশ্নমান-৩
১)' মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি,- মন্তব্যটির তাৎপর্য সমগ্র কবিতা অবলম্বনে আলোচনা করো।
উত্তর:দেহতত্ত্ব,আত্মতত্ত্ব,এবং মানবতত্ত্বের, এই দিনটি একত্রে বাউল সাধকের সিদ্ধিলাভ আর সেই সাধনায় চরম তম রূপ দেখা যায় লালন ফকিরের মধ্যে। মনের মানুষ হয়ে উঠতে গেলে মানুষকে ভজনা করতে হবে।দ্বি-দলের মৃণালে সোনার মানুষ উজ্জ্বল হয়।বাউল সাধনায় এই দুই দল হল আসলে দুটি বর্ণ-হ এবং ক্ষ। হ কে হৃদয় এবং ক্ষ কে ক্ষনিকের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।বাউল সাধনায় দ্বি- দল প্রস্ফুটিত হয় এবং সেখানেই মনের মানুষ বিরাজ করেন।এই মানবতত্ত্বের সঙ্গেই জুড়ে থাকে নিজের ভিতরে থাকা মনের মানুষের সন্ধান।মানুষে মানুষ গাথা আছে' লালন মনে করেন,সেই মানুষকে খুঁজতে গেলে মানবতাই একমাত্র পথ।মানুষের আচার-আচরণের দ্বারা ঈশ্বর সন্ধান ভুল পরিচালিত হয়।
২)'সোনার মানুষ উজ্জ্বলে'- সোনার মানুষ কে? সে কীভাবে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে?
উত্তর:লালন শাহের রচিত'লালন শাহ ফকিরের গান' কবিতায়‘সোনার মানুষ' বলতে বাউল সাধনার মনের মানুষ'-এর কথা বলা হয়েছে।
* বাউল সাধনায় মানুষ সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়েছে এবং মানব শরীর সেখানে সাধনার একমাত্র ভিত্তি। ব্যক্তি মানুষ ঈশ্বরস্বরূপ হয়ে ওঠে যখন সে,মানুষকে ভজনা করে। মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে মনের মানুষের সান্নিধ্য পাওয়া যায় না। মৃণালে সোনার মানুষ উজ্জ্বল হয়। বাউল সাধনায় এই দুই দল হল আসলে দুটি বর্ণ-হ এবং ক্ষ। হ কে হৃদয় এবং ক্ষ কে ক্ষনিকের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।বাউল সাধনায় দ্বি- দল প্রস্ফুটিত হয় এবং সেখানেই মনের মানুষ বিরাজ করেন।সোনার মানুষ 'উজ্জ্বল' হয়ে ওঠে বাউল সাধনায়।
৩)'জেনে শুনে মুড়াও মাথা'-কাদের উদ্দেশে কবি এ কথা বলেছেন? এ কথা বলার কারণ কী?
উত্তর :প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মাচরণের প্রয়োজনে যারা মাথা হয়, তাদের উদ্দেশে লালন উপরিউক্ত মন্তব্যটি করেছেন।
* বাউল সাধকের মতোই লালন বিশ্বাস করতেন মানবতত্ত্বে।এই মানবতত্ত্ব অর্থাৎ মানুষ নিজেকে নিজে জানার ওপরে গুরুত্ব দেয়।এই পরিপ্রেক্ষিতে যারা প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম আচরণ-আচরণ করে, তারা যে ঈশ্বর-সাধনা থেকে দূরে সরে যায় সে কথাই এখানে বলা হয়েছে।
৪)'এই মানুষে মানুষ গাথা'-এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে বাউল দর্শনের যে বিশেষ দিকটি প্রকাশিত হয়েছে তানিজের ভাষায় লেখো ।
উত্তর:লালন শাহের রচিত'লালন শাহ ফকিরের গান' কবিতায়,লালন তাঁর গানে মানুষকে ভজনার কথা বলেছেন।'মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি'-অর্থাৎ দেহ ভান্ডারের ভিতরে আছে মন আর মনে থাকে মনের মানুষ' এই মনের মানুষকে জানতে পারলে সাধনায় চরম সিদ্ধি লাভ হবে।লালনের কথায়, যেমন গাছের মধ্যে থাকে ‘আলেক লতা,সেরকমই মানুষের মধ্যে থাকে আর এক মানুষ, যাকে লালন তাঁর অন্য গানে বলেছেন‘আলেক মানুষ’সে কারণেই কবি বলেছেন ‘মানুষে মানুষ গাথা'।অর্থাৎ মানব শরীরের মধ্যে বিরাজ করেন সহজ মানুষ ঠিক যেমন লতা গাছের অলক্ষে থাকে অথচ নিজের ভেতরের ঈশ্বরের সন্ধান না করে মানুষ আনুষ্ঠানিকের মধ্যে দিয়ে ঈশ্বরকে খোঁজে।
৫)'লালন বলে,.'-লালন কী বলেন? সেই বলার সার্থকতা কী?
উত্তর:‘লালন শাহ্ ফকিরের গান'-কবিতায়, লালন বলেছেন মানুষ-ভজনা করলেই খাঁটি মানুষ পাওয়া যায়।
* লালন তাঁর বিভিন্ন গানে বার বার মানব তত্ত্বের কথা উচ্চারণ করেছেন।এই গানে লালন বলেছেন- মানুষের ভজনার কথা।শুধু তাই নয়,মানুষের মধ্যেই 'মনের মানুষ' রয়েছে তার সন্ধান করার কথায় কবি বলেছেন।মানুষ ছাড়া মন অর্থহীন।সেকারণে লালন বলেছেন যে, প্রকৃত মুক্তি পেতে গেলে মানুষকে-ভজনা করতেই হবে।
চ) রচনাধর্মী বা বর্ণনাধর্মী প্রশ্নোত্তর। প্রশ্নমান-৫
১)'লালন শাহ্ ফকিরের গান'-এ বাউল সাধনার বিভিন্ন দিক যেভাবে প্রকাশিত হয়েছে তা আলোচনা করো।
উত্তর:লালন শাহের রচিত ‘লালন শাহ্ ফকিরের গান' কবিতায়-বাউল সাধনার অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ দিক এই গানে পাওয়া যায়।
প্রথমত,গানে লালন মানুষ ভজনার কথা বলেছেন। এই মানুষ সমাধান না পেলে মূল হারাতে হয়। তিনি আরো বলেছেন'মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি'। সোনার মানুষ ছাড়া মানব জীবন অসম্পূর্ণ।
দ্বিতীয়ত,বাউল দর্শনে মানব তত্ত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।এই কবিতায় মনের ভিতরে‘মনের মানুষ' 'লুকিয়ে আছে তাকে জাগ্রত করে তুলতে হবে। তিনি তার গানে বলেছেন সন্ধান একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে আছে'মানুষে মানুষ গাথা'অর্থাৎমানব শরীরের মধ্যে বিরাজ করেন সহজ মানুষ, ঠিক যেমন লতা গাছের অলক্ষে থাকে অথচ নিজের ভেতরের ঈশ্বরের সন্ধান না করে মানুষ আনুষ্ঠানিকের মধ্যে দিয়ে ঈশ্বরকে খোঁজে।
তৃতীয়ত,বাউল সাধনার অনেক পরিভাষা এই গানে পাওয়া যায়-যেমন—‘দ্বি-দলের মৃণালে সোনার মানুষ উজ্জ্বল হয়। বাউল সাধনায় এই দুই দল হল আসলে দুটি বর্ণ-হ এবং ক্ষ। হ কে হৃদয় এবং ক্ষ কে ক্ষনিকের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।বাউল সাধনায় দ্বি- দল প্রস্ফুটিত হয় এবং সেখানেই মনের মানুষ বিরাজ করেন। 'আলেক লতা' ইত্যাদি। এইভাবে মানবতত্ত্বের নিরিখে এবং জীবনবোধে ‘লালন শাহ্ ফকিরের গান' বাউল সাধনার এক উজ্জ্বল উপহার।
২)লালন শাহ্ কে ছিলেন?পাঠ্য লালন গীতিকা অবলম্বনে মূল বিষয়টি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:লালন ফকির ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন আধ্যাত্মিক সাধক। তিনি একাধারে সমাজ সংস্কারক,দার্শনিক ও মানবতাবাদী। তিনি বাংলাদেশে বাউল গানের শ্রেষ্ঠতম রচয়িতা।
* খাঁটি বা শুদ্ধ মানুষ হতে গেলে মানুষকেই ভজনা করতে হবে। দেহ ভান্ডারের ভেতরে আছে মন আর মনে থাকে 'মনের মানুষ'। এই মনের মানুষকে জানতে পারলে সাধনার চরম সিদ্ধি লাভ হবে। মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হলে 'মনের মানুষ'-এর সন্ধান পাওয়া যাবে না। দ্বি-দল প্রস্ফুটিত হয় আজ্ঞাচক্রে। আর সেই দ্বি-দলের পদ্মে ‘সোনার মানুষ' উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। কেবল গুরুর কৃপা হলেই এই সত্য জানা সম্ভব। মানুষের মধ্যে মানুষের গাথা বা কাহিনি রচিত হয়ে আছে আলেক লতার মতো। অর্থাৎ পার্থিব মানবশরীরের মধ্যেই বিরাজ করেন ‘সহজ মানুষ', ঠিক যেমন লতা গাছের অলক্ষে থাকে। কিন্তু মানুষের সুখ ছাড়া মানুষের মন অর্থহীন এবং মহাশূন্য।তাই লালন বলেন,মানুষকে ভজনা করলেই দেহ ভান্ডারে 'মনের মানুষ'-কে সাধনায় সিদ্ধি লাভ করতে পারবে।
আরো পড়ুন:
একাদশ শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর click here
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর click here
লালন শাহ ফকিরের গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click here
ভাব সম্মিলন কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click here
0 Comments