সূচিপত্র:
ক। কবি পরিচিতি
খ) উৎস
গ। সারসংক্ষেপ
ঘ। নামকরন
ঙ। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (TYPE-1) প্রশ্নমান-২
চ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(TYPE-2) প্রশ্নমান-৩
ছ) রচনাধর্মী বা বর্ণনাধর্মী প্রশ্নোত্তর। প্রশ্নমান-৫
e-bookap পেজটি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সুখবর-1st- ইউনিট,2nd ইউনিট,3nd ইউনিট,টেস্ট ফাইনাল এবং H.S পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্যগুরুত্বপূর্ণভাবে তোমাদের সাহায্য করবে।তাই এই সাফল্য আমাদের কাছে বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ক) কবি পরিচিতি:
জন্ম ও শৈশৰ:
১৯০৪ খ্রিস্টাব্দের ১৩ সেপ্টেম্বর অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের অসমের অন্তর্গত সিলেটের করিমগঞ্জে তাঁর জন্ম হয়। পিতার নাম সিকান্দার আলী।
ছাত্রজীবন:
মুজতবা আলীর পিতার চাকরি বদলির জন্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা ঘটে।১৯২১ খ্রিস্টাব্দে তিনি শান্তিনিকেতনে আসেন এবং এখান থেকে সংস্কৃত, ইংরেজি,আরবি,ফারসি,হিন্দি, গুজরাটি প্রভৃতি ভাষাশিক্ষা লাভ করেন। ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে শান্তিনিকেতন থেকে তিনি বিএ ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবন:
তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক করতেন। এরপর দর্শন পড়ানোর জন্য তিনি জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে তিনি ধর্মতত্ত্বে গবেষণার জন্য ডি. ফিল ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৩৪-৩৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি মিশরের কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।এরপর দিল্লির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন। পরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অতিথি অধ্যাপকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে তিনি আবার শান্তিনিকেতনে ফিরে আসনে এবং ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে থেকেই অবসর গ্রহণ করেন।
সাহিত্যজীবন:
শান্তিনিকেতনে পাঠরত অবস্থাতেই বিভিন্ন পত্রিকায় তিনি লেখা শুরু করেন।দেশ,আনন্দবাজার, সুমতী, সত্যযুগ প্রভৃতি পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন। বহু দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণকাহিনি, ছোটোগল্প, উপন্যাস, রম্যরচনা দ্বারা বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন তিনি। বিবিধ ভাষা থেকে শ্লোক ও রূপকের ব্যবহার, হাস্যরস সৃষ্টিতে পারদর্শিতা এবং গভীর জীবনবোধ ফুটিয়ে তোলায় তাঁর দক্ষতা প্রশংসনীয়। তাঁর উলেল্লখযোগ্য রচনাগুলিহল-ভ্রমণকাহিনি-দেশে বিদেশে,জলেডাঙায়'। রম্যরচনা-পঞ্চতন্ত্র,ময়ূরকণ্ঠী, প্রভৃতি। প্রবন্ধ-চতুরঙ্গ। উপন্যাস-অবিশ্বাস্য,শবনম প্রভৃতি।ছোটোগল্প-চাচাকাহিনী,টুনিকাহিনী,ধুপছায়া,বেঁচে থাক,পুনশ্চ’ প্রভৃতি।
সম্মান ও স্বীকৃতি:
তাঁর সাহিত্য চর্চার জন্য তিনি নানা পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। ১৯৪৯-এ ‘নরসিংহ দাস পুরস্কার' পান। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে 'আনন্দ পুরস্কার'। ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে মরণোত্তর ‘একুশে পদক’-এ ভূষিত করেছেন।
জীবনাবসান:
১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের ১১ ফেব্রুয়ারি এই মহসাহিত্যিকের জীবনাবসান ঘটে।
খ) বিষয় সংক্ষেপ:
মানুষকে প্রকৃত অর্থে বাঁচার মতো বাঁচতে গেলে মনের চোখ বাড়াতে হবে আর তারজন্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা শাখায় তাকে যাতায়াত করতে হবে।এই চোখ বাড়ানোর রাস্তাটা হচ্ছে বই পড়া এবং তারজন্যই বই কিনতে হবে।এই একমাত্র জিনিস যার পাঠাভ্যাস মনের ভিতরে একটা নিজস্ব ভুবন তৈরি করে দেয়,যেখানে জাগতিক দুঃখ ছায়া বিস্তার করতে পারে না।এই ভুবন সৃষ্টি হতে পারে সাহিত্য,দর্শন,ইতিহাস ইত্যাদি জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা শাখার মধ্য দিয়ে।আর তারজন্যই দরকার বই পড়া। আর বই পড়াকে সার্থক করে তোলে বই কেনা। কিন্তু বাঙালি বই পড়তে ভালোবাসলেও বই কিনতে ভালোবাসে না। অজুহাত দেয় যে বইয়ের দাম বেশি। অন্যদিকে প্রকাশক অজুহাত দেয় যে বইয়ের বিক্রি কম,তাই দাম বেশি।যেহেতু প্রকাশকের ক্ষেত্রে বিষয়টা ব্যাবসা তাই পাঠককেই এ বিষয়ে তৎপর হতে হবে। তাকে মনে রাখতে হবে যে, বই কিনে কখনও কেউ দেউলিয়া হয়ে যায়নি। ভালোবেসে বই কেনাটা বইপ্রিয় মানুষদের কাছে একটা নেশার মতো। মার্ক টোয়েনের মতো মানুষ পর্যন্ত তাঁর লাইব্রেরি সমৃদ্ধ করেছিলেন ধার করা বই ফেরত না দিয়ে।ধনী এবং জ্ঞানীর মধ্যে জ্ঞানী শ্রেষ্ঠ, তার কারণ ধনীর সম্পদকে জ্ঞানী সুন্দরভাবে ব্যবহার করতে পারে।কিন্তু জ্ঞানীর সম্পদ ধনী কোনো কাজে লাগাতে পারে না। জ্ঞানার্জন ধনার্জনের থেকে মহৎ। আমাদের বাংলাদেশের মানুষজন বইয়ের জন্য অর্থত্যাগ করতে কষ্ট হয়। বাঙালির জ্ঞান অর্জনের আকাঙ্ক্ষা প্রবল কিন্তু বই কেনার ব্যাপারে বাঙালি উদাসীন। এরকম চিত্র গোটা পৃথিবীতে আর দেখা যায় না।
গ) নামকরণ:
সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর 'বই কেনা' রচনায় মানুষের জ্ঞান অর্জনের জন্য বইয়ের প্রয়োজন কথা বলেছেন এবং সেই বই কেনার প্রয়োজনকেও প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন। মানুষের ভালো থাকার জন্য প্রয়োজন মনের ভেতরে একটা নিজস্ব ভুবন তৈরি করে নেওয়া। সেই ভুবন তৈরি হতে পারে জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা শাখার মধ্য দিয়ে।লেখকের কথায় দুটি উপায়ে আমরা আমাদের ভিতরে আর-একটা পৃথিবী তৈরি করে নিতে পারি। বই পড়াটাই হচ্ছে নিজেকে সমৃদ্ধ করার সবথেকে সহজ উপায়।কিন্তু বাঙালিরা জ্ঞান অর্জনে প্রয়াসী হলেও বই কেনার বিষয়ে উদাসীন। তারা মনে রাখে না যে, বই কিনে কেউ কখনও দেউলিয়া হয় না। বইয়ের দামবৃদ্ধির দায় প্রকাশকের ওপরে চাপিয়ে দিয়ে তারা নিজেদের অক্ষমতাকে আড়াল করে। বইয়ের স্বীকৃতি নানাভাবে দেখা যায় পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্ম বা ধর্মগ্রন্থেও। বহু বিখ্যাত মানুষরা বইকে তাদের জীবনের শ্রেষ্ঠতম সঙ্গী করে নিয়েছেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বাঙালি জাতির বই কেনার প্রতি যে উদাসীনতা তা লেখককে বিস্মিত করেছে। বই কেনার বাস্তব চিত্র এবং বই কেনার প্রয়োজন এই প্রবন্ধের বিষয়।
ঙ। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (TYPE-1) প্রশ্নমান-২
১)'হায় আমার মাথার চতুর্দিকে যদি চোখ বসানো থাকতো'- কে এ কথা বলেছেন ? তাহলে কী ঘটত ?
উত্তর : আলোচ্য কথাটি বলেছেন বিখ্যাত ফরাসি লেখক আনাতোল ফ্রাঁস।
* ফ্রাসের মতে ,মাথার চতুর্দিকে যদি চোখ থাকত তাহলে গোটা পৃথিবীর সৌন্দর্য একসঙ্গে দেখা যেত ।
2)'কথাটা যে খাঁটি,-কোন্ কথা খাঁটি ?
উত্তর : আনাতোল ফ্রাঁস বলেছিলেন যে ,তাঁর মাথার চারদিকে যদি মাছির মতো চোখ বসানো থাকত তাহলে গোটা দুনিয়ার সৌন্দর্য তিনি একসঙ্গে দেখতে পেতেন ।এই কথাটাকেই লেখক খাঁটি কথা’ বলেছেন।
৩)'কিন্তু আমার মনের চোখ তো মাত্র একটি কিংবা দুটি নয়,-মনের চোখ,-' বলতে বক্তা কী বুঝিয়েছেন
লেখো।
উত্তর : মনের চোখ- বলতে বক্তা এখানে মানুষের মনের চোখকে বুঝিয়েছেন। তা বিভিন্ন শাখার বই পড়ার মধ্যে দিয়ে মানুষের ভেতরের অন্তর্দৃষ্টি জেগে ওঠে ।
৪)' মনের চোখ বাড়ানো -কমানো তো সম্পূর্ণ আমার হাতে '-কে এ কথা বলেছিলেন এবং কীভাবে তা সম্ভব হয়?
উত্তর:আনাতোল ফ্রাঁস উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছিলেন।
* জ্ঞান -বিজ্ঞানের নতুন নতুন বিষয়কে আয়ত্ত করার মধ্য দিয়েই এক -একটা করে মনের চোখ ফুটে উঠতে থাকে ।
৫)'চোখ বাড়াবার পন্থাটা কি ?'- এখানে 'চোখ ' বলতে কী বোঝানো হয়েছে এবং লেখকের মতে কীভাবে তার বৃদ্ধি সম্ভব ?
উত্তর :এখানে চোখ,বলতে মনের চোখ বা অন্তর্দৃষ্টির কথা বলা হয়েছে ।
* লেখকের মতে, চোখ বাড়ানোর পথ দুটি। বই পড়া এবং তার জন্য দরকার বই কেনার নেশা।
৬)'মনের চোখ ফোটানোর আরো একটা প্রয়োজন আছে।'- এ প্রসঙ্গে বারট্রান্ড রাসেলের যে মন্তব্যের কথা লেখক উল্লেখ করেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর :বারট্রান্ড রাসেল বলেছিলেন যে , সংসারের জ্বালা -যন্ত্রণা এড়ানোর প্রধান উপায় হচ্ছে মনের ভেতর একটা নিজস্ব ভুবন তৈরি করে নেওয়া এবং সংকটের সময়ে তার মধ্যে ডুবে যাওয়া। যে যত বেশি এরকম ভুবন সৃষ্টি করতে পারে জাগতিক যন্ত্রণা এড়ানোর ক্ষমতা তার ততই বেশি হয় ।
৭)'কাজেই শেষ পর্যন্ত বাকি থাকে বই।'-যে প্রসঙ্গে লেখক এ কথা বলেছেন নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর:সমস্ত দুঃখকষ্ট থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার জন্য প্রয়োজন মনের ভিতরে একটা পৃথিবী তৈরি করে নেওয়া।এই পৃথিবী তৈরি হতে পারে দুটো উপায়ে,দেশভ্রমণ করে এবং বই পড়ে। কিন্তু দেশভ্রমণ করার মতো সামর্থ্য ও স্বাস্থ্য যেহেতু সকলের থাকে না, তাই বই থাকে শেষ এবং একমাত্র উপায়। এই প্রসঙ্গেই লেখক মন্তব্যটি করেছেন।
৮)'কেতাবের কথা ভোলেননি।'-কে, কেন কেতাবের কথা ভোলেননি ?
উত্তর:ওমর খৈয়াম কেতাবের কথা ভোলেননি।
* খৈয়াম জানতেন যে,একদিন রুটি-মদ ফুরিয়ে যাবে,প্রিয়তমার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু বই অনন্ত-যৌবন। তাই স্বর্গের সরঞ্জামের তালিকা তৈরি করতে গিয়ে তিনি বই এর কথা ভোলেননি।
৯)'আর কলমের আশ্রয় তো পুস্তকে,-মন্তব্যটির প্রসঙ্গ আলোচনা করো।
উত্তর : সৈয়দ মুজতবা আলীর মতে,মুসলমানদের পরমগ্রন্থ কুরআনে হজরত মহম্মদ সর্বপ্রথম যে বাণী শুনতে পেয়েছিলেন তাতে আছে ' অল্লামা বিল কলমি ' অর্থাৎ আল্লাহ মানুষকে কলমের মাধ্যমে জ্ঞান দান করেছেন। আর বই ছাড়া কলম অর্থহীন। এই প্রসঙ্গেই লেখক মন্তব্যটি করেছেন ।
১০) 'বাইবেল শব্দের অর্থ,-লেখকের মতে বাইবেল শব্দের অর্থ কী ?
উত্তর:সৈয়দ মুজতবা আলী 'বাইবেল' শব্দের অর্থ বই। তাঁর মতে এ হল,বই par excellence, সর্বশ্রেষ্ঠ পুস্তক-THE BOOK।
১১)'গুরুভার আপন স্কন্ধে তুলে নিয়েছিলেন'-কার কথা বলা হয়েছে ?তিনি কোন্ দায়িত্ব নিয়েছিলেন?
উত্তর: আলোচ্য অংশে গণেশের কথা বলা হয়েছে।
* তিনি মহাভারত,লেখার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।
১২)'কিন্তু বাঙালী নাগর ধর্মের কাহিনী শোনে না।'-এখানে 'ধর্মের কাহিনী' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর:প্রতিটি ধর্মেই বই বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। কিন্তু বাঙালি পাঠক সেই বই কেনার ব্যাপারে প্রচণ্ডভাবেই উদাসীন। একেই লেখক 'ধর্মের কাহিনী' না-শোনা বলেছেন।
চ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(TYPE-2) প্রশ্নমান-৩
১) আনাতোল ফ্রাঁস দুঃখ করে বলেছেন'-আনাতোল ফাঁস কে ছিলেন ? তিনি কী বলেছিলেন ?
উত্তর: আনাতোল ফ্রাঁস ছিলেন বিংশ শতাব্দীর সূচনাপর্বে ফ্রান্সের একজন বিখ্যাত কবি, সাংবাদিক এবং ঔপন্যাসিক। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।
* মাছি তার গোটা মাথায় বসানো চোখ দিয়ে চারপাশটা সমানভাবে দেখতে পায়। এই পরিপ্রেক্ষিতেই ফ্রাঁস বলেছিলেন যে, তাঁর মাথার চারদিকে যদি চোখ বসানো থাকত তাহলে এই সুন্দরী পৃথিবীর সম্পূর্ণ সৌন্দর্যকে তিনি একসঙ্গে দেখতে পেতেন।
২) ,ভবযন্ত্রণা এড়াবার ক্ষমতা তার ততই বেশি হয়।'- কার সম্পর্কে , কেন এ কথা বলা হয়েছে ?
উত্তর: যে যত বেশি অন্তর্দৃষ্টি সৃষ্টি করতে পারে তার তত বেশি ভবযন্ত্রণা এড়ানোর ক্ষমতা তৈরি হয়।
বারট্রান্ড রাসেল মনে করতেন যে, সংসারের জ্বালা-যন্ত্রণা এড়ানোর প্রধান উপায় হচ্ছে মনের ভিতরে একটা নিজস্ব পৃথিবী তৈরি করে নেওয়া। কোনো সংকটের মধ্যে তার ব্যক্তিমন সেই নিজের পৃথিবীতে ডুব দেবে। এই কারণেই বলা হয়েছে যে যত বেশি অন্তর্দৃষ্টি সৃষ্টি করতে পারবে, জাগতিক যন্ত্রণা এড়িয়ে যাওয়ার ক্ষমতা তার মধ্যে তত প্রবল হবে।
৩) 'কিন্তু প্রশ্ন, এই অসংখ্য ভুবন সৃষ্টি করি কি প্রকারে ?'-'অসংখ্য ভুবন' কথাটি ব্যাখ্যা করো।কীভাবে ভুবন সৃষ্টি সম্ভব বলে কথক মনে করেছেন?
উত্তর: ‘অসংখ্য ভুবন' বলতে বোঝানো হয়েছে মনের মধ্যে তৈরি হওয়া ভাবনা চিন্তা আর সেই চিন্তার নিজস্ব জগৎ, যা সাহিত্য-দর্শন ইতিহাস, জ্ঞান- বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।
লেখক মনে করেন যে, এই অসংখ্য ভুবন সৃষ্টি হতে পারে বই পড়ে এবং দেশভ্রমণ করে। কিন্তু দেশ ভ্রমণ করার সামর্থ্য ও স্বাস্থ্য যেহেতু সকলের থাকে না তাই শেষপর্যন্ত বই-ই একমাত্র অবলম্বন।
৪)'তাই ভেবেই হয়ত ওমর খৈয়াম বলেছিলেন'- খৈয়াম কী ভেবেছিলেন ? তিনি কী বলেছিলেন ?
উত্তর: মানুষের মনে নিজস্ব গোপন ভুবন তৈরি করার ক্ষেত্রে বই হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম অবলম্বন।ওমর খৈয়াম এই ভাবনাই ভেবেছিলেন বলে লেখক মনে করেছেন।
* ওমর খৈয়াম বলেছিলেন যে,'এখানে ডালের নিচে একটি রুটি/মদের ফ্লাক্সে কবিতার বই আর তুমি/গান গাইছো আমার পাশে প্রান্তরে/আর প্রান্তর স্বর্গ হয়ে উঠেছে ।' খৈয়ামের ভাবনায় স্বর্গ হয়ে উঠতে প্রেমিকার মতোই গুরুত্বপূর্ণ হল বই।
৫) 'গল্পটা সকলেই জানেন,-যে গল্পের কথা লেখক বলেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর:একজন রাজা তার হেকিমের একটা বই কিছুতেই আদায় করতে না পেরে তাকে খুন করেন। বই, রাজার হাতে আসে।রাজাও চুপচাপ বইটা পড়তে থাকে। কিন্তু বইটির পৃষ্ঠাগুলো এমন জুড়ে গিয়েছিল যে রাজা বারবার আঙুল দিয়ে মুখ থেকে থুতু নিয়ে সেই জোড়া ছাড়িয়ে পাতা উলটাচ্ছিলেন। এদিকে হেকিম নিজের মৃত্যুর আশঙ্কা করেছিলেন বলেই প্রতিশোধের ব্যবস্থাও করে গিয়েছিলেন তিনি বই এর পাতার কোনার দিকে মাখিয়ে রেখেছিলেন মারাত্মক বিষ। সেই বিষ রাজার আঙুল হয়ে রাজার মুখের মধ্যে প্রবেশ করেছিল।বইটির শেষ পাতায় এই প্রতিহিংসা নেওয়ার পরিকল্পনার খবরটিও লিখে রেখে গিয়েছিলেন হেকিম। বই পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন।
৬)' মার্ক টুয়েনের লাইব্রেরির বিশেষত্ব কী ছিল ? আঁদ্রে জিদে কীভাবে তাঁর লেখক-বন্ধুদের শিক্ষা দিয়েছিলেন?
উত্তর: মার্ক টুয়েনের লাইব্রেরিতে মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত ছিল শুধু বই। এমনকি কার্পেটের ওপরেও অসংখ্য বই স্তূপীকৃত হয়ে এমনভাবে পড়ে থাকত যে, সেখানে পা ফেলাই ছিল মুশকিল।
* সোভিয়েতের বিরোধিতা করে বই লেখায় প্যারিসে স্তালিনপন্থীরা যখন আঁদ্রে জিদকে আক্রমণ করে তাঁর লেখক-বন্ধুরা তখন জিদের পাশে দাঁড়াননি। এর উচিত শিক্ষা দিতেই জিদ লাইব্রেরি নিলামে বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন। প্যারিসের লোকজন প্রাথমিক বিস্ময় কাটিয়ে নিলামস্থলের দিকে ছুটে যায়। কিন্তু গিয়ে তারা অবাক হয়ে দেখে যে, যে বন্ধুরা জিদের পাশে ছিলেন না তাদের স্বাক্ষর করা বইগুলোই তিনি বিক্রি করছেন।
ছ) রচনাধর্মী বা বর্ণনাধর্মী প্রশ্নোত্তর। প্রশ্নমান-৫
১) 'কাগজে বিজ্ঞাপন বেরল।'-কীসের বিজ্ঞাপন বেরিয়েছিল ?তার পরবর্তীতে কী ঘটনা ঘটেছিল ?
উত্তর:বিখ্যাত ফরাসি সাহিত্যিক আঁদ্রে জিদ তাঁর লাইব্রেরি বিক্রি করার বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন।
* সোভিয়েতের বিরোধিতা করে বই লেখায় প্যারিসে স্তালিনবাসীরা যখন আঁদ্রে জিদকে আক্রমণ করে, তখন তার বন্ধুরা জিদের পাশে দাঁড়াননি।এর উচিত শিক্ষা দিতেই জিদ লাইব্রেরি বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন। সেই সময়ে প্যারিসের লোকজন নিলামস্থলে দিকে ছুটে যায়। কিন্তু গিয়ে তারা অবাক হয়ে দেখে যে, বন্ধুরা জিদের পাশে ছিলেন না তাদের স্বাক্ষর করা বইগুলোই তিনি বিক্রি করছেন।
২) :সেখানে গিয়ে অবস্থা দেখে সকলেরই চক্ষুস্থির।'- সকলে কোথায় গিয়েছিলেন ? তাদের এই অবস্থার কারণ কী ছিল ?
উত্তর: সকলে লাইব্রেরী নিলামখানার দিকে গিয়েছিলেন।
* জিদ কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন, তাঁর লাইব্রেরিটা তিনি বিক্রি করে দেবেন ।এই খবর শুনে প্যারিসের লোকজন নিলামখানার দিকে ছুটে গিয়েছিল,কিন্তু তারা গিয়ে দেখে, স্তালিনপন্থীদের সঙ্গে লড়াইয়ের সময়ে যারা জিদের পাশে থাকেনি, তারা তাদের যে-সমস্ত বই আঁদ্রে জিদকে স্বাক্ষর-সহ উপহার দিয়েছিল, জিদ শুধু সেগুলোই নিলামে চড়িয়েছেন অর্থাৎ 'জঞ্জাল' ভেবে সেগুলিকে তিনি বিক্রি করে দিতে চেয়েছেন।
৩)'গল্পটা সকলেই জানেন'- যে গল্পের কথা লেখক বলেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: একজন রাজা তার হেকিমের একটা বই কিছুতেই আনতে না পেরে তাকে খুন করেন।বই রাজার হাতে আসে।রাজাও লুপ্ত হয়ে বইটা পড়তে থাকে। কিন্তু বইটির পৃষ্ঠাগুলো এমন জুড়ে গিয়েছিল যে রাজা বারবার আঙুল দিয়ে মুখ থেকে থুতু নিয়ে সেই জোড়া ছাড়িয়ে পাতা উলটাচ্ছিলেন। এদিকে হেকিম নিজের মৃত্যুর আশঙ্কা করেছিলেন বলেই প্রতিশোধের ব্যবস্থাও করে গিয়েছিলেন তিনি বইটির পাতায় পাতায় কোনার দিকে মাখিয়ে রেখেছিলেন বিষ। সেই বিষ রাজার আঙুল হয়ে রাজার মুখের মধ্যে প্রবেশ করেছিল। বইটির শেষ পাতায় এই প্রতিহিংসা নেওয়ার পরিকল্পনার খবরটিও লিখে রেখে গিয়েছিলেন হেকিম। বই পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন।
৪)'মার্ক টুয়েনের লাইব্রেরির বিশেষত্ব কী ছিল ? আঁছে জিদে কীভাবে তাঁর লেখক-বন্ধুদের শিক্ষা দিয়েছিলেন?
উত্তর : মার্ক টুয়েনের লাইব্রেরিতে মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত ছিল শুধু বই। এমনকি কার্পেটের ওপরেও অসংখ্য বই জড়ো হয়ে পড়ে থাকত,সেখানে পা ফেলার কোন উপায় ছিল না।সোভিয়েতে বিরোধিতা করে বই লেখায় প্যারিসে যখন আঁদ্রে জিদকে আক্রমণ করে, তখন তাঁর বন্ধুরা তখন জিদের পাশে দাঁড়াননি । এর উচিত শিক্ষা দিতেই জিদ লাইব্রেরি বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন।প্যারিসের লোকজন তখন নিলামস্থলের দিকে ছুটে যায়।কিন্তু তারা অবাক হয়ে দেখে, বন্ধুরা জিদের পাশে ছিলেন না, তাদের স্বাক্ষর করা বইগুলোই তিনি বিক্রি করছেন।
0 Comments