নুন কবিতার বিষয়বস্তু। নুন কবিতার প্রশ্ন উত্তর।


নুন কবিতার বিষয়বস্তু। নুন কবিতার প্রশ্ন উত্তর।



সূচিপত্র:

ক। কবি পরিচিতি 

খ) উৎস

গ। সারসংক্ষেপ

ঘ। নামকরন

ঙ। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (TYPE-1) প্রশ্নমান-২

চ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(TYPE-2) প্রশ্নমান-৩

ছ) রচনাধর্মী বা বর্ণনাধর্মী প্রশ্নোত্তর। প্রশ্নমান-৫


e-bookap পেজটি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সুখবর-1st- ইউনিট,2nd ইউনিট,3nd ইউনিট,টেস্ট ফাইনাল পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্যগুরুত্বপূর্ণভাবে তোমাদের সাহায্য করবে।তাই এই সাফল্য আমাদের কাছে বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।


ক) কবি পরিচিতি: 

আধুনিক বাংলা কবিতা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে, যাঁর নাম পাঠকের মনে আসে, তিনি হলেন কবি জয় গোস্বামী।

জন্ম এবং শৈশব:

কলকাতায় তাঁর জন্ম হয় ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে। শিশু বয়সে তিনি সপরিবারে রানাঘাটে বসবাস করতে থাকেন। মাত্র আট বছর বয়সে কবির বাবা মারা যান। তখন তাঁর মা ছিলেন শিক্ষিকা। রানাঘাটেই কবির প্রাথমিক শিক্ষা শেষ হয়।

সাহিত্যকীর্তি:

জয় গোস্বামীর প্রথম কবিতা লেখা তেরো বছর বয়সে সিলিং পাখা নিয়ে। তারপর বেশ কিছুদিন পর অর্থাৎ উনিশ বছর বয়সে প্রথম কবিতা ছাপা হয় একইসঙ্গে তিনটি ম্যাগাজিনে। ১৯৭৬ সাল থেকে দেশ পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল-প্রত্নজীব,আলেয়াহ্রদ,উন্মাদের পাঠক্রম, ভুতুমভগবান,ঘুমিয়েছো,আজ যদি আমাকে জিগ্যেস করো,গোল্লা,পাগলী, তোমার সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ‍ ভর্তি খাতা, ওঃ স্বপ্ন প্রভৃতি।কবি আনন্দ পুরস্কার,পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি, সাহিত্য আকাদেমি, বঙ্গবিভূষণ পুরস্কারেও ভূষিত হন।


লেখনশৈলী:

কবি জয় গোস্বামী বাস্তব জীবন থেকেই সংগ্রহ করেছেন তাঁর কবিতার রসদ।চারিপাশে ঘটে চলেছে বিভিন্ন ঘটনা আর সেই বাস্তব ঘটনাগুলি হল কবির কবিতার বিষয় হয়ে ওঠে।তাই তিনি উচ্চারণে সঙ্গে নরম কণ্ঠস্বর মিশিয়ে নিজস্ব এক লেখনশৈলী তৈরি করেছেন।


খ)উৎস:

‘নুন' কবিতাটি জয় গোস্বামীর পঞ্চম কাব্যগ্রন্থ 'ভূতমভগবান, থেকে নেওয়া হয়েছে ।


গ)সারসংক্ষেপ:

‘নুন' কবিতায় এক নিম্নবিত্ত পরিবারের জীবন যাপনের কাহিনি। তারা সাধারণ ভাতকাপড়ের চিন্তায় আর অসুখবিসুখ ও ধারদেনাতেই জীবন কেটে যায়। তবু তার মধ্যেই তারা আনন্দ খুঁজতে চাই। তারা জানে,দুঃখ করে কোনো লাভ নেই। তাই সংসার জীবনের কথা ভুলে থাকতে রাত হলেই তারা নেশা করে।পারিবারিক সম্পর্ক  পালটে দিয়ে বাবা-ছেলে দুই ভাইয়ের মতো একইসঙ্গে গাঁজা খাই। কষ্টের জীবনযাপন তাদের পক্ষে রোজ বাজার করা সম্ভব হয় না। আবার তাদের এই অভাবের জীবনেই দেখা দেয় বেহিসাব। তাই হাতে দুটো পয়সা এলে খরচ হয়ে ওঠে মাত্রাছাড়া। তাদের মধ্যেও অনেক গোপন স্বপ্ন থাকে। তাই তারা বাড়িতে ফেরার সময় গোলাপচারাও কিনে আনা হয় কখনো কখনো। তারা তাদের বাসস্থানের কোন জায়গায় গোলাপ চারাটা বসানো হবে বা তাতে আদৌ ফুল হবে কি না এসব তারা ভেবে দেখে না। বরং আবার নেশায় ডুবে যাওয়াটাই অনেক কাঙ্ক্ষিত মনে হয়। এভাবেই অল্পে খুশি থেকে দিনযাপনের মধ্যেই বেঁচে থাকার সার্থকতা খুঁজে চলে তারা। কিন্তু কখনো কখনো এভাবেও দিন চলা অসম্ভব হয়ে ওঠে। মাঝে মাঝে গভীর রাতে বাড়ি ফিরে যখন ঠান্ডা ভাতে নুনটুকুও জোটে না,তখনই কথকের মাথায় রাগ চড়ে যায় আর সেই রাগের ঝগড়া হয় বাবা-ছেলে দুজনেই। আর সেই সময়েই সোচ্চার দাবি শোনা যায় শুকনো ভাতের সঙ্গে শুধু সামান্য লবণের প্রত্যাশা।


ঘ)নামকরণ:

'নুন' কবিতায় কবি এক নিম্নবিত্ত পরিবারের জীবন যাপনের করুন কাহিনির ছবি এঁকেছেন।তারা সাধারণ ভাতকাপড়ে অসুখে, এবং ধারদেনাতে দিন কাটানো এই মানুষ গুলি অল্পতে খুশি হয়। কিন্তু সেই খুশির মধ্যে মিশে থাকে তাদের মনের বহু রকমের স্বপ্ন। কিন্তু তারা জানে দুঃখ করে কোনো লাভ নেই, তাই তারা খুশির খোঁজ করে।এই দুঃখ কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে তারা রাত্রিতে মনের আনন্দে গাঁজা খায়।  আবার কোনোদিন তারা বাড়ি ফেরার পথে শখ করে গোলাপচারাও কিনে আনে কিন্তু বাড়িতে পোঁতার জায়গা নেই, ফুল হবে কি না তার ঠিক নেই, কিন্তু এত ভাবতে রাজি নয় তারা,সামান্য সুখের খোঁজে ঘুরে বেড়ায় এই সব মানুষ গুলি। তারা রাতদুপুরে বাড়ি ফিরে যখন ঠান্ডা ভাতে নুনটুকু পর্যন্ত পাওয়া যায় না, তখন প্রবল চিৎকারের মাধ্যমে তাদের রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। তারা তাদের রাগের মধ্যে দিয়ে দাবি জানায়,-'আমরা তো সামান্য লোক/আমাদের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক।' কবি যেন এখানে ভদ্রসমাজকে মনে করেই বার্তাটি দিতে চাইছেন।এই দাবি তোলা হচ্ছে  ভদ্র শাসক শ্রেণির কাছেই।তাই  অধিকারের দাবি জানানোর সেই সোচ্চার ঘোষণার কেন্দ্রে রয়েছে 'নুন'; যা গরিব মানুষের জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম একটি উপকরণ। তাই কবিতার নামকরণ যথার্থ ও সার্থক হয়েছে।


ঙ। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (TYPE-1) প্রশ্নমান-২


১)'রাত্তিরে দু-ভাই মিলে টান দিই গঞ্জিকাতে'-এখানে দু-ভাই কারা?এই আচরণ কী ইঙ্গিত করে?

উত্তর: কবি জয় গোস্বামী রচিত 'নুন, কবিতায় দু-ভাই বলতে কবি নিম্ন পরিবারের বাবা-ছেলেকে বুঝিয়েছেন।

আলোচ্য অংশে তারা তাদের পারিবারিক দুঃখ কষ্ট  ভুলে একসঙ্গে বাবা-ছেলে গাঁজা খেয়ে মনের মধ্যে একটু সুখ খোঁজার চেষ্টা করে। তারা নেশায় ডুবে গিয়ে কঠোর বাস্তবকে কিছুক্ষণের জন্যও ভুলে থাকে।


২)'সব দিন হয় না বাজার'- উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য কী? 

উত্তর:কবি জয় গোস্বামীর রচিত 'নুন' কবিতায় নিম্নবিত্ত হতদরিদ্র মানুষরা জানে, দুঃখ করে কোন লাভ নেই, তারা দুঃখের মধ্যে নেশা করে সুখ লাভ করে। তাদের ক্ষমতা নেই যে প্রতিদিন বাজার করে নিয়ে এসে জীবন যাপন কাটাবে। আবার অতিরিক্ত আয় হলে বাজার হয়ে যায় মাত্র ছাড়া। তাদের বেহিসাবি জীবন যাপনের প্রবণতায় এখানে স্পষ্ট হয়।


 ৩)'বাড়িতে ফেরার পথে কিনে আনিগো লাপচারা'-এই গোলাপচারা কিনে আনার তাৎপর্য কী?

উত্তর: কবি জয় গোস্বামী রচিত 'নুন' কবিতায় একজন নিম্নবিত্ত মানুষের যেদিন উপার্জন

সম্ভব হয়, সেদিন তাকে দেখা যায় জীবনকে উদযাপন করতে। প্রতিদিন যার পক্ষে বাজার করা সম্ভব হয় না তাকেই দেখা যায় মাত্রাছাড়া বাজার করতে এবং বাড়িতে ফেরার পথে গোলাপচারা কিনে আনতে। অনেক অভাবের মধ্যেও শখকে সে মনের মধ্যে লালন করে রেখেছিল।তা গোলাপচারা কিনে আনায়।


৪)'কিন্তু পুঁতর কোথায়?'কীসের কথা বলা হয়েছে? কথকের এই মন্তব্যের কারণ আলোচনা করো।


উত্তর: কবি জয় গোস্বামীর রচিত 'নুন' কবিতায় গোলাপচারার কথা বলা হয়েছে।

নিম্নবিত্ত মানুষজন মনের মধ্যে তার শখকে বাঁচিয়ে রাখে। সেকারণেই সুযোগ পেলে সে গোলাপচারা কিনে আনে। কিন্তু কোনোরকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই জোটে যার, তার কাছে গোলাপচারা পোঁতার জন্য জায়গা পাওয়া অসম্ভব। উল্লিখিত মন্তব্যে সেই অসহায়তারই প্রকাশ ঘটেছে।


৫)'সে অনেক পরের কথা।'-কোন্ কথা? কবির এই মন্তব্যের কারণ কী?

উত্তর: কবি জয় গোস্বামী রচিত 'নুন' কবিতায় নিম্নবিত্ত পরিবার বহু কষ্টে পোঁতা গোলাপচারায় ফুল হবে কিনা, সেই কথা প্রসঙ্গে মন্তব্যটি করা হয়েছে।

আলোচ্য অংশে তাদের মনে জমে থাকা স্বপ্ন  পুরণের জন্য বহু কষ্টে গোলাপচারা যদিও-বা পোঁতা হয়, কিন্তু প্রতিদিনে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে ব্যস্ত মানুষের পক্ষে তাতে ফুল ফুটবে কিনা সেই নিয়ে তাদের ধৈর্য বা সুযোগ কোনোটাই থাকে না। এই কারণেই মন্তব্যটি করা হয়েছে।


৬)'মাঝে মাঝে চলেও না দিন,-এই না চলা কীসের দিকে ইঙ্গিত করে?

উত্তর: কবি জয় গোস্বামী রচিত 'নুন' কবিতায় হতদরিদ্র নিম্নবিত্ত মানুষ অভাব আর অসুখ-বিসুখকে সঙ্গে নিয়ে দিনযাপন করে। ‘অল্পে খুশি' থেকে 'হেসে খেলে কষ্ট করে তাদের দিনযাপন হয়। কিন্তু সেখানেও যে নিশ্চয়তা থাকে না, তারই স্বীকারোক্তি পাওয়া যায় উল্লিখিত অংশে। দুপুররাতে বাড়ি ফেরা অর্থাৎ কঠোর পরিশ্রমও সেই দিনযাপনকে নিশ্চিত করতে পারে না। 


৭)'খেতে বসে রাগ চড়ে যায়,-বক্তা কখন খেতে বসেন? রাগ চড়ে যাওয়ার কারণ কী?

উত্তর:কবি জয় গোস্বামী রচিত 'নুন' কবিতায়, দুপুর-রাতে বাড়ি ফিরে বক্তা খেতে বসেন।

আলোচ্য অংশে বক্তা যখন কাজকর্ম সেরে রাত্রে বাড়ি ফিরে দেখে ঠান্ডা ভাতের নুন টুকুও পর্যন্ত নেই। তখন বক্তার মাথায় রাগ চড়ে যায়।


৮)'আমি তার মাথায় চড়ি'-কথক কার মাথায় চড়েন? মাথায় চড়ার কারণ কী?

ত্তর: কবি জয় গোস্বামীর রচিত 'নুন' কবিতায়, কথক রাগের মাথায় চড়ার কথা বলেছেন।


আলোচ্য অংশে তারা কাজকর্ম সেরে যখন রাত্রে বাড়ি ফিরে দেখে ঠান্ডা ভাতে সামান্য নুন টুকুও নেই।  তখনই রাগ তাঁর মাথায় চড়ে আর তার মাথাও রাগে গরম হয়ে যায়।


চ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(TYPE-2) প্রশ্নমান-৩


১)'আমরা তো অল্পে খুশি,-এই অল্পে খুশি হওয়ার তাৎপর্য কী?

উত্তর:জয় গোস্বামী রচিত 'নুন, কবিতায় কথক নিম্নবিত্ত জীবন যাপন করে। সাধারণ ভাত কাপড়ের কোনরকমে অতিবাহিত করা তার এই জীবনে অসুখ ও ধারদেনা নিত্যসঙ্গী। এর মধ্যেই হেসে খেলে কষ্ট করে দিন কাটে তার।তার দুঃখ থেকে মুক্তির কোনো পথ নেই, তাই বাধ্য হয়ে নিজেদের ভাগ্যকে মেনে নেয় এই অভাবী মানুষরা। এই বাধা ধরা আশাহীন জীবন কাটানোর প্রসঙ্গে আলোচ্য মন্তব্যটি করা হয়েছে।


২)'কী হবে দুঃখ করে?'-কবির এই মন্তব্যের কারণ কী?

উত্তর: ‘নুন' কবিতায় কবি জয় গোস্বামী বলেছেন সাধারণ ভাতকাপড়ে আর অসুখে ধারদেনাতে যে জীবন নিম্নবিত্ত মানুষ প্রজন্মের পর প্রজন্ম অতিবাহিত করে, সেখানে অভাব আর বঞ্চনাই একমাত্র অবলম্বন । কিন্তু তারা জানে, তাদের জীবনে যতই অভাব থাকুক না কেন, কিছুতেই তাদের সেই অভাব পূরণ হবে না।তাই দারিদ্র্যপীড়িত জীবন- যন্ত্রণাকে মানিয়ে নিয়ে দিনযাপনের চেষ্টা করে।


৩)'চলে যায় দিন আমাদের অসুখে ধারদেনাতে'-এই চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে জীবনের কোন বিশেষ তাৎপর্যের দিকে কবি ইঙ্গিত করেছেন?

উত্তর: জয় গোস্বামী রচিত 'নুন' কবিতায় এক নিম্নবিত্ত পরিবারের প্রতিদিনকার কষ্টকর জীবনযাত্রার ছবি এঁকেছেনযেখানে সাধারণ ভাতকাপড়ের কোনরকমে সেই পরিবারের দিন কেটে যায়। তাদের জীবনে  অতিরিক্ত চাহিদার কোনো সুযোগই নেই। দুঃখেরও যেন সেখানে প্রবেশ নিষেধ,'কী হবে দুঃখ করে?'ধারদেনা,অসুখ এসবের মধ্য দিয়েই রচিত হয় এই নিম্নবিত্ত মানুষদের বেঁচে থাকার উপায়।এখানে  দিন চলে যায়' কথাটির মধ্যে ভালো থাকার কোনো ইঙ্গিত লক্ষ করা যায় না,পরিবর্তে কোনোরকমে জীবন কাটানোর কথা ব্যক্ত করা হয়। নিম্নবিত্তের জীবনের অর্থ যে বেঁচে থাকা নয়,টিকে থাকা’–সেই বাস্তব সত্যই যেন প্রকাশিত হয়েছে।


৪)'রাত্তিরে দু-ভাই মিলে টান দিই গঞ্জিকাতে-' উদ্ধৃতিটির মধ্য দিয়ে জীবনের কোন সত্যের প্রকাশ ঘটেছে?

উত্তর: ‘নুন’কবিতায় কবি জয় গোস্বামী একটি নিম্নবিত্ত পরিবারের জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার কাহিনি বর্ণনা করেছেন। এই পরিবারের লোকেরা সাধারণ ভাতকাপড়েই নিজেদেরকে সন্তুষ্ট রাখতে শিখেছে। অত্যন্ত অল্পেই খুশি হওয়া ছাড়া তাদের অন্য কোনো উপায় নেই। ধারদেনা এবং অসুখের মধ্য দিয়ে কোনোরকমে দিন কেটে যায় তাদের। কিন্তু, কখনো-কখনো তাদের এই দিনযাপনের যন্ত্রণা ভয়ংকর হয়ে ওঠে। তখন ওই ভয়ংকর এর কথা বলতে নেশায় আবদ্ধ থাকে অর্থাৎ কিছুক্ষণের জন্যও কঠোর বাস্তবকে ভুলে থাকে।


ছ) রচনাধর্মী বা বর্ণনাধর্মী প্রশ্নোত্তর। প্রশ্নমান-৫


১)'বাড়িতে ফেরার পথে কিনে আনি গোলাপচারা।'-অংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: কবি জয় গোস্বামীর রচিত'নুন, কবিতায় নিম্নবিত্তের দিন-আনা দিন-খাওয়া জীবনকে অবলম্বন করে নুন কবিতাটি রচিত হয়েছে। এ এমন এক জীবন যেখানে প্রতিদিন বাজার করা সম্ভব হয় না, যেখানে বাস্তব জগতকে ভুলে থাকার জন্য সমস্ত সামাজিক সম্পর্ককে ভুলে বাবা ছেলেকে একসঙ্গে নেশার আশ্রয় নিতে হয়। অভাবের জন্য তাদের সব দিন বাজার করা সম্ভব না হলেও, যেদিন তা সম্ভব হয় সেদিন বাজার হয় মাত্রাছাড়া, গোলাপ ছাড়া কিনে বাড়ি ফিরে তারা। কিন্তু সেই গোলাপ ছাড়া কোথায় বসাবে, সেই জায়গায় খুঁজে উঠতে পারেনা এই গরিব মানুষেরা। যদি বা একটু জায়গা পাওয়া যায় তাতে আবার গোলাপের মতো সৌখিন ছাড়া বাঁচবে কিনা বা তাতে ফুল ধরবে কিনা সে বিষয়েও সংশয় থেকে যায়। গোলাপ ফুল ফোটানোর মত দীর্ঘ পরিকল্পনা বা ধৈর্য কোনোটাই গরিব মানুষের থাকে না। আসলে গরিব মানুষের কোন শখ বা বিলাসিতা থাকতে নেই, গোলাপ গাছে ফুল ফোটানোর ক্ষেত্রে সংশয়ের মতো গরিব মানুষের জীবনটাও পুরোপুরি সংশয় আর অনিশ্চয়তায় ভরা। বলাবাহুল্য, এই গোলাপচারা আসলে নিম্নবিত্ত মানুষের দমিয়ে রাখা সুখ-স্বপ্নের ইঙ্গিত বহন করে।


২)'রাত্তিরে দু-ভাই মিলে টান দিই গঞ্জিকাতে| সব দিন হয় না বাজার, হলে হয় মাত্রাছাড়া'-উদ্ধৃতিটির মধ্য দিয়ে জীবনের কোন সত্যের প্রকাশ ঘটেছে?

উত্তর: কবি জয় গোস্বামীর রচিত 'নুন' কবিতায় একটি নিম্নবিত্ত পরিবার কোনোরকমে জীবনযুদ্ধে টিকে থাকার কাহিনি বর্ণনা করেছেন।এই পরিবারের লোকেরা সাধারণ ভাতকাপড়েই নিজেদেরকে সন্তুষ্ট রাখতে শিখেছে। প্রতিদিন জীবন যুদ্ধে লড়াই করতে থাকা মানুষগুলি অল্পেই খুশি বা সন্তুষ্ট হওয়া ছাড়া তাদের অন্য কোনো উপায় নেই। ধারদেনা এবং অসুখের মধ্য দিয়ে কোনোরকমে দিন কেটে যায় তাদের।কিন্তু,কখনো-কখনো তাদের এই দিনযাপনের যন্ত্রণা ভয়ংকর হয়ে ওঠে।তখন বাবা-মায়ের সম্পর্ক ভুলে একসঙ্গে গাঁজা খায় তারা। উদ্দেশ্য নেশায় ডুবে গিয়ে কঠোর বাস্তবতাকে অন্তত কিছুক্ষণের জন্য হলেও ভুলে থাকা ।

নিম্নবিত্ত জীবনে প্রতিদিন বাজার হয় না। এরই মধ্যে সুযোগ পেলে এবং তাদের ইচ্ছে হয়ে যায় লাগামছাড়া। ফলে তাদের হতদরিদ্র জীবন তখন কোনো হিসেবনিকেশের ধার ধারে না। তাই ভবিষ্যৎ বিবেচনা ভুলে, বাজার হয়ে যায় ‘মাত্রাছাড়া’। নিম্নবিত্ত মানুষদের বেহিসেবি জীবনদর্শনের প্রতি কবি ইঙ্গিত করেছেন।


আরো পড়ুন:

একাদশ শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর click here 

তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর click here 


লালন শাহ ফকিরের গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click here 


ভাব সম্মিলন কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click here 

ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click here 


আগুন নাটকের প্রশ্ন উত্তর click here 

আজব শহর কলকেতা প্রবন্ধ প্রশ্ন উত্তর Click here

পঁচিশে বৈশাখ প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click here 


বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান আলোচনা করো। Click here 

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান আলোচনা করো। Click here 

বাংলা কাব্য সাহিত্য মাইকেল মধুসূদন দত্তের অবদান 

Click here 

চরিত্র গঠনে খেলাধুলার ভূমিকা Click here 


বাংলা কাব্য সাহিত্যে বিহারীলাল চক্রবর্তী অবদান click here 

বাংলা নাট্য সাহিত্যে গিরিশচন্দ্র ঘোষের অবদান Click here 

বাংলা নাট্য সাহিত্যে বিজন ভট্টাচার্যের অবদান Click here 

বাংলা গদ্যে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান Click here 


আড্ডা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click here 


মানস- মানচিত্র অবলম্বনে ইন্টারনেট ও আধুনিক জীবন সম্পর্কে প্রবন্ধ রচনা Click here 

বিশ্ব উষ্ণায়ন প্রবন্ধ রচনা Click here 


লৌকিক সাহিত্যের বিভিন্ন দিকে- লোককথা Click here 





Post a Comment

0 Comments