Part-2
সূচিপত্র:
চ। অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(SAQ)২০টি শব্দের মধ্যে প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
ছ। ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর -৩
জ। বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী বা বড়ো প্রশ্নোত্তর১৫০টি শব্দের মধ্যে উত্তর দাও।
চ। অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(SAQ)২০টি শব্দের মধ্যে প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
১)কোথা থেকে কী ভাবতে ভাবতে কথক বাড়ি ফিরেছিলেন?
উত্তর: সারকুলার রোডের সমাধিক্ষেত্র থেকে বের হয়ে চন্দ্রনাথের কথা ভাবতে ভাবতে কথক
বাড়িফিরেছিলেন।
২) কথকের জীবনে চন্দ্রনাথের স্মৃতি কীরূপ ছিল?
উত্তর: কথকের জীবনে চন্দ্রনাথ গভীর রাত্রির আকাশে কালপুরুষ নক্ষত্রের মতো প্রদীপ্ত
হয়ে ছিল।
৩)চন্দ্রনাথের সঙ্গে কালপুরুষ নক্ষত্রের কী সাদৃশ্য লেখক খুঁজে পেয়েছিলেন?
উত্তর:চন্দ্রনাথের আকৃতির সঙ্গে লেখক কালপুরুষ নক্ষত্রের খড়ধারী বিশালকায় আকৃতির
সাদৃশ্য খুঁজেপেয়েছিলেন।
৪)চন্দ্রনাথের কপালে ত্রিশূল চিহ্ন কখন দেখা যায়?
উত্তর: চন্দ্রনাথ সামান্য উত্তেজিত হলেই রক্তের চাপ বেড়ে গিয়ে কপালের শিরা ফুলে উঠে
ত্রিশূল চিহ্ন দেখা যায়।
৫) হেডমাস্টারমহাশয় কোথায় বসে থাকতেন?
উত্তর: স্কুলের বোর্ডিং-এর ফটকের সামনে চিয়ারে হেডমাস্টারমহাশয় বসে থাকতেন।
৬) চন্দ্রনাথ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিল কেন?
উত্তর: চন্দ্রনাথ স্কুলের পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়ে দ্বিতীয় পুরস্কারগ্রহণ করছে না বলে তা
প্রত্যাখ্যান করেছিল।
৭)দ্বিতীয় হওয়ার জন্য চন্দ্রনাথ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিল কেন?
উত্তর: চন্দ্রনাথ দ্বিতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিল কারণ, এর আগে স্কুলের পরীক্ষায় সে কখনও দ্বিতীয়
হয়নি।
৮) চন্দ্রনাথের দাদা কেমন ধরনের মানুষ ছিলেন?
উত্তর: চন্দ্রনাথের দাদা নিশানাথবাবু ছিলেন শান্তপ্রকৃতির মানুষ।
৯)চন্দ্রনাথ পরীক্ষার সময় হীরুকে কীভাবে সাহায্য করেছিল?
উত্তরা: চন্দ্রনাথ পরীক্ষার সময় হীরুকে তিনটে অঙ্ক তার খাতা থেকে টুকতে দিয়ে সাহায্য
করেছিল।
১০) চন্দ্রনাথের দাদা চন্দ্রনাথকে কী নির্দেশ দিয়েছিলেন?
উত্তর: চন্দ্রনাথের দাদা তাকে হেড মাস্টার মশাইয়ের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে পুরস্কার
প্রত্যাখ্যানের চিঠিফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
১১)কথক মাস্টারমহাশয়কে চন্দ্রনাথের কাছে যেতে নিষেধ করেছিলেন কেন?
উত্তর: চন্দ্রনাথ যদি মাস্টারমশাইয়ের কথা না শোনে, তাই কথক মাস্টারমশাইকে তার কাছে
যেতেনিষেধ করেছিলেন।
১২) চন্দ্রনাথ তার চিঠিতে হীরুকে কী সম্বোধন করেছিল?
উত্তর: চন্দ্রনাথ তার চিঠিতে হীরুকে প্রথমে প্রিয়বরেষু লিখলেও পরে সেটি কেটৈ
প্রীতিভাজনেষু লিখেছিল।
১৩) হীরু চন্দ্রনাথের কাছে কী প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল?
উত্তর: হীরু চন্দ্রনাথের কাছে তার কাকা তথা স্কুলের সম্পাদক চন্দ্রনাথকে বিশেষ পুরস্কার
দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল।
১৪) 'চন্দ্রনাথ' গল্পে কথক নরুর প্রতি মাস্টারমশাইয়ের পরামর্শ কী ছিল?
উত্তর: মাস্টারমশাই কথক নরুকে সাহিত্যচর্চা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন যে,
পড়ার সময়ে সাহিত্যচর্চা কম করতে।
১৫) নরুর লেখা কাগজে বেরিয়েছে শুনে মাস্টারমশাই কী বলেছিলেন?
উত্তর: নরুর লেখা কাগজে বেরিয়েছে শুনে মাস্টারমশাই তাকে লেখাটা দেখাতে বলেছিলেন
এবং তিনি সেটা পড়বেন বলেও জানিয়ে ছিলেন।
ছ। ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর -3
১)“এও হয়তো সেই বিচিত্র সমাবেশ।”- মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত ‘চন্দ্রনাথ' গল্পাংশ থেকে মন্তব্যটি নেওয়া হয়েছে।
চন্দ্রনাথ, হীরু এবং গল্পকথক নরেশ ছিল স্কুলের সহপাঠী এবং একই গ্রামের বাসিন্দা। কিন্তু
স্কুলজীবনেতাদের সম্পর্কের রসায়ন ছিল বেশ জটিল। দরিদ্র ঘরের মেধাবী সন্তান
চন্দ্রনাথের সঙ্গে ধনীর সন্তানহীরুর সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং কথকের মধ্যস্থতার কাহিনি
স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে কথকের মনেহয় যে, একই গ্রামে তাদের তিনজনের উপস্থিতি যেন
আগ্নেয়গিরির গর্ভের ভিতরে প্রলয়ংকর দাহ্যবস্তুর বিচিত্র সমাবেশের মতোই।
২)“দুর্দান্ত চন্দ্রনাথের আঘাতে সমস্ত স্কুলটা চঞ্চল, বিক্ষুব্ধ হইয়া উঠিয়াছে।”- মন্তব্যটি
বিশ্লেষণ করো।
উত্তর:তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত 'চন্দ্রনাথ' গল্পাংশ থেকে মন্তব্যটি নেওয়া হয়েছে।
চন্দ্রনাথ স্কুলের পরীক্ষায় জীবনে প্রথমবার দ্বিতীয় হওয়ার ঘটনাকে মেনে নিতে পারেনি।
পরীক্ষায় প্রথমস্থানাধিকারী হীরুর সাফল্যের পেছনে সে অসাধু চক্রান্তের গন্ধ পায়।
পাশাপাশি অঙ্ক পরীক্ষায় তারইসাহায্য নেওয়া হীরু কীভাবে প্রথম হল সেই প্রশ্নও তোলে
সে। এই কারণে সে দ্বিতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যানকরে স্কুলে চিঠি দেয়, যা নিয়ে স্কুলে শোরগোল
পড়ে যায়।
৩) “এই দাম্ভিকটা যেন ফেল হয়- এ কামনাও বোধ হয় করিয়াছিলাম।”-বক্তার এই মন্তব্যের
কারণ গল্প অবলম্বনে আলোচনা করো।
উত্তর:চন্দ্ৰনাথ বাড়িতে বসে নিজের মতো করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার সম্ভাব্য ফলাফল
তৈরি করে। চন্দ্রনাথের ব্যাখ্যা অনুযায়ী সে যদি পরীক্ষায় সাড়ে পাঁচশো বা তার বেশি পায়
তবে স্কুলে দুজন ফেল করবে। আর সে নিজে যদি পাঁচশো পঁচিশের নীচে পায়, তাহলে
দশজন ফেল করবে এবং সেক্ষেত্রেকথক নরেশ থার্ড ডিভিশনে পাস করবে। একথা শুনে
কথক অত্যন্ত রেগে যান এবং দাম্ভিক চন্দ্রনাথযেন ফেল করে এই কামনা করেন।
৪)“দিস ইজ ম্যাথম্যাটিকস।”-গল্পাংশটি অবলম্বনে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
উত্তর:তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত 'চন্দ্রনাথ' গল্পে চন্দ্রনাথ তার নিজের পাওয়া সম্ভাব্য
নম্বরেরঅনুপাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় অন্য সকলের নম্বর হিসাব করেছিল। তার তৈরি
করা পরীক্ষারফলাফল নরেশের পছন্দ হয়নি। কারণ সেখানে চন্দ্রনাথ তার থার্ড ডিভিশনে
পাস করার ভবিষ্যদ্বাণীকরেছিল। এ কথায় কথক ক্ষুব্ধ হলে চন্দ্রনাথ বলে যে অনুপাতের
অঙ্ক নিয়মে যার মূল্য যতবারইকষে দেখা যাবে তা একই হবে। এটি ম্যাথম্যাটিকস বা অঙ্ক
বলে চন্দ্রনাথ মন্তব্য করে।
৫) “এমন বুকে দাগ কাটা দৃষ্টি আমার জীবনে আমি খুব কমই দেখিয়াছি।”-কী দেখে বক্তা
এই মন্তব্যকরেছেন আলোচনা করো।
উত্তর:স্কুলের পরীক্ষায় বরাবর প্রথম হওয়া চন্দ্রনাথ দ্বিতীয় পুরস্কার গ্রহণে অসম্মতি জানিয়ে
স্কুলে চিঠিদেয়। তার দাদা নিশানাথবাবু ভাইকে ক্ষমা প্রার্থনা করে তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার
নির্দেশ দেন। কিন্তুনিজের সিদ্ধান্তে অটল চন্দ্রনাথ সেই নির্দেশ অমান্য করে। এর জন্য
দাদার সঙ্গে সম্পর্কও ছিন্ন করে।এই ব্যবহারে নির্বিরোধী শান্তপ্রকৃতির মানুষ নিশানাথবাবু
নীরবে মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন। বেদনাএবং ক্রোধ মেশানো তাঁর সেই দৃষ্টির কথাই
বলেছেন গল্পকথক।
৬)“আমারই অন্যায় হলো।”–বক্তা যে পরিস্থিতিতে এই মন্তব্য করেছেন তা আলোচনা করো।
উত্তর: চন্দ্রনাথ স্কুলের পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয় এবং দ্বিতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করায়
হেডমাস্টারমশাইগল্পকথক নরুকে তার বাড়িতে পাঠান। ক্ষমা চেয়ে চিঠি প্রত্যাহারের জন্য
নিশানাথের দেওয়া নির্দেশঅমান্য করে চন্দ্রনাথ। দুই ভাইয়ের মধ্যে সম্পর্কে ছেদ পড়ে।
মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন দাদানিশানাথ। এই খবর কথকের মুখে শুনে প্রধান
শিক্ষক বলেন যে চন্দ্রনাথের দাদাকে এই বিষয়টিজানানোই তাঁর ভুল হয়েছে।
৭) “এই প্রস্তাবই আমার পক্ষে অপমানজনক।”—মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:চন্দ্রনাথ স্কুলের পরীক্ষায় জীবনে প্রথমবার দ্বিতীয় হওয়ার পরে বিদ্যালয়ের সম্পাদক
এবং প্রথমস্থানাধিকারী হীরুর কাকা হীরুর মাধ্যমে চন্দ্রনাথকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়ার কথা
বলে পাঠান। কিন্তুচন্দ্রনাথ তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলে পাঠায় যে তার পক্ষে তা গ্রহণ করা
সম্ভব নয়। প্রকৃতপক্ষে, হীরুকে প্রথম স্থানাধিকারী বলে চন্দ্রনাথ মনে করে না, তারই কাকা
তাকে ‘সান্ত্বনা পুরস্কার'দিচ্ছেন-এই অপমান সহ্য করা চন্দ্রনাথের পক্ষে সম্ভব ছিল না।
৮) চন্দ্রনাথের অনুমান অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়া গিয়াছে।- কোন বিষয়ে চন্দ্রনাথ অনুমান
করেছিল? তার অনুমানটি কী?
উত্তর:তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত 'চন্দ্রনাথ' গল্পের গল্পকথক নরেশ প্রশ্নের এই উক্তিটির
বক্তা।
** কথক যখন দারিদ্র্য-জীর্ণ স্বপ্নালোকিত চন্দ্রনাথের ঘরে যায় তখন চন্দ্রনাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের
পরীক্ষার সম্ভাব্য ফলাফল তৈরি করছিল। সেই ফল হিসেবে চন্দ্রনাথ নরেশকে জানায় যে,
সে যদিসাড়ে পাঁচশো কী তার বেশি পায়, তবে স্কুলে দুজন ছাত্র ফেল করবে, অন্যরা পাস
করবে। আর সে নিজে যদি পাঁচশো পঁচিশের কম পায়, তবে স্কুলের দশজন ছাত্র ফেল
করবে এবং তখন কথক তৃতীয় বিভাগে পাস করবে। ফল প্রকাশের পরে দেখা যায় একটি
ক্ষেত্র ছাড়া চন্দ্রনাথের উক্ত অনুমান একদম সঠিক হয়েছে। এই অনুমানের কথাই বক্তা
বলতে চেয়েছে।
৯) ‘মনে মনে দুঃখিত না হইয়া পারিলাম না, - বক্তা কে? তিনি কেন দুঃখিত হয়েছিল?
উত্তর: আলোচ্য অংশটির বক্তা হলেন তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত 'চন্দ্রনাথ' গল্পের কথক
নরেশ।
** বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফল প্রসঙ্গে বক্তা উক্তিটি করেছে। উক্ত ফলাফলে দেখা গেল হীরুই
বেশি নম্বর পেয়েছে চন্দ্রনাথের তুলনায় এবং সে স্কলারশিপও পেয়েছে। নরেশ (বক্তা) কিন্তু
ভালোভাবেই অনুভব করে যে চন্দ্রনাথের মেধা হীরুর থেকে বেশি। অথচ হীরুই এবার
অধিক নম্বর পেল। এমন ফলাফল চন্দ্রনাথের কাছে যেমন অপ্রত্যাশিত, নরেশের কাছেও
অপ্রত্যাশিত। যোগ্যতা অনুসারে চন্দ্রনাথ সাফল্য পায়নি বলে বক্তার মনে হয়েছে। তাই
চন্দ্রনাথের উক্ত ফলাফলে বক্তা মনে মনে দুঃখিত হয়েছিল।
১০) ‘উৎসবের বিপুল সমারোহ সেখানে।- কীসের উৎসব? উক্ত উৎসবের সমারোহের বিবরণ
দাও।
উত্তর:'চন্দ্রনাথ' গল্পের গল্পকথকের সহপাঠী হীরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় ভালো ফল করায়
স্কলারশিপ পাবে। সেই উপলক্ষে হীরুর বাড়িতে প্রীতিভোজের উৎসবের কথা এখানে বলা
হয়েছে।
** হীরু ধনীর সন্তান, ফলে অর্থের কোনো অভাব তাদের ছিল না। চিনা লণ্ঠন এবং রঙিন
কাগজের মালার নিপুণ বিন্যাসে হীরুদের বাড়ির পাশের আম বাগানটাকে
অনিন্দ্যসুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছিল। শৌখিন ধনী বলে জেলায় পরিচিত হীরুর
কাকাই নিজের উদ্যোগে বাগানটাকে সাজিয়েছিলেন।উৎসবের ডেপুটি, ডিএসপি, স্থানীয়
সাব-রেজিস্ট্রার, থানার দারোগা ছাড়াও গ্রামস্থ ভদ্র লোকজনসহ হীরুর সহপাঠী নরেশ ও
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন। এমনই ছিল সেই প্রীতিভোজের
উৎসব।
জ। বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী বা বড়ো প্রশ্নোত্তর১৫০টি শব্দের মধ্যে উত্তর দাও।
১) 'চন্দ্রনাথ' গল্পে চন্দ্রনাথের চরিত্র আলোচনা করো
উত্তর: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত ‘চন্দ্রনাথ’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র চন্দ্রনাথ নিজের
শ্রেষ্ঠত্ব নিয়েঅহংকারী এক কিশোর। স্কুলের পরীক্ষায় হীরুর প্রথম হওয়া এবং নিজের
দ্বিতীয় হওয়াকে সে মানতে পারে না। হীরুর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে চন্দ্রনাথ। নিজেকে
শ্রেষ্ঠত্বের আসনে দেখতে সে এতটাই ভালোবাসে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার
কাল্পনিকফলাফলও তৈরি করে চন্দ্রনাথ এবং সেখানে নিজের নম্বরের অনুপাতে বাকিদের
ফলাফলও ঠিক করে ফেলে।চন্দ্রনাথ স্কুলে দ্বিতীয় স্থান অর্জনের পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে
চিঠি দেয়। প্রধান শিক্ষককে উদ্দেশ্য করে ‘গুরুদক্ষিণার যুগ আর নেই' বলার মধ্যে তার এই
রাগ ফুটে ওঠে। এক্ষেত্রে নিজের দাদার নির্দেশও সে শুধু অমান্য করেনি,দাদার সঙ্গে
সম্পর্কের বিচ্ছেদও ঘটেছে। তাই হীরুর কাকার বিশেষ পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাবকে
চন্দ্রনাথের 'অপমানজনক' বলে মনে হয়েছে।
অহংকারের কারণেই হীরুর বাড়ির প্রীতিভোজে আমন্ত্রণ পেয়েও চন্দ্রনাথ হাজির হয়নি, বরং
স্কলারশিপ পাওয়ার মতো সামান্য কারণে অনুষ্ঠান করার প্রয়োজন ছিল না বলে চিঠি লিখে
রেখে গেছে। সব মিলিয়ে অহংকার, চূড়ান্ত আত্মমর্যাদা এবং চরম আত্মকেন্দ্রিকতার প্রতীক
হয়ে উঠেছে চন্দ্রনাথ চরিত্রটি।
২) 'চন্দ্রনাথ' গল্পে হীরুর চরিত্রটি যেভাবে পাওয়া যায় লেখো।
উত্তর: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত 'চন্দ্রনাথ' গল্পে হীরু আর একটি বিশিষ্ট চরিত্র।
চন্দ্রনাথের পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার একচেটিয়া সাফল্যকে দূরে সরিয়ে সে স্কুলের পরীক্ষায়
প্রথম হয়েছে এবং এটা যে কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়, তা প্রমাণিত হয়েছে যখন
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাতেও সে চন্দ্রনাথকে পিছনে ফেলে স্কলারশিপ পেয়েছে।
চন্দ্রনাথ নানাভাবে হীরুর স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম হওয়াকে তাচ্ছিল্য করেছে, চন্দ্রনাথ হিরুর
বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। কিন্তু হীরুর তরফ থেকে তার সাফল্যের জন্য চন্দ্রনাথকে ছোটো
করার কোনো চেষ্টাই করা হয়নি। বরং হীরু চন্দ্রনাথকে তার কাকার দেওয়া বিশেষ
পুরস্কারের কথা বলে সান্ত্বনা দিতে চেয়েছে।
স্কলারশিপ পাওয়া উপলক্ষ্যে হীরুর বাড়িতে আয়োজিত প্রীতিভোজে চন্দ্রনাথ উপস্থিত
থাকুক, এটা সে আন্তরিকভাবেই চেয়েছিল। চন্দ্রনাথের চলে যাওয়া তাকে কষ্ট দিয়েছিল।
চন্দ্রনাথ সম্পর্কে হীরুর বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব কতটা আন্তরিক ছিল, তা বোঝা যায় যখন হীরুর
উদ্দেশে লেখা চন্দ্রনাথের চিঠিটিকেও সে স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রেখে দিতে চেয়েছিল। ধনীর
সন্তান হলেও এবং আইসিএস হওয়ার মতো উচ্চাশা থাকলেও হীরুর চরিত্রে সৌজন্য ও
সহৃদয়তার এক মিশ্রণ ঘটেছিল।
৩)“চন্দ্রনাথের অনুমান অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়া গিয়াছে চন্দ্রনাথের কোন্ অনুমান অক্ষরে
অক্ষরে মিলে গিয়েছিল? কোন বিষয়ে চন্দ্রনাথের অনুমান মেলেনি ? এতে কথকের কী
প্রতিক্রিয়া হয়েছিল?
উত্তর: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত 'চন্দ্রনাথ' গল্পে পরীক্ষায় দ্বিতীয় হওয়ার পরে
চন্দ্রনাথের অহংকারে আঘাত লাগে। এই সময় নিজের ঘরে বাসে চন্দ্রনাথ নিজের মতো
করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন স্বীক্ষার একটা সম্ভাব্য ফলাফল তৈরি করে। গল্পকথক নরু
চন্দ্রনাথের কাছ থেকে সেই কাল্পনিক ফলাফল সম্পর্কে অবহিত হয়। তার মতে, চন্দ্রনাথ
যদি সাড়ে পাঁচশো বা তার বেশি পায় তাহলে স্কুলে অমিয় আর শ্যামাই শধু ফেল করবে,
বাকি সবাই পাস করবে। আর সে যদি পাঁচশো পঁচিশের কম পায়, তাহলে দশ জন ফেল
করবে। আর কথক নর্ থার্ড ডিভিশনে পাস করবে।
পরীক্ষার ফল বেরোলে দেখা যায় চন্দ্রনাথের সব অনুমানই অক্ষরে অক্ষরে মিলেছে। দশটি
ছেলে ফেল করেছে, কথক তৃতীয় বিভাগে কোনোরকমে পাস করেছে, চন্দ্রনাথও পাঁচশো
পঁচিশ পায়নি। শুধু একটা অনুমানই মেলেনি-ফলে হীরু চন্দ্রনাথকে পিছনে ফেলে বেশি
নম্বর পেয়েছে।
*** হীরুর চিঠিতে পরীক্ষার ফলাফল জেনে এবং হীরুর স্কলারশিপের খবর পেয়ে কথক নরু
মনে মনে দুঃখিত হয়েছিল। কারণ সে মনে করেছিল যে চন্দ্রনাথের সঙ্গে হীরুর মেধাগত
অনেক পার্থক্য আছে। চদ্রনাথের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে নরুর মনে কখনোই কোনো সন্দেহ ছিল না-
সে কথাও সে মুক্তকণ্ঠে জানিয়ে দিয়েছে।
৪)চন্দ্রনাথের সঙ্গে তার বন্ধুদের সম্পর্কটি 'চন্দ্রনাথ' গল্প অবলম্বনে আলোচনা কর।
উত্তর: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত "চন্দ্রনাথ' গল্পের কেন্দ্রে আছে তিন সহপাঠী বন্ধু-
চন্দ্রনাথ, হীরু এবং গল্পকথক নরু বা নরেশ।
তিন বন্ধুর সম্পর্ক চন্দ্রনাথকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে চন্দ্রনাথকে দেখে
মনে হয়েছে সে শুধু নিজেকে নিয়েই ভাবে। তাই স্কুলের পরীক্ষায় চন্দ্রনাথ প্রথমবার দ্বিতীয়
হলে হীরুর প্রথম হওয়ার সাফল্যকে সে মেনে নিতে পারেনি। হীর বিরুদ্ধে সে অভিযোগ
এনেছে। এমনকি হীর স্কলারশিপ পাওয়ার পরে উৎসব করলে নিমন্ত্রণ সত্ত্বেও সে তাতে
যোগ দেয়নি বরং চিঠি লিখে বলেছে- “এ উৎসবটা না করিলেই পারিতে। স্কলারশিপটা কী
এমন বড়ো জিনিস।
অপরদিকে, হীরু এবং কথকের মনে চন্দ্রনাথের সম্পর্কে শ্রদ্ধার বোধও বজায় ছিল।
চন্দ্রনাথের তৈরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফলে চন্দ্রনাথ তাকে নিজের তুলনায় খারাপ অবস্থানে
রাখলে ক্ষুব্ধ নরু কামনা করেছে- “এই দাম্ভিকটা যেন ফেল হয়..।" কিন্তু গল্পের শেষে হীরু
স্কলারশিপ পেলেও নরু স্বীকার করেছে যে চন্দ্রনাথ হীরুর তুলনায় শ্রেষ্ঠ। অন্যদিকে হীরুও
চন্দ্রনাথকে মন থেকেই বন্ধু বলে ভারত। তাই হীরুর অনুষ্ঠানে চন্দ্রনাথ অনুপস্থিত থাকলেও
তার রেখে যাওয়া চিঠিকে হীরু বন্ধুর "স্মৃতিচিহ্ন' হিসেবে রেখে দেয়।
CONTENTS:
আরো পড়ুন:
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশের প্রশ্ন উত্তর Click Here
ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
দাম গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
নব নব সৃষ্টি প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click Here
হিমালয় দর্শন গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
Teles of Bhola grandpa Lesson1 Unit 1 Click Here
Teles of Bhola grandpa Unit 2 Click Here
All about a Dog Lesson 2-Unit -1 -Click Here
All about a Dog Lesson 2 Unit 2 Click Here
Autumn poem Lesson 3 Part 1 Click Here
A Day in the zoo Lesson 4 Part 1 Click Here
A Day in the zoo Lesson 4 part 2 Click Here
All Summer in a Day Lesson 5 part 1 Click Here
The price of bananas part 1 click Here
The price of bananas part 2 click Here
Hunting snake poem question answer
আবহমান কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
আমরা কবিতা প্রশ্ন উত্তর click Here
খেয়া কবিতার প্রশ্ন উত্তর click Here
নিরুদ্দেশ গল্পের প্রশ্ন উত্তর click Here
চন্দ্রনাথ গল্পের প্রশ্ন উত্তর part-1 click Here
চন্দ্রনাথ গল্পের প্রশ্ন উত্তর part-2 click Here
0 Comments