আমরা
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
সূচিপত্র:
ক। কবি পরিচিতি
খ) উৎস
গ। বিষয় সংক্ষেপ
ঘ। নামকরণ
ঙ। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখ(MCQ) প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
চ। অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(SAQ)২০টি শব্দের মধ্যে প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
ছ। ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ৬০টি শব্দের মধ্যে প্রতিটি প্রশ্নের মান-৩
জ। বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী বা বড়ো প্রশ্নোত্তর ১৫০টি শব্দের মধ্যে উত্তর দাও।
e-bookap পেজটি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সুখবর-1st- ইউনিট,2nd ইউনিট,3nd ইউনিট,টেস্ট
ফাইনালপরীক্ষা প্রস্তুতির জন্যগুরুত্বপূর্ণভাবে তোমাদের সাহায্য করবে।তাই এই সাফল্য
আমাদের কাছেবিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ক) কবি পরিচিতি:
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত:
ভূমিকা:
রবীন্দ্রনাথের সমসাময়িক হয়েও সত্যেন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যে তাঁর স্বাতন্ত্র্যের পরিচয় রেখে
গেছেন।
জন্ম এবং শৈশব:
১৮৮২ খ্রিস্টাব্দের ১২ ফেব্রুয়ারি বর্তমান উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার নিমতায় মামার
বাড়িতে জন্ম হয়সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের। তাঁর বাবার নাম ছিল রজনীনাথ দত্ত। তাঁদের পৈতৃক
বাড়ি ছিল বর্ধমান জেলার চুপিগ্রামে। সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের পিতামহ অক্ষয়কুমার দত্ত ছিলেন
বাংলার খ্যাতনামা চিন্তাবিদ, যুক্তিবাদীলেখক, ব্রাহ্ মতবাদের প্রচারক এবং তত্ত্ববোধিনী
পত্রিকার অন্যতম সম্পাদক।
ছাত্রজীবন:
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে সেন্ট্রাল কলেজিয়েট স্কুল থেকে দ্বিতীয় বিভাগে প্রবেশিকা
পরীক্ষায়পাস করেন। এরপর তিনি কলকাতার জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইন্সটিটিউশনে FA
ক্লাসে ভরতি হন।১৯০১ খ্রিস্টাব্দে তিনি FA পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগে পাস করেন। কিন্তু ১৯০৩
খ্রিস্টাব্দে তিনি BAপরীক্ষায়অকৃতকার্য হন।
ব্যক্তিজীবন:
১৯০৩ খ্রিস্টাব্দের ১৭ এপ্রিল হাবড়ার ঈশানচন্দ্র বসু ও গিরিবালা বসুর মেয়ে কনকলতার
সঙ্গেসত্যেন্দ্রনাথের বিয়ে হয়।
সাহিত্যজীবন:
বাংলা সাহিত্যে সত্যেন্দ্রনাথের প্রধান পরিচয় ছন্দের জাদুকর' হিসেবে। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে
'ছন্দোরাজা'বলতেন।১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ১২ বছর বয়সে সত্যেন্দ্রনাথ 'স্বর্গাদপি গরীয়সী'
নামে একটি কবিতা রচনা করেন। ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি বাবার সঙ্গে মধুপুর-দেওঘর
বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেই সংক্রান্ত তাঁর একটি লেখা সাপ্তাহিক হিতৈষী পত্রিকায় প্রকাশিত
হয়। সত্যেন্দ্রনাথের প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'সবিতা, প্রকাশিত হয় ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে। তাঁর রচিত
প্রথমদিকের কবিতাগুলিতে মাইকেল মধুসূদন দত্তঅক্ষয়কুমার বড়াল, দেবেন্দ্রনাথ সেনের
প্রভাব লক্ষ করা গেলেও পরবর্তী সময়ে লেখা কবিতাগুলিতেতাঁর নিজস্ব রীতি প্রকাশিত হতে
থাকে। তাঁর কিছু লেখা ভারতী পত্রিকাতেও প্রকাশিত হয়েছিল।১৯১২ খ্রিস্টাব্দের ২৮
জানুয়ারি রবীন্দ্রনাথের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে কলকাতার টাউন হলে সংবর্ধনা সভা
অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সত্যেন্দ্রনাথ তাঁর রচিত 'কবিপ্রশস্তি' গুরুদেবকে উপহার দেন।
এইউপলক্ষ্যে ভারতী পত্রিকায় ‘বরণ’ প্রকাশিত হয়। ১৯১৩-তে রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার
পাওয়ার পরশান্তিনিকেতনে তাঁর সংবর্ধনা সভার অভিনন্দনপত্রের খসড়া রচনা করেন
সত্যেন্দ্রনাথ।সত্যেন্দ্রনাথ বিভিন্ন ছদ্মনামেও লিখেছেন, যেমন—নবকুমার, কবিরত্ন,
অশীতিপর শর্মা, ত্রিবিক্রম বর্মণ,কলমগীর ইত্যাদি।সত্যেন্দ্রনাথের রচিত কাব্যগ্রন্থগুলি হল
– সবিতা (১৯০০), বেণু ও বীণা (১৯০৬),হোমশিখা (১৯০৭), তীর্থসলিল (অনুবাদ কবিতা,
১৯০৮), তীর্থরেণু( ১৯১০), ফুলের ফসল (১৯১১), কুহু ওকেকা (১৯১২), তুলির লিখন (১৯১৪),
অভ্র ও আবীর (১৯১৬), হসন্তিকা ।এ ছাড়াও তিনি একটি উপন্যাসজন্মদুঃখী (১৯১২) ও
একটি নাটক রঙ্গমল্লী (১৯১৩) রচনা করেন।
জীবনাবসান:
১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জুন এই প্রতিভাবান কবির অকালমৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স
হয়েছিল মাত্রচল্লিশ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ রবীন্দ্রনাথ ‘সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত' নামে একটি
কবিতা লেখেন যা তাঁরপুরবী কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।
খ) উৎস:
সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের 'আমরা' কবিতাটি তাঁর-' কুহু ও কেকা, কাব্যগ্রন্থে অন্তর্গত।
গ) সারসংক্ষেপ:
ফুলে- ফসলে, প্রকৃতির শোভায় অপরূপ সুন্দর বাঙালির বাসভূমি।প্রাচীন কাল থেকেই
প্রতিকূলতারসঙ্গে লড়াই করে বাঙালি বেঁচে থেকেছে। তার সঙ্গে আছে পূর্বপুরুষের সাহস
আর বীরত্বেরউত্তরাধিকার।বিজয়সিংহের লঙ্কা জয়, চাঁদ রায় এবং প্রতাপাদিত্যের
মোগলদের প্রতিরোধ বা মগআক্রমণকারীদের প্রতিহত করা সেই গৌরবেরই অংশ।
কপিলমুনির সাংখ্যদর্শন বা অতীশ দীপঙ্করেরবৌদ্ধধর্মের প্রসারে ভূমিকা, রঘুনাথ
শিরোমণির মিথিলার পণ্ডিত পক্ষধর মিশ্রকে পরাজিত করা,জয়দেবের গীতগোবিন্দ রচনা
বাঙালির গৌরবের ঐতিহ্য। বরভূধর' বা ‘ওংকারধাম মন্দির তৈরিতেবাঙালিদের
স্থাপত্যকীর্তির নিদর্শন রয়েছে। বিটপাল আর ধীমানের মতো ভাস্কর
এইবাংলাদেশেইজন্মেছিলেন। কীর্তন আর বাউলগানে বাঙালি তার হৃদয়ের তত্ত্বকথাকে
প্রকাশকরেছে।সে অনায়াসেইদেবতাকে কাছের মানুষ করে নিয়েছে। মানবতার বাণী প্রচার
করে চৈতন্যদেব সমাজে আলোড়নতুলেছিলেন, বিশ্বকে পথ দেখিয়েছেন বিবেকানন্দ।
কবিশুনিয়েছেন মহামিলনের গান। বাঙালি তারবুদ্ধি দিয়ে বহু প্রশ্নের উত্তর খুঁজে
পেয়েছে, সত্যের সন্ধান পেয়েছে। এই অতীতের সাফল্যের ওপরেভবিষ্যতের সার্থকতা
প্রতিষ্ঠিত হবে।শক্তির প্রয়োগ বা ঈর্ষা-বিদ্বেষ নয়, মিলনের মন্ত্রে বাঙালি তারপ্রতিভাকে
প্রতিষ্ঠা করবে।
ঘ) নামকরণ:
যে-কোনো সাহিত্যের ক্ষেত্রেই নামকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের
‘আমরা’কবিতাটিতে তাঁর তীব্র জাতীয়তাবাদী মানসিকতা ফুটে উঠেছে। এই জাতীয়তাবাদে
অন্য জাতির প্রতিঘৃণা নেই কিন্তু নিজের দেশ ও জাতি সম্পর্কে তীব্র ভালোবাসা ও
গৌরববোধের প্রকাশ ঘটেছে।কবিতাটির শুরুতে কবি বাংলামায়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের
বর্ণনা করে তারপরেই বাঙালি জাতগৌরবগাথা রচনা করেছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে কবি
এখানে কেবল বাংলাদেশ ও বাঙালিদের কথাইবলেননি, বাঙালি যাঁদের ভালোবেসেছে বা
বাংলার সঙ্গে যাঁদের কিছুমাত্র সংযোগ হয়েছে তাঁদের কথাওকবি এই গৌরবগাথার অন্তর্ভুক্ত
করেছেন। সেই কারণেই শ্রীকৃষ্ণ বা কপিলমুনি বাঙালি না হয়েওবাংলার গৌরব বৃদ্ধি
করেছেন।বাঙালির জয়গাথা রচনা করতে গিয়ে কবি শুধু ইতিহাস নয়, জনশ্রুতির ওপরও
নির্ভর করেছেন। লঙ্কাজয়ী বীর বিজয়সিংহ, বারোভূঁইয়ার অন্যতম চাঁদ রায়, প্রতাপাদিত্য,
পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর, রঘুনাথশিরোমণি, কবি জয়দেবকে সত্যেন্দ্রনাথ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
তিনি ভোলেননি পাল যুগের বিখ্যাত ভাস্করবিট্পাল, ধীমানকেও।দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে
সমুদ্রপথে বাংলার বাণিজ্যিক যোগাযোগ ছিল। ওই অঞ্চলের স্থাপত্যের ওপরপাল-সেন
যুগের স্থাপত্যের প্রভাবের ঐতিহাসিক প্রমাণ পাওয়া যায়। তার ওপর ভিত্তি
করেকবি‘বরভূধর’ স্তূপ এবং ‘ওংকারধাম’ মন্দিরে বাঙালির অবদানের কথা বলেছেন।
শ্রীচৈতন্যদেব, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্মদেব, বিবেকানন্দ, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু, আচার্যপ্রফুল্লচন্দ্র
রায়,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর—কবি এঁদের কারও নাম করে, কারও-বা নাম না-করেইঙ্গিতে তাঁদের
জয়গানকরেছেন।‘আমরা’ কবিতায় কবি একদিকে যেমন বিভিন্ন ক্ষেত্রেশ্রেষ্ঠ বাঙালিদের
অবদানকে স্মরণ করেছেনতেমনি অন্যদিকে বাংলার সংস্কৃতির মূলসুরটিকেও তুলে
ধরেছেন। এই সুর হল মানুষের সঙ্গে মানুষেরমহামিলনের সুর। বাঙালিদেবতাকে আত্মীয়ের
মতো হৃদয়ে স্থান দিয়েছে, আবার প্রিয়জনকেভালোবেসে দেবতারমর্যাদা দিয়েছে।
আবেগপ্রবণ বাঙালি জাতি তার সংস্কৃতির সংস্পর্শে যারা এসেছে, তাদেরসকলকে সাদরে
গ্রহণ করেছে, কাউকে ফিরিয়ে দেয়নি। কীর্তনে আর বাউলগানে এইভালোবাসাআর
মিলনের সুরই ধ্বনিত হয়েছে।সবশেষে কবি স্বদেশ এবং স্বজাতিরভবিষ্যতের কথা ভেবে
স্বপ্নের জাল বুনেছেন। তিনি আশা করেছেনএকদিন নিশ্চয়ই বাঙালিজগৎসভায় শ্রেষ্ঠত্বের
মর্যাদা পাবে। কবিতাটি আমাদের অর্থাৎ বাঙালিজাতিকে কেন্দ্র করেরচিত। তাই বলা যায়
‘আমরা’ নামটি বিষয়বস্তু-নির্ভর এবং সবদিক থেকেইযথাযথ।
ঙ। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখ(MCQ) প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
১)'আমরা' কবিতাটির কবির নাম-
ক) অজিত দত্ত
খ) সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
গ) মধুসূদন দত্ত
ঘ) সুধীন্দ্রনাথ দত্ত
উত্তর: (খ) সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
২) বাম হাতে তার কমলার ফুল—এখানে 'তার' হল-
ক) সরস্বতীর
খ) লক্ষ্মীর
গ) দুর্গার
ঘ) বঙ্গলক্ষীর
উত্তর: (ঘ) বঙ্গলক্ষীর
৩) বঙ্গভূমির কপালে শোভা পায়-
ক)কাঞ্চন-শৃঙ্গ মুকুট
খ) কাঞ্চন মুকুট
গ)মুকুট
ঘ)কনক মুকুট
উত্তর: (ক) কাঞ্চন-শৃঙ্গ মুকুট
৪) আমরা যুদ্ধ করে বেঁচে আছি-
ক)সিংহের সঙ্গে
খ)বাঘের সঙ্গে
গ)সাপের সঙ্গে
ঘ)হাতির সঙ্গে
উত্তর: (খ) বাঘের সঙ্গে
৫) দশানন জয়ী হলেন-
ক)লক্ষণ
খ)ইন্দ্রজিৎ
গ )রামচন্দ্র
ঘ)সুগ্রীব
উত্তর: (গ) রামচন্দ্র
৬) লঙ্কা জয় করেছিলেন-
ক) শক্তসিংহ
খ)প্রতাপ সিংহ
গ) সংগ্রাম সিংহ
ঘ)বিজয় সিংহ
উত্তর: (ঘ) বিজয় সিংহ
৭) তিব্বতে জ্ঞানের দ্বীপ জ্বেলে ছিলেন-
ক)কপিল
খ)দীপঙ্কর
গ) বিজয়
ঘ)জয়দেব
উত্তর: (খ) দীপঙ্কর
৮) বাংলার 'রবি, কোন কবিকে বলা হয়েছে-
ক) রবীন্দ্রনাথকে
খ) জয়দেবকে
গ)কালিদাসকে
ঘ) নজরুলকে
উত্তর: (খ) জয়দেবকে
৯) পটুয়ার তুলিতে আমাদের পট অক্ষয় হয়ে আছে-
ক)ইলোরায়
খ) খাজুরাহে
গ) অজন্তায়
ঘ) চক্র তীর্থে
উত্তর: (গ) অজন্তায়
১০) বিট পাল আর ধীমান বিখ্যাত ছিলেন-
ক) কবি হিসেবে
খ) স্থপতি হিসেবে
গ) যোদ্ধা হিসাবে
ঘ)বিজ্ঞানী হিসেবে
উত্তর: (খ) স্থপতি হিসেবে
১১) বিটপাল আর ধীমান-
ক)পাল যুগের মানুষ
খ)গুপ্ত যুগের মানুষ
গ)সেন যুগের মানুষ
ঘ)সমসাময়িক যুগের মানুষ
উত্তর: (ক) পাল যুগের মানুষ
চ। অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(SAQ)২০টি শব্দের মধ্যে প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
১) বাঙালি জাতি কীসের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকে ?
উত্তর: বাংলার দক্ষিণে অবস্থিত সুন্দরবনের গভীর অরণ্যে হিংস্র বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ করে
বাঙালি বেঁচে থাকে।
২)“আমরা হেলায় নাগেরে খেলাই ”কবি কেন বলেছেন?
উত্তর: বাংলার নদী-খাল-বিলে অসংখ্য সাপের বাস। সাপখেলা দেখানো কিছু বাঙালির পেশা,
তাই কবি একথা বলেছেন।
৩) নাগের মাথায় কে নেচেছিলেন?
উত্তর: পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে শ্রীকৃয় কালিয় নাগের মাথা অর্থাৎ ফণার উপর
নেচেছিলেন।
৪) চতুরঙ্গ কী?
উত্তর: হাতি, ঘোড়া, রথ ও পদাতি —এই চারটি শাখাবিশিষ্ট সেনাবাহিনীকে চতুরঙ্গ বলে।
৫)কবির মতে বাঙালি সেনা কার সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল?
উত্তর: কবির মতে বাঙালি সেনা রাবণজয়ী রামচন্দ্রের পিতামহ রঘুর সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল।
৬)কোন্ বাঙালি লঙ্কা জয় করেছিলেন?
উত্তর: রাঢ় বাংলার সিংহপুরের রাজপুত্র বাঙালি বিজয়সিংহ লঙ্কাদ্বীপ জয় করে সেখানে
রাজত্ব ও রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন।
৭) সিংহল নামের মধ্য দিয়ে কোন্ বাঙালি নিজের শৌর্যের পরিচয় রেখেছেন?
উত্তর:বাঙালি বিজয়সিংহ লঙ্কা জয় করে সিংহল নামের মধ্য দিয়ে নিজের শৌর্যের পরিচয়
রেখেছেন।
৮) তিব্বতে জ্ঞান্বের দ্বীপ কে জ্বেলেছিলেন ?
উত্তর:বাঙালি পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর বা দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান তিব্বতে জ্ঞানের দ্বীপ
জ্বেলেছিলেন তথা বৌদ্ধধর্মের প্রচার করেছিলেন।
৯) কবি জয়দেবকে কোন বাংলার 'রবি,বলা হয়েছে?
উত্তর: জয়দেবের 'গীতগোবিন্দ, কাব্যটি সংস্কৃত ভাষার অমূল্য সম্পদ। তাই তাঁকে বাংলার
'রবি, অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ কবি বলা হয়েছে।
১০) কারা মন্বন্তরের মরেনি?
উত্তর: বাঙালি জাতি মরেনি।মন্বন্তরের বহু মানুষের মৃত্যু হলেও বাঙালি জাতি শেষ পর্যন্ত
তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে।
ছ। ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ৬০টি শব্দের মধ্যে প্রতিটি প্রশ্নের মান-৩
১)'আমরা, বাঙালি বাস করি সেই বাঞ্ছিত ভূমি বঙ্গে- কবি বাংলা দেশকে 'বাঞ্ছিত ভূমি' কেন
বলেছেন?
উত্তর: বাঞ্ছিত ভূমি' অর্থাৎ যে দেশ সকলের আকাঙ্ক্ষার স্থান। বাংলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে
পুণ্যসলিলাগঙ্গা, তার মাথায় তুষার হিমালয়ের মুকুট আর তার পা ধুয়ে দেয় সমুদ্রের জল।
বাংলামায়ের কোলভরাসোনার ধান আর দেহ অজস্র ফুলে শোভিত। অসাধারণ প্রাকৃতিক
সৌন্দর্যে পূর্ণ, সুজলা-সুফলা, বাংলারমাটিতে শত তীর্থের পুণ্য অর্জন করা যায় বলে
বঙ্গদেশকে কবি 'বাঞ্ছিত ভূমি' বলেছেন।
২)“বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ করিয়া আমরা বাঁচিয়া আছি”—কবি কেন একথা বলেছেন?
উত্তর: কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা 'আমরা' কবিতা থেকে উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটি নেওয়া
হয়েছে।বাংলার দক্ষিণের বনভূমি অঞ্চল সুন্দরবন প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ। সুন্দরবনের
রাজকীয়বাঘ বা রয়ালবেঙ্গল টাইগার সারা পৃথিবীতে বিখ্যাত। কিন্তু এই অঞ্চলের বাসিন্দা
এবং জীবিকার কারণে কাঠ, মধু,মাছ ইত্যাদি সংগ্রহের জন্য যাদের জঙ্গলে যেতে হয় তাদের
প্রতিনিয়ত এই হিংস্র প্রাণীটির আক্রমণেরমুখে পড়তে হয়। তাই কবি বলেছেন যে বাঙালি
বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে।
৩)'আমরা হেলায় নাগেরে খেলাই, নাগেরি মাথায় নাচি।,–পঙক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা ‘আমরা’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
খাল-বিল-নদী-জঙ্গলে পূর্ণ বাংলায় অসংখ্য রকমের নাগ অর্থাৎ সাপ রয়েছে। তাই বাংলার
বেশ কিছুসংখ্যক মানুষের জীবিকা সাপ ধরে সাপখেলা দেখানো। অন্যদিকে, পৌরাণিক
কাহিনি অনুসারেশ্রীকৃষ্ণ কালিয় নাগকে দমন করে তার মাথার উপর নেচেছিলেন।কৃষ্ণ
বাংলার মানুষ না হলেওভালোবেসে বাঙালি তাঁকে আপন করে নিয়েছে। তাই কবি শ্রীকৃষ্ণের
উপাখ্যানটিকেও বাঙালিরকৃতিত্বের অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৪) ‘আমরা, কবিতায় কবি কেন তাঁর প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন?
উত্তর: প্রাচীন বাংলা দেশের একজন সাহসী রাজকুমার ছিলেন বিজয়সিংহ। তিনি অনায়াসে
সিংহল জয়করেছিলেন।ভারত মহাসাগর পাড়ি দিয়ে বিজয়সিংহ লঙ্কাভূমিতে উপস্থিত হন।
সেনাসংগঠন করে আপন কৃতিত্বেতিনি লঙ্কা ভূমি জয় করেন। শুধু তাই নয়, নিজের
নামানুসারে সেদেশের নামকরণ করেন ‘সিংহল’।কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত 'আমরা'কবিতায়
বিজয়সিংহের সাহসিকতার পরিচয় তুলে ধরে,পরবর্তী প্রজন্মেরমধ্যে বাঙালির সেই বীরত্বের
মনোভাবকে সঞ্চারিত করতে চেয়েছেন।
৫)'কীর্তনে আর বাউলের গানে আমরা দিয়েছি খুলি,-উদ্ধৃতিটির মাধ্যমে কবি কি বলতে
চেয়েছেন?
উত্তর: বাংলার অতিপ্রাচীন দুটি গীতিধারা হল- 'কীর্তন' আর ‘বাউল গান’। মাটির মানুষের
কথা আরআত্মানুসন্ধানের গান এই বাউল সংগীত আর রাধা-কৃয়কে কেন্দ্রে রেখে ঈশ্বর ও
মানব প্রেমানুভূতিরআকুলতা প্রকাশিত হয় কীর্তন গানে। বাঙালি সমাজের মানসিক দুঃখ-
সুখ,ভালোবাসা-মিলনের বাণীরূপ এই কীর্তন আর বাউল গান। বাঙালির মনের সকল মাধুরী
একাত্ম হয়ে যায়এই গানগুলির মধ্যে। আপন-পর ভুলে সকলকে আপন বক্ষে ধারণ করার
ঐতিহ্য রয়েছে কীর্তন আর বাউলের মন আকুল করা সুরে। উদ্ধৃতাংশের মাধ্যমে কবি সে-
কথাই বুঝিয়েছেন
জ। বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী বা বড়ো প্রশ্নোত্তর ১৫০টি শব্দের মধ্যে উত্তর দাও-পূর্ণমান-৫
১) 'আমরা' কবিতাতে কবি বঙ্গভূমির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের যে বর্ণনা করেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: ‘আমরা' কবিতাতে স্বদেশ এবং স্বজাতি সম্পর্কে কবি তীব্র ভালোবাসা ও গৌরববোধের
প্রকাশঘটেছে। বঙ্গভূমি তাঁর কাছে ভৌগোলিক সীমায় আবদ্ধ একটি ভূখণ্ড মাত্র নয়, এই
দেশ তাঁর কল্পনায়মাতৃরূপে ধরা দিয়েছে। মুক্তধারা গঙ্গা নদী বাংলার ভূখণ্ডের উপর দিয়ে
বয়ে গিয়ে সমুদ্রে মিশেছে। কবির মতে গঙ্গা এদেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে গিয়ে
আনন্দে উচ্ছল হয়েছেন এবং তাঁর পবিত্রজলের স্পর্শে এখানকার মানুষকে মুক্তিদান
করেছেন। এই বাংলার বুকে রয়েছে অসংখ্য তীর্থস্থান। তাই বাংলার মানুষ নিজের
জন্মস্থানেই তীর্থদর্শনের পুণ্য অর্জন করতে পারে।কবির কল্পনায় বাংলামায়ের বাম হাতে
আছে ধনসম্পদের দেবী লক্ষ্মীর পদ্মফুল আর তাঁর ডানদিকেমধুলোভী অসংখ্য মধুকরের
আনাগোনা। বাংলার উত্তরে বরফে ঢাকা হিমালয় পর্বতমালা সূর্যের কিরণেমায়ের মাথায়
সোনার মুকুটের মতোঝলমল করে। সেই মুকুট থেকে ঠিকরে পড়া আলোতে বিশ্বচরাচর
আলোকিত হয়। বাংলার দিগন্তপ্রসারীসোনালি ধানখেতকে কবি বাংলামায়ের কোলভরা
সোনার ধান বলেছেন। মায়ের বুকভরা অসীম স্নেহকারণ তিনি তাঁর সন্তান অর্থাৎ
বঙ্গবাসীদের ফুলে-ফলে-সমৃদ্ধিতে লালন করেন। মায়ের দেহ অতসী-অপরাজিতা ফুলে
শোভিত। বাংলার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর অজস্র ঢেউ দিয়ে মায়ের পা ধুইয়ে দেয়।কবির মনে
হয়েছে সাগর যেন তটভূমিতে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের মাধ্যমে বাংলা মাকে তার
প্রণামজানায়, ঢেউয়ের কলতানে সৃষ্টি হয় মায়ের বন্দনাগীতি। এভাবেই কবি সারা পৃথিবীর
মানুষের ‘বাঞ্ছিতভূমি' বাংলার রূপ বর্ণনা করেছেন।
২)'আমরা’ কবিতায় কবি বাঙালির কৃতিত্বকে যেভাবে বর্ণনা করেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘আমরা' কবিতাটি বাংলা ও বাঙালিকে কেন্দ্র করে রচিত। কবিতার
শুরুতেবাংলার রূপ বর্ণনার পরেই কবি বাঙালির গৌরবগাথা রচনা করেছেন। জলে-জঙ্গলে
পূর্ণ বাংলায় বাঙালিজাতি সাপ ও বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকে। সিংহলি পুরাণ
অনুসারে রাঢ় বাংলার সিংহপুরেররাজপুত্র বাঙালি বিজয়সিংহ লঙ্কা জয় করেন এবং তাঁর
নামানুসারেই লঙ্কার সিংহল নামকরণ করা হয়।বাঙালি বহির্দেশীয় আক্রমণকারী মগ ও
মোগলের সঙ্গেও প্রাণপণ লড়াই করেছে। বারোভূঁইয়ারঅন্যতম চাঁদ রায়, প্রতাপাদিত্যকে
পরাজিত করতে দিল্লির মোগল সম্রাটকে রীতিমতো বেগ পেতে হয়েছিল।বাংলার
গঙ্গাসাগরে কপিলমুনির আশ্রম আছে। তাই কবি ধরে নিয়েছেন তাঁর সুপ্রাচীন
সাংখ্যদর্শনের রচনাভূমি এই বাংলা। বাঙালি পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর তিব্বতে গিয়ে
বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও শিক্ষাবিস্তারকরেন। নবদ্বীপের রঘুনাথ শিরোমণি মিথিলার পণ্ডিত
পক্ষধর মিশ্রকে তর্কযুদ্ধে পরাজিত করে বাংলারগৌরব বৃদ্ধি করেন। বাঙালি কবি
জয়দেবের লেখা কাব্য ‘গীতগোবিন্দ’ সংস্কৃত সাহিত্যের অমূল্যসম্পদ।স্থাপত্য-ভাস্কর্য-
শিল্পকলাতেও বাঙালি কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে। পাল যুগের বিখ্যাত ভাস্কর ছিলেনবিট্পাল
ও ধীমান। মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব, শ্রীরামকৃষৃ্দেব আধ্যাত্মিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে
বাঙালিকে অপূর্ব মহিমা দান করেছেন। স্বামী বিবেকানন্দের বাণী মুগ্ধ করেছে বিশ্ববাসীকে।
বাঙালি বিজ্ঞানীআচার্য জগদীশচন্দ্র বসু গাছের মধ্যে প্রাণের স্পন্দন আবিষ্কার করেছেন। ড.
প্রফুল্লচন্দ্র রায় রসায়নশাস্ত্রে অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। বাঙালির কবি
রবীন্দ্রনাথ তাঁর কবিতায় মানুষেরমহামিলনের কথা বলেছেন।সবশেষে কবি আশা প্রকাশ
করেছেন যে বাঙালি একদিন তার প্রতিভা ও কর্মপ্রচেষ্টায় বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্বেরশিরোপা লাভ
করবে।
CONTENTS:
আরো পড়ুন:
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশের প্রশ্ন উত্তর Click Here
ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
দাম গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
নব নব সৃষ্টি প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click Here
হিমালয় দর্শন গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
Teles of Bhola grandpa Lesson1 Unit 1 Click Here
Teles of Bhola grandpa Unit 2 Click Here
All about a Dog Lesson 2-Unit -1 -Click Here
All about a Dog Lesson 2 Unit 2 Click Here
Autumn poem Lesson 3 Part 1 Click Here
A Day in the zoo Lesson 4 Part 1 Click Here
A Day in the zoo Lesson 4 part 2 Click Here
All Summer in a Day Lesson 5 part 1 Click Here
আবহমান কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
আমরা কবিতা প্রশ্ন উত্তর click Here
0 Comments