নোট বই
সুকুমার রায়
সূচিপত্র:
ক। কবি পরিচিতি
খ) উৎস
গ। বিষয়সংক্ষেপ
ঘ। নামকরণ
ঙ) হাতে কলমে সমাধান
e-bookap পেজটি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সুখবর-1st- ইউনিট,2nd ইউনিট,3nd ইউনিট,টেস্ট
ফাইনাল পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্যগুরুত্বপূর্ণভাবে তোমাদের সাহায্য করবে।তাই এই সাফল্য
আমাদের কাছে বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ক) কবি পরিচিতি:
সুকুমার রায়:
সুকুমার রায় ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দের ৩০ অক্টোবর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। এই কবি প্রত্যেক বাঙালির শৈশবের স্মৃতির সঙ্গে জড়িয়ে
আছেন। চিত্রশিল্প, ফটোগ্রাফি, ও কৌতুককর কাহিনি এবং ছড়া রচনায় সুকুমার রায় ছিলেন
অতুলনীয়। বিখ্যাত শিশু বিষয়ক রচনা ‘আবোল তাবোল,‘হ-য- ব-র-ল,আর ‘পাগলা দাশু,-এ
সবেরই স্রষ্টা হলেন সুকুমার রায়। তাঁর রচিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বই ‘খাই খাই,অবাক
জলপান, 'ঝালাপালা,লক্ষ্মণের শক্তিশেল’ ইত্যাদি। তাঁর বিজ্ঞান বিষয়ক রচনাগুলিও
অসাধারণ। স্বল্পদিনের জীবনে তিনি যা সৃষ্টি করে গেছেন তা থেকে বাঙালি জাতি চিরদিন
আনন্দের স্বাদ পাবে। 'সন্দেশ, পত্রিকায় তাঁর অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়। ১৯২৩
খ্রিস্টাব্দের ১০ সেপ্টেম্বর এই মহান সাহিত্যিকের মহাপ্রয়াণ ঘটে।
খ) উৎস:
কবিতাটি সুকুমার রায়ের ‘আবোল তাবোল,গ্রন্থ থেকে সংকলিত। ‘আবোল তাবোল, গ্রন্থটি
১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়।
গ) সারসংক্ষেপ:
নোটবুকে মানুষ তার প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় নানান কথা লিখে রাখে। কবিও পছন্দমতো
নিজের নোটবুকে সেই ধরনের নানান কথা লিখে চলেছেন। কথাগুলি যতটা না প্রয়োজনীয়
তার থেকে বেশি হাস্যকর।কবি নোট বইতে লিখেছেন-ফড়িঙের ক-টা ঠ্যাং, আরশোলা কী
কী খায় এবং আঙুলেতে আঠা লাগালে আঙুল কেন চটচট করে ইত্যাদি। কাতুকুতু দিলে
গোরু কেন ছটফট করে, সে কথাও তিনি লিখেছেন। ওই নোটবুকে এই ধরনের মজাদার
কথা আরও রয়েছে। যেমন- কান কটকট করছে, ফোড়া টনটন করছে ইত্যাদি। কবি
জানিয়েছেন, আগের দিন থেকেই তাঁর মনে কিছু বিষয় নিয়ে খটকা বা সন্দেহের সৃষ্টি
হয়েছে। যেমন, সাবান না পটকা, কোথায় ঝোলা গুড় দেওয়া হয়?এ ছাড়াও,‘পেট কেন
কামড়ায়, বা জোয়ানের আরকে ঝাঁঝ থাকার রহস্যও তাঁর কাছে অজানা। কথক এও জানেন
না,তেজপাতায় তেজ কেন থাকে বা লংকা কেন ঝাল হয়?নাক ডাকা বা পিলে চমকানোর
প্রকৃত কারণও তিনি এখনও জেনে উঠতে পারেননি। তাই কথক এইসব প্রশ্ন নোট বইতে
লিখে রাখছেন তাঁর মেজদার কাছ থেকে সেগুলোর উত্তর জেনে নেবেন বলে। একই সঙ্গে
কথক জানতে চেয়েছেন,‘দুন্দুভি' কার নাম আর 'অরণি' কাকে বলে। এক হাতে পেনসিল
আর অন্য হাতে নোটবুক নিয়ে কথক এমনই সব বিচিত্র মজার বিষয় তাঁর নোট বইয়ে লিখে
রাখছেন।
ঘ) নামকরণ:
যে-কোনো সাহিত্যকর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল তার নামকরণ। নামকরণের
মাধ্যমেই সাহিত্যিক তাঁর রচনার বিষয়বস্তুর সঙ্গে পাঠকের পরিচিতি ঘটান। সেদকি থেকে
আমাদের পাঠ্য ‘নোট বই’ কবিতাটির নামকরণ কতটা যথাযথ হয়েছে তা আলোচনা করা
যেতে পারে। কথকের এক হাতে একটি নোটবই, অন্য হাতে পেনসিল। কথকের মনে
নানারকম আজগুবি ও অদ্ভুত প্রশ্ন জাগে । তিনি তাঁর মেজদাকে খুঁচিয়ে সেগুলির উত্তর
জেনে নেন আর লিখে রাখেন তাঁর নোট বইটিতে। সেই উদ্ভট সব প্রশ্নোত্তরের কিলবিল
লেখাতে নোট বইটি ভরা। ফড়িঙের পায়ের সংখ্যা কত, আরশোলার খাদ্য কী, আঙুলে আঠা
দিলে চটচট করে কেন, কাতুকুতু দিলে গোরু কেনই বা ছটফট করে, ঝোলাগুড় কীসে দেয়
সাবানে না পটকায়, এসব কথক তাঁর নোট বইতে লিখে রাখেন। একইসঙ্গে পেট কেন
কামড়ায়, জোয়ানের আরকে ঝাঁঝ কেন, কিংবা কেনই বা তেজপাতায় ‘তেজ’ আর লংকায়
ঝাল থাকে, নাক কেন ডাকে আর পিলে কেন চমকায় এসব নানান ধরনের প্রশ্নের
পাশাপাশি ‘দুন্দুভি- 'অরণি’ বলতেই বা কী বোঝায়,নোট বই থেকে সে-সম্পর্কে বিস্তারিত
জানা যাবে। সমগ্র কবিতাটি যেহেতু নোট বইকে কেন্দ্র করেই রচিত, তাই কবিতার নামকরণ
যথাযথ ও সার্থক হয়েছে বলা যায় ।
ঙ)হাতে-কলমে সমাধান:
১ )একটি বাক্যে উত্তর দাও।
১.১ নোট বই কী ধরনের লেখাতে ভরা?
উত্তর: নোট বই ‘কিলবিল’ লেখাতে ভরা।
১.২)বক্তা কী করে নিজে নিজে নোট বইটি লিখলেন ?
উত্তর: কোথাও কোনো ভালো কথা শুনলেই বক্তা চটপট তা নোট বইতে লিখে ফেলতেন।
২) নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো।
২.১)'ভালো কথা শুনি যেই চটপট লিখি তায়'–বক্তা কোন কোন ভালো কথা নোট বইয়ে লিখে
রেখেছিলেন?
উত্তর: বক্তা যে যে ভালো কথা নোট বইয়ে লিখে রেখেছিলেন সেগুলি হল-ফড়িঙের ক-টা
ঠ্যাং, আরশোলা কী কী খায়, আঙুলে আঠা লাগলে কেন আঙুল চটচট করে এবং গোরুকে
কাতুকুতু দিলে গোরু কেন ছটফট করে।এগুলি বক্তার কাছে ভালো কথা বলে মনে হয়েছিল
এবং তাই তিনি সেগুলো নোট বইয়ে লিখে রেখেছিলেন।
২.২)'কাল থেকে মনে মোর লেগে আছে খটকা'—কাল থেকে মনে কী খটকা লেগেছে?
এই খটকা কীভাবে দূর হবে?
উত্তর: সাবান না পটকা—কীসে ঝোলা গুড় দেয়, তা নিয়ে কথকের মনে আগের দিন থেকে
খটকা লেগে আছে।নোট বইয়ের কথক এইসব খটকা বা সংশয় দূর করার জন্য তাঁর
মেজদার ওপর নির্ভর করছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, মেজদাকে খুঁচিয়ে তিনি এইসব প্রশ্নের
উত্তর জেনে নিতে পারবেন।
২.৩)'বলবে কী, তোমরাও নোট বই পড়োনি!'— নোট বই পড়লে আর কী কী জানা যাবে?
উত্তর: ফড়িঙের কটা পা, আরশোলা কী কী খায়, আঙুলে আঠা লাগলে আঙুল কেন চটচট
করে, কাতুকুতু দিলে গোরুর ছটফট করার কারণ কী ইত্যাদি বিষয়গুলি কথক দেখে এবং
শিখে নোট বইয়ে লিখেছেন। এ ছাড়াও জোয়ানের আরকে ঝাঁঝ থাকা, তেজপাতায় তেজ
থাকা বা লংকার ঝাল হওয়ার প্রকৃত রহস্য কী, তা নোট বই থেকেই জানা সম্ভব। এর বাইরেও
নোট বই থেকে পাঠক আরও অনেক কিছু জেনে নিতে পারবেন। যেমন,পেট কামড়ানোর
কিংবা নাক ডাকার আসল কারণ বা পিলে চমকানোর ব্যাখ্যা অথবা ‘দুন্দুভি' কার নাম এবং
‘অরণি' কাকে বলে-এই সব কিছুই।
৩)নির্দেশ অনুসারে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও।
৩.১) ভালো কোনো কথা শুনলে কবিতার লোকটি কী করে?
উত্তর: 'নোট বই' কবিতার লোকটি ভালো কোনো কথা শুনলেই তা নিজের নোট বইয়ে
তাড়াতাড়ি করে লিখে নেন।
৩.২) তার শোনা কয়েকটি ভালো কথার নমুনা কবিতা থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো।
উত্তর: 'নোট বই' কবিতায় উল্লিখিত ব্যক্তিটির শোনা ভালো কথার কয়েকটি নমুনা হল
ফড়িঙের কটা ঠ্যাং, আরশোলা কী কী খায়, আঙুলে আঠা দিলে কেন আঙুল চটচট করে
এবং কাতুকুতু দিলে গোরু কেন ছটফট করে।
৩.৪) কিলবিল, ছটফট, কটকট, টনটন—এগুলি কী ধরনের শব্দ?
উত্তর: প্রশ্নে উল্লিখিত শব্দগুলির সবকটিই হল- ধ্বন্যাত্মক শব্দ।
৩.৪) 'মাথাঘামানো' এই বিশিষ্টার্থক শব্দবন্ধের অর্থ কী ?
উত্তর: ‘মাথাঘামানো' এই বিশিষ্টার্থক শব্দবন্ধটির অর্থ হল মস্তিষ্ক ব্যবহার করা অর্থাৎ বুদ্ধি
খাটানো।
৩.৫) ভালো কোনো প্রশ্ন মনে এলে বক্তা কার সাহায্য নিয়ে সেগুলির উত্তর জেনে নেন ?
উত্তর: ভালো কোনো প্রশ্ন মনে এলে বক্তা তাঁর নোট বুকে প্রশ্নটি গুছিয়ে লিখে রাখেন।
তারপর সময়মতো তাঁর মেজদার কাছ থেকে তার উত্তরটা জেনে নেন।
৩.৬) মানুষের কাছে নোট বই থাকাকে কি তুমি জরুরি বলে মনে কর?
উত্তর: হ্যাঁ, মানুষের কাছে নোট বই থাকা অবশ্যই জরুরি। তাতে, সমস্ত দরকারি বিষয়ই
তাড়াতাড়ি নোট করে বা লিখে রাখা যায়।
৩.৭) তুমি যদি নোট বই কাছে রাখ, তাতে কী ধরনের তথ্য লিখে রাখবে ?
উত্তর: নোট বই কাছে রাখলে আমি তাতে আমার না-জানা এবং নতুন নতুন প্রয়োজনীয় তথ্য
লিখে রাখব।
৩.৮ ‘জোয়ান' শব্দটিকে দুটি অর্থে ব্যবহার করে আলাদা বাক্য লেখো।
উত্তর: হজম করা মশলা-বিশেষ-খাওয়াদাওয়ার পর অনেকে হজমি হিসেবে জোয়ান খান।
বলিষ্ঠ যুবক–ঋজুর মতো জোয়ান ছেলে, কাছে থাকায় মধুবাবু একেবারে দুশ্চিন্তামুক্ত।
৩.৯) ‘আগাগোড়া' এমন বিপরীতার্থক শব্দের সমাবেশে তৈরি পাঁচটি শব্দ লেখো।
উত্তর: আশা-নিরাশা, বাদ-প্রতিবাদ, ধনী-দরিদ্র, দিন-রাত, জয়-পরাজয়।
৩.১০) কবিতাটিতে কোন কোন পতঙ্গের উল্লেখ রয়েছে?
উত্তর: কবিতাটিতে ফড়িং এবং আরশোলার উল্লেখ রয়েছে।
৩.১১) কবিতায় উত্থাপিত কোন্ কোন্ প্রশ্নের উত্তর তুমি জান?
উত্তর: কবিতায় উল্লিখিত প্রশ্নগুলির মধ্যে 'ফড়িঙের কটা ঠ্যাং' এবং 'ঝাল কেন লঙ্কায়'-এর
উত্তর আমার জানা। ফড়িঙের ছটা ঠ্যাং থাকে আর লংকায় ক্যাপসিসিন নামক রাসায়নিক
পদার্থ উপস্থিত থাকায় এটি ঝাল হয়।
CONTENTS:
আরো পড়ুন:
ছন্দে শুধু কান রাখো কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
পাগলা গনেশ গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
বঙ্গভূমির প্রতি কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
একুশের কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
আত্মকথার প্রশ্ন উত্তর Click Here
খোকনের প্রথম ছবি প্রশ্ন উত্তর Click Here
কুতুব মিনারের কথা প্রশ্ন উত্তর Click Here
মেঘ চোর গল্পের প্রশ্ন উত্তর প্রথম Part Click Here
মেঘ চোর গল্পের প্রশ্ন উত্তর দ্বিতীয় Part Click Here
স্মৃতিচিহ্ন কবিতার প্রশ্ন উত্তর click Here
নোট বই কবিতার প্রশ্ন উত্তর click Here
0 Comments