কর্তার ভূত
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সূচিপত্র
ক। কবি পরিচিতি
খ। কবিতার উৎস
ঘ। কবিতার পূর্ব কথা
ঙ। সারসংক্ষেপ
চ। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখ(MCQ) প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
ছ। অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(SAQ)২০টি শব্দের মধ্যে প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
ঝ। বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী বা বড়োপ্রশ্নোত্তর ১৫০টি শব্দের মধ্যে উত্তর দাও।
e-bookap পেজটি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সুখবর-1st- ইউনিট,2nd ইউনিট,3nd ইউনিট,টেস্ট ফাইনাল পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্যগুরুত্বপূর্ণভাবে তোমাদের সাহায্য করবে।তাই এই সাফল্য আমাদের কাছে বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে
ক । কবি পরিচিতি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এর উদ্দেশ্যে শরৎচন্দ্র লিখেছিলেন-'কবিগুরু তোমার প্রতি
চাহিয়া আমাদের বিস্ময়ের সীমা নাই,।একইসঙ্গে তিনি গল্পকার'উপন্যাসিক,নাট্যকার,নাট্যপরিচালক,
গীতিকার,চিত্রশিল্পী,প্রাবন্ধিক,শিক্ষক,শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এর প্রতিষ্ঠাতা প্রভৃতি। তাঁর সৃষ্টিশীলতার বহু বিচিত্র
ধারা কেবল দেশবাসীর নয়,বিশ্ববাসীর মনকেও প্লাবিত করেছে।
জন্মও শৈশব:
১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে ৭ই মে কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে রবীন্দ্রনাথের জন্ম। বাবা মহর্ষি
দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর,মা সারদা দেবী।পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর ছিলেন সেকালের বিখ্যাত ধনী ব্যক্তি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন বাবা মায়ের ১৪ তম সন্তান। ঠাকুর পরিবারে সাহিত্য শিল্প ও সংগীত চর্চার যে
পরিবেশ ছিল,রবীন্দ্রনাথ তার মধ্যে ধীরে ধীরে বড়ো হয়ে উঠেছিলন।
ছাত্র জীবন:
বালক রবীন্দ্রনাথের ছাত্র জীবন শুরু হয় ওরিয়েন্টাল সেমিনারিতে। তবে প্রশান্ত কুমার পালের মতে
রবীন্দ্রনাথের ছাত্র জীবন আরম্ভ হয় ক্যালকাটা ট্রেনিং একাডেমিতে। কিন্তু প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতিতে
বালক রবীন্দ্রনাথের মন বসত না। সেজন্য বারবার বিদ্যালয় পরিবর্তন করলেও বিদ্যালয়ের পড়া তিনি
শেষ করে উঠতে পারেননি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ না করলেও তিনি অবশ্য বাড়িতে যোগ্য গৃহ
শিক্ষকদের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠ গ্রহণ করেছিলেন।
সাহিত্যকর্মের সূচনা:
অল্প বয়সেই রবীন্দ্রনাথ কবিতা লিখতে শুরু করেন। তাঁর কবিতা রচনা কিভাবে শুরু হল, সে বিষয়ে
'জীবনস্মৃতি,গ্রন্থে তিনি বলেছেন'আমার বয়স তখন সাত-আট বছরের বেশি হইবে না,। শিশু রবীন্দ্রনাথ
কবিতার পাশাপাশি প্রবন্ধ,গান,নাটক,উপন্যাস, ছোটগল্প প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাঁর অসাধারণ প্রতিভার বিকাশ
ঘটতে থাকে।
ব্যক্তিজীবন:
১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে ১৮ বছর বয়সের রবীন্দ্রনাথকে ইংল্যান্ডে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। সেটাই তাঁর প্রথম
বিলাত- যাত্রা। সেখানে ভর্তি হন University College Londonএর faculty of arts and laws বিভাগে। কিন্তু
দেবেন্দ্রনাথের নির্দেশে ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি দেশে ফিরে আসেন। তার প্রথমবার বিলাত বাসের
অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা হয়েছে যুরোপ প্রবাসীর পত্র। ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে যশোরের বেণীমাধব রায়চৌধুরীর
কন্যা ভবতারিণী দেবীর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের বিয়ে হয়। ঠাকুর বাড়িতে ভবতারিণীর নতুন নামকরণ হয়
মৃলালিনী। রবীন্দ্রনাথের নতুন দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথের স্ত্রী কাদম্বরী দেবী রবীন্দ্রনাথকে যেমন স্নেহ
করতেন তেমনি তাকে সাহিত্যচর্চরাতেও উৎসাহিত করতেন। রবীন্দ্রনাথ বহু রচনায় কাদম্বিনী দেবীর
স্মৃতি ছড়িয়ে আছে। ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে বাবার নির্দেশে রবীন্দ্রনাথকে জমিদারি দেখাশোনার দায়িত্ব নিতে
হয়। জমিদারি দেখভালের সূত্রে তিনি বেশ কিছু সময় পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত শিয়ালদহ,শাহজাদপুর
প্রভৃতি অঞ্চলে বসবাস করেন। রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন ছদ্মনাম এর মধ্যে ভানুসিংহ ঠাকুর, আন্নাকালী
পাকড়াশী, শ্রীমতি কনিষ্ঠা প্রভৃতি ছিল উল্লেখযোগ্য।
কর্মজীবন:
সাহিত্যকর্ম ছাড়া অন্যান্য নানা রকম কাজকর্মের সঙ্গেও রবীন্দ্রনাথ জড়িত ছিলেন। ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে
প্রাচীন ভারতীয় তপবনের আদর্শে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। মাত্র ৫
জন ছাত্র নিয়ে শুরু হয় এই বিদ্যালয়ের কাজ। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে এই প্রতিষ্ঠানটি পরিণত হয় বিশ্বভারতী
বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে দেশের মধ্যে যে রাজনৈতিক
উত্তেজনার সৃষ্টি হয়, রবীন্দ্রনাথ তাতেও জড়িয়ে পড়েন। রচনা করেন'বাংলার মাটি বাংলার জল,গানটি।
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি'নাইট,উপাধি ত্যাগ করেন।
উল্লেখযোগ্য রচনা:কাব্যগ্রন্থ:
রবীন্দ্রনাথের নিজের নামে প্রকাশিত প্রথম কবিতাটির নাম হিন্দু মেলার উপহার। ১৮৮২ তে প্রকাশিত
'সন্ধ্যাসংগীত,নামের কাব্যটি থেকে তাঁর নিজস্ব রচনাশৈলীর সন্ধান পাওয়া যায়। তাঁর প্রধান কাব্যগ্রন্থ
গুলি হল-মানসী,সোনারতরী,চিত্রা,কল্পনা, ক্ষণিকা,খেয়া,গীতাঞ্জলি,গীতিমাল্য,গীতালি,বলাকা,
পত্রপুট,আকাশপ্রদীপ,শেষলেখা প্রভৃতি।
নাটক:
রবীন্দ্রনাথের রচিত প্রথম নাটকটির নাম রুদ্রচন্দ্র। প্রথম গীতিনাট্য বাল্মিকী প্রতিভা। এছাড়াও রাজা ও
রানী,বিসর্জন,শারদোৎসব,ডাকঘর,রাজা, ফাল্গুনী,মুক্তধারা,রক্তকরবী প্রভৃতি তাঁর উল্লেখযোগ্য নাটক।
উপন্যাস:
রবীন্দ্রনাথের প্রথম উপন্যাসটি হল করুণা। এছাড়াও তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস গুলি হল-
চোখেরবালি,গোরা,চতুরঙ্গ,যোগাযোগ,শেষের কবিতা,চারঅধ্যায় প্রভৃতি।
ছোটগল্প:
রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত কয়েকটি ছোট গল্প হল পোস্টমাস্টার নষ্টনীড়,দেনাপাওনা,ছুটি,ক্ষুধিত
পাষাণ,গুপ্তধন ইত্যাদি।
প্রবন্ধ:
তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ গুলি হল-চিন্তাশীল, স্বদেশ,সমাজ,শিক্ষা,মানুষেরধর্ম,কালান্তর প্রভৃতি।
সম্মান ও স্বীকৃতি:
রবীন্দ্রনাথ তার সাহিত্য কীর্তি জন্য বহু পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন। ইংরেজি ভাষায়
গীতাঞ্জলি'Song Offering,এর জন্য ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে ১৩ ই নভেম্বর তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
জীবনাবাসান:
১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে সাতই আগস্ট জোড়াসাঁকোয় তাঁর মৃত্যু হয়।
খ। উৎস:
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত 'কর্তার ভূত,ছোট গল্পটি'লিপিকা,কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
গ। বিষয়বস্তু:
বুড়োকর্তা মারা যাওয়ার সময় দেশের সমস্ত লোক তাঁকে জানালো যে,তিনি চলে যাওয়ার পর তাদের
অবস্থা করুণ হয়ে পড়বে। এ কথা শুনে বুড়োকর্তা দুঃখ পেলেন। তিনি চলে যাওয়ার পর দেশের লোক
কীভাবে নিশ্চিন্তে থাকবে-সেই বিষয়টি তাঁকে খুব ভাবিয়ে তুলল। ভগবান তাই দয়ালু হয়ে জানালেন যে,
চিন্তার কিছু নেই। কর্তাই আবার ভূত হয়ে দেশের লোকের ঘাড়ে চেপে থাকবে। কারণ মানুষের মৃত্যু
থাকলেও ভূতের মৃত্যু নেই। এ কথা শুনে দেশের লোক খুব নিশ্চিন্ত হল। কারণ ভবিষ্যৎকে বা
আগামীকে মেনে নিতে হলে ভাবনা-চিন্তার প্রশ্ন আসে কিন্তু ভূতকে বা অতীতকে মানার জন্য তেমন
কোন চিন্তা-ভাবনা থাকে না। আবার কিছু মানুষ আছে যারা নিজের মতো করে কিছু চিন্তা ভাবনা করে
তাদের ভূতের কানমলা খেতে হয়। বিনা অপরাধে শাস্তির জন্য কোথাও অভিযোগ করতে গেলে ভূতের
বিরুদ্ধে বিচার করার কোন ব্যবস্থা নেই। দেশের সমস্ত লোক ভূতের ভয়ে চোখ বুঝে জীবন কাটাতে
থাকে। দেশের তত্ত্বজ্ঞানী মানুষেরা বলেন- চোখ বুজে চলাই হল পৃথিবীর অতি প্রাচীন চলা। সৃষ্ট পৃথিবীর
প্রথম যুগে অন্ধ এককোষী প্রাণীরা তেমনভাবেই চলত। ঘাস থেকে শুরু করে সমস্ত প্রকারের উন্নত
গাছের মধ্যে তেমনই চলার ইঙ্গিত দেখতে পাওয়া যায়।
তত্ত্ব জ্ঞানীদের এই তত্ত্ব কথা শুনে ভূতে পাওয়া দেশবাসী তাদের সুপ্রাচীন আভিজাত্যকে উপলব্ধি করে।
নিজেদের ঐতিহ্যের এই বিস্তারে তারা আনন্দিত হয়।
ভূতের প্রতিনিধি কারাগারের দারোগা, সেই কারাগারের প্রাচীর কিন্তু চোখে দেখা যায় না। এই কারণে
যেখানে যেসব মানুষ বন্দী থাকে,তারা বুঝে উঠতে পারে না যে, কীভাবে সেই প্রাচীর ছিদ্র করে সেখান
থেকে বেরিয়ে আসবে? ভূত নিয়ন্ত্রিত কারাগারেও অপরাধীদের ঘানি ঘরাতে হয়। তবে অবিরাম ঘুরিয়েও
সেখানকার ঘানি থেকে একছটা তেলও বের হয় না,যে তেল হাটে বিক্রি হবে। সেই ঘানি ঘোরালে বের
হয় কেবল ঘানি চালকের তেজ ও শক্তি। সেই শক্তি শরীর থেকে বেরিয়ে গেলে মানুষ ঠান্ডা হয়ে যায়।
ফলে ভূতের রাজত্বের এই ব্যবস্থায় মানুষের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের সংস্থান হয়তো হয় না, কিন্তু সমাজে
শান্তি বিরাজ করে।
অন্য দেশ গুলিতে যেখানে ভূতের উপদ্রব দেখলে মানুষ চিন্তাগ্রস্ত হয়ে ওঝার খোঁজ করে, এদেশের
মানুষের সে খোজ খবরও নেই। এই দেশের ও যাদের অর্থাৎ যাদের ভুত তাড়ানোর কথা, তাদের আগে
থেকেই ভূতে পেয়ে বসেছে।
খুব সাধারন একটা ভাবনার কারণে একটা অসুবিধার সৃষ্টি হল,পৃথিবীর অন্যদেশের মানুষদের তো ভূতে
পায়নি। তাই অন্য দেশগুলিতে জেলের বাইরে ঘানি থেকে যে তেল বের হয় তা ঐ দেশের রথের
চাকাকে সচল করে রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়। তারা অত্যন্ত সজাগ রয়েছে।
এই ভূতের রাজ্যে'খোকা ঘুমালো পাড়া জুড়োলো,- এ ছেলে ভুলানো ছড়া। এমন ছড়া খোকার পক্ষে
ভালো এবং খোকার বাবার পক্ষেও ভালো।দোষ থাক আর না থাক বাড়ির আশেপাশে রাস্তাঘাটে সব
জায়গায় ঘুরে বেড়ায় ভূতের পেয়াদা। ভুতের পেয়াদাদের সঙ্গে দেখা হলে'খাজনা দাও,
উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম-চারদিক থেকে আসা বুলবুলি পাখির যে এতদিন ধরে সমস্ত ধান খেয়ে গেল সে
ব্যাপারে কারও চেতনা ছিল না। সচেতন দেশবাসী যারা তাদের সঙ্গে সাধারণ দেশবাসী ঘনিষ্ঠ হতে চাই
না।
তাদের কথা শুনে প্রশ্নকারীরা বলে যে সাম্প্রতিককালে বুলবুলির শ্রেণী এবং বর্গির দলের হাত থেকে রক্ষা
পাওয়ার তো তাহলে কোন উপায় নেই। উত্তরে মাসি পিসিরা জানায় যে বুলবুলির ঝাঁক এবং বর্গীয়
দলকে কৃষ্ণনাম শোনাতে হবে। নবীন সম্প্রদায় গর্জে ওঠে বলে তারা যেমন করে হোক ভূত তাড়াবে।
এই কথা শুনে ভূতের প্রতিনিধি সবাইকে চুপ করতে বলে। কিন্তু আসল কথাটা হলো এই যে বুড়োকর্তা
জীবিত নন, মৃতও নন, কেবল প্রেত হয়ে আছেন। তিনি দেশটাকে অদৃশ্য বাঁধনে বেঁধে রেখেছেন। যদিও
দেশের ভালো-মন্দ নিয়ে তার কোন হেলদোল নেই।
দেশের দু-চারজন মানুষ দিনের বেলায় ভূতের ভয়ে মুখে রা না কাড়লেও গভীর রাতে জোড় হাতে
বুড়োকর্তার প্রেতকে ব্যাকুল ভাবে প্রশ্ন করে যে তাদের মুক্তি দেবার সময় কি তার তখনও হয়নি। উত্তরে
বুড়ো কর্তা তাদের বলেন যে তিনি দেশবাসীকে ধরেও রাখেননি, ছেড়েও দেননি। তারা তাকে ছাড়লে
তবেই তিনি ছেড়ে যাবেন। সে কথা শুনে সেই লোকেরা জানাই যে তেমনটা করতে তারা যে ভয় পায়।
বুড়ো কর্তা তখন বলে যে সেই ভয়ের মধ্যেই তো ভূত বাস করে।
ঘ। নামকরণ:
সাধারণত বিষয়বস্তু স্থান-কাল চরিত্র এবং ব্যঞ্জনার দিকে লক্ষ্য রেখে সাহিত্যে নামকরণ করা হয়।এটি
পাঠকের কাছে রচনাটিতে প্রবেশের একমাত্র চাবিকাঠি, তাই সাহিত্য রচনায় নামকরণের গুরুত্ব
অপরিসীম।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা লিপিকা গ্রন্থের অন্তর্গত কর্তার ভূত আসলে একটি রূপকধর্মী
ছোটগল্প।এইগল্পে রূপকের আড়ালে প্রাচীন সভ্যতার অন্ধ কুসংস্কার এর কারাগারে বন্দি থাকা মৃত
ভারতবাসীর কথাবর্ণনা করা হয়েছে। বুড়োকর্তার মৃত্যুকালে ভারতবাসী অভিভাবকহীন হয়ে পড়ার ভয়
অনুভব করলে দেবতার দয়ায় বুড়োকর্তার প্রেত হয়ে তাদের ছত্রছায়া হয়ে থাকবেন।। ফলে তাদের
অন্য বস্ত্র বাসস্থানেরশুরু হয় না হলেও তারা শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। দু একজন মানুষ মৌলিক
চিন্তায় ভাবিত হলেতাদের কপালে জুটলো ভূতের কানমুলা। অর্থাৎ শাস্তি। ভুতুড়ে জেলখানার দেওয়াল
চোখে দেখা যায় না বলে, সেই কারাগার থেকে বেরোবার উপায় ও কারো জানা নেই। আর এই
জেলখানার ঘানি ঘোরালে শুধু মানুষের তেজ বের হয়। তাই ভুতরের কাজ জেলখানার কয়েদিরা ঠান্ডা
থাকে,শান্তিতে থাকে। শিরোমনি চূড়া মনির দল দেশবাসীকে জানাই যে-'বেহুশ যারা তারাই পবিত্র,
হুঁশিয়ার যারা তারাই অশুচি,। দেশের কয়েকজন বুড়োকর্তার ভূতের কাছে মুক্তির আবেদন করলে তিনি
জানান যে'তোরা ছাড়লে আমার ছাড়া,।এইভাবে কর্তার ভূত রচনাটিতে লেখক কর্তা তথা প্রাচীন
সভ্যতার ভুত তথা অন্ধকুসংস্কারআচ্ছন্নতার কথা আলোচনা করেছেন।অতএব এই আলোচনার মাধ্যমে
আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে কর্তার ভূত- রূপক ধর্মী ছোটগল্পেরনামকরণটি অবশ্যই শিল্পসম্মত এবং
সার্থক হয়েছে।
একাদশ শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর click here
তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর click here
আগুন নাটকের প্রশ্ন উত্তর click here
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান আলোচনা করো। Click here
আড্ডা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click here
পঁচিশে বৈশাখ প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click
0 Comments