আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা । আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার প্রশ্ন উত্তর। Class 10 bengali আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি। আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার সারাংশ।




আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার। আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার প্রশ্ন উত্তর।


 আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি

                                               শঙ্খ ঘোষ

১। সূচিপত্র:

।লেখক পরিচিতি

খ কবিতার উৎস:

গ। কবিতার সারসংক্ষেপ:

ঘ।কবিতার নামকরণ:

ঙ।সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখ।(MCQ) প্রতিটি প্রশ্নের মান-১

চ।অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।(SAQ)-২০টি শব্দের মধ্যে। প্রতিটি প্রশ্নের মান-১

ছ। ব্যাখ্যা ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর। ৬০টি শব্দের মধ্যে।প্রতিটি প্রশ্নের মান-৩

জ।বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী বা বড়ো প্রশ্নোত্তর। ১৫০টি শব্দের মধ্যে। প্রতিটি প্রশ্নের মান-৫


e-bookapপেজটিছাত্রছাত্রীদেরজন্যসুখবর-1stইউনিট,2ndইউনিট,3nd ইউনিট,টেস্ট,ফাইনাল

পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণভাবে তোমাদের সাহায্য করবে। তাইএই সাফল্য আমাদের

কাছে বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।


ক। কবি পরিচিতি: শঙ্খ ঘোষ

আধুনিক যুগের শ্রেষ্ঠ কবি শঙ্খ ঘোষের প্রকৃত নাম চিত্তপ্রিয় ঘোষ।তিনি একাধারে

কবি,প্রাবন্ধিক ও অধ্যাপক।১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ৬ফেব্রুয়ারি অধুনা বাংলাদেশের অন্তর্গত

 চাঁদপুরে তাঁর জন্ম হয়।পিতা মণীন্দ্রকুমার ঘোষ এবং মাতা অমলাবালা দেবী।পিতা-মাতার

 চতুর্থ সন্তান চিত্তপ্রিয়ের শৈশব শিক্ষার শুরু বাড়িতেই।পিতা ছিলেন স্কুলের প্রধানশিক্ষক।

বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হওয়ার পর সকলেই তাঁরা কলকাতায় চলে আসেন।১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে

 প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আই এ পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন এবং ওই একই কলেজ

 থেকে ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে বিএপরীক্ষায় পাস করেন এবং তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা

 ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি কলকাতায় বঙ্গবাসী কলেজ,সিটি

 কলেজ,যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লি ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বহুদিন অধ্যাপনা

 করেছেন। ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।তাঁর

 রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ‘দিনগুলি রাতগুলি,এরপর একে একে প্রকাশিত হয়- ‘নিহিত পাতাল

 ছায়া,এখন সময় নয়,শ্রেষ্ঠ কবিতা,আদিম লতা গুল্মময়,মূর্খ বড়ো,সামাজিক নয়,বাবরের

 প্রার্থনা,পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ,প্রহর জোড়া ত্রিতাল’ইত্যাদি। তাঁর রচিত অন্যতম

 প্রবন্ধগ্রন্থগুলির মধ্যে ‘কালের সাহিত্যসৃষ্টিমাত্রা ও রবীন্দ্র নাটক,'ছন্দময় জীবন ইত্যাদি

 উল্লেখযোগ্য।এ ছাড়া ছোটোদের জন্য রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল-‘অল্পবয়স

 কল্পবয়স,ছোট্ট একটা স্কুল,সুপুরিবনের সারি,সকালবেলার আলো,শহর পথের ধুলো’-এ ছাড়া

 তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল-‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে,এ আমির আবরণ,উর্বশীর

 হাসি,প্রভৃতি।কবি শঙ্খ ঘোষ একজন বলিষ্ঠ অনুবাদকও।কবিতা লেখার পাশাপাশি তিনি প্রায়

 ত্রিশ বছর অনুবাদকর্ম করেছেন। তিনি ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে ‘মূর্খ বড়ো,সামাজিক নয়

 কাব্যগ্রন্থের জন্য নরসিংহ দাস পুরস্কার এবং ‘বাবরের প্রার্থনা কাব্যগ্রন্থটির জন্য সাহিত্য

 অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে ‘ধুম লেগেছে হৃদকমলে’কাব্যগ্রন্থটি

 রবীন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত হয়। তিনি সরস্বতী পুরস্কার পান ‘গন্ধর্ব কবিতাগুচ্ছর জন্য পুরস্কারে

 ভূষিত হন।১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে ‘রক্তকল্যাণ অনুবাদের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ

 করেন।১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতীর দ্বারা দেশিকোত্তম পুরস্কার পান।তিনি ২০১১ খ্রিস্টাব্দে

 ভারত সরকার কর্তৃক 'পদ্মভূষণ,উপাধিতে  সম্মানিত হন।২০১৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষের

 সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার‘জ্ঞানপীঠ,পুরস্কার লাভ করেন।


খ। কবিতার উৎস

শঙ্খ ঘোষের রচিত'জলই পাষাণ হয়ে আছে,কাব্যগ্রন্থ থেকে'আয় আরো বেঁধে বেঁধে

থাকি,কবিতাটি নেওয়া হয়েছে।


গ। কবিতার সারসংক্ষেপ:

আমাদের পৃথিবী আজ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।সাম্রাজ্যবাদীর দল এবং তাদের

 অমানবিক অত্যাচার ইত্যাদির প্রেক্ষাপটে কবি শঙ্খ ঘোষ রচিত‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে

 থাকি,কবিতাটি রচনা করেন।আমাদের ডান বা বাম উভয় দিকেই রয়েছে ধ্বংসের মৃত্যুর

 হাতছানি।মাথার ওপরে বা পায়ের নীচে প্রতিমুহূর্তে মৃত্যু নিশ্চিত স্বপ্ন দেখে তারা। তারা

 নানারকম সমস্যায় জর্জরিত ফলে তাদের বেঁচে থাকাই সমস্যার হয়ে যাচ্ছে।এই অবস্থায়

 মানুষ ভয়ংকর বিপদে পড়ে গেছে। ভালো রাস্তা খুঁজে নেওয়ার মতো কোনো ইতিহাসও

 আমাদের নেই।কেন-না ইতিহাস এখানে সাম্রাজ্যবাদীদের হাতের পুতুল।তাই তারা

 প্রতিমুহূর্তে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার জন্য এবং বিরোধী শক্তিকে আটকাতে ঐক্য হয়ে চলতে

 হবে। আমরা অন্যের গোলামী করতে গিয়ে আমাদের যে সংস্কৃতি মান সম্মান ইজ্জত সব

 কিছু যেন তাদের পায়ের নিচে দলিত হয়েছে।নিজেদের সমাজের সব কিছু ভালোমন্দ ভুলে

 অন্যের চাপিয়ে দেওয়া ইতিহাসকে গ্রহণ করে আমার বেঁচে আছি। এই বেঁচে থাকার

 আড়ালে আরলে ভিক্ষা করা ছাড়া আর কিছু নেই।এরই মধ্যে দু-চারজন শুভবুদ্ধিসম্পন্ন

 মানুষ এখনও আছেন,যাঁরা মানুষে মানুষে একাত্মতার কথা বলেন। এই একতায় হল

 আমাদের পৃথিবীর সম্পদ।পারস্পরিক ভালোবাসায় সমাজ বা সভ্যতাকে বাঁচাতে পারে। তাই

 কবি সকলকে এই চেষ্টা করতে বলেছেন।


ঘ। কবিতার নামকরণ

নামকরণ যে-কোনো সাহিত্যিক রচনায় প্রবেশের চাবিকাঠি।তাই সাহিত্যে নামকরণ খুবই

 গুরুত্বপূর্ণ বিষয়,আর এই নামকরণ নানান দিক থেকে হতে পারে।আমাদের আলোচ্য'আয়

 আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’কবিতাটির নামকরণ কতখানি প্রাসঙ্গিক তা বিচার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

নানারকম সংকটের মধ্য দিয়ে আজকের পৃথিবী এগিয়ে চলেছে।সাম্রাজ্যবাদী

 আগ্রাসন,ধর্মান্ধতা ইত্যাদি বিষয়গুলি মানবতার বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। এই অবস্থায় মানুষের

 অস্তিত্বই আজ সংকটের সামনে।প্রেরণা খুঁজে নেওয়ার মতো কোনো ইতিহাসও আমাদের

 নেই,কারণ ইতিহাস এখানে ক্ষমতাবানদের দ্বারা বিকৃত।তাই অন্ধ ও ভিখারি হয়ে বেঁচে

 থাকাই আজ মানুষের নিয়তি।সাধারণ মানুষ এখানে কোনো মর্যাদাই পায় না।তবুও যাবতীয়

 শুভবুদ্ধির অবসান এখনও হয়নি।সংখ্যায় অল্প হলেও কিছু মানুষ আজও সম্প্রীতির কথা

 বলে,মানুষে মানুষে মিলনের কথা বলে,'আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি,-কবিতার দুটি স্তবকে

 ধ্রুবপদের মতো পঙ্ক্তিটিকে দু-বার ব্যবহার করেছেন কবি। মিলনের আকাঙ্ক্ষা এতে

 আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।ব্যঞ্জনার দিক থেকে নামকরণটি তাই অত্যন্ত সার্থক হয়েছে।


ঙ।সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখ।(MCQ) প্রতিটি প্রশ্নের মান-১


১।আমাদের ডান পাশে-

ক) খাদ

খ) ধ্বস

গ) প্রান্তর

ঘ) বন

উত্তর:(খ) ধ্বস


২।আমাদের বাঁয়ে রয়েছে-

ক) গিরিখাত 

খ)বোমারু বিমান

গ) পর্বত

ঘ) অরণ্য

উত্তর:(ক) গিরিখাত


৩। আমাদের মাথায়-

ক) গিরিখাদ

খ) বোমারু

গ) পর্বত

ঘ) খাদ

উত্তর:(খ) বোমারু


৪। আমাদের ‘পায়ে পায়ে’ রয়েছে-

ক) ভারী জুতো

খ) হিমানীর বাঁধ

গ) কাঁটা তার

খ) ভিক্ষুকের দল

উত্তর:(খ) হিমানীর বাঁধ


৫।পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ—‘হিমানী শব্দের আক্ষরিক অর্থ-

ক) জল

খ) আগুন

গ) তুষার

ঘ) পর্বত

উত্তর:(গ) তুষার


৬।‘আমাদের পথ’-

ক) নেই

খ) ফাঁকা পড়ে আছে

গ) তৈরি করতে হবে

ঘ) জনাকীর্ণ হয়ে আছে

উত্তর:(ক) নেই


৭।আমাদের ঘর গেছে উড়ে—কীসের দ্বারা উড়ে গেছে?

ক) বন্যার দ্বারা

খ) বোমারুর দ্বারা

গ) যুদ্ধের দ্বারা

ঘ) ভূমিকম্পের দ্বারা

উত্তর:(খ) বোমারুর দ্বারা


৮।কাছে ও দূরে কী ছড়ানো আছে?

ক) বোমারু বিমানের ভগ্নাংশ

খ) যুদ্ধে মৃত মানুষের দেহ

গ)শিশুদের শব

ঘ) কবির আত্মীয়স্বজনের মৃতদেহ

উত্তর:(গ) শিশুদের শব


৯। “আমাদের পথ নেই আর”—উদ্ধৃতাংশে পথ না থাকার অর্থ হল—

ক) কোনো উপায় নেই

খ) কোনো খাদ্য নেই

 গ) বাসস্থান নেই

 ঘ) কোনো ইতিহাস নেই

উত্তর:(ক) কোন উপায় নেই


১০।আমরা ভিখারী কত মাস বলে কবির মত?

ক) পাঁচ মাস

খ) ছ-মাস

গ)আট মাস

ঘ) বারো মাস

উত্তর:(ঘ) বারো মাস


চ।অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।(SAQ)-২০টি শব্দের মধ্যে। প্রতিটি প্রশ্নের মান-১

 

 ১।‘ডান পাশে ধ্বস’ ও ‘বাঁয়ে গিরিখাদ বলতে আসলে কবি কী বুঝিয়েছেন?

উত্তর:'আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় ‘ডান পাশে ধ্বস’ ও ‘বাঁয়ে গিরিখাদ’ বলতে

কবি আসলে মানুষের পদে পদে বিপদ এবং পতনের আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেছেন।


২।‘আমাদের ডান পাশে ধ্বস’– ‘ধ্বস’শব্দটির আক্ষরিক অর্থ কী?

উত্তর: শঙ্খ ঘোষের রচিত'জলই পাষাণ হয়ে আছে,কাব্যগ্রন্থ থেকে'আয় আরো বেঁধে বেঁধে

থাকি,কবিতাটি নেওয়া হয়েছে

আলোচ্য অংশে,ধ্বস শব্দটির আক্ষরিক অর্থ- খসে পড়া। পাঠ্য কবিতায় সাধারণ মানুষের

চলার প্রতি পদে পদে বিপদের সম্ভাবনাকে ফুটিয়ে তুলতে শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।


৩।‘আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ-‘গিরিখাদ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ লেখো।

উত্তর:শঙ্খ ঘোষের রচিত'জলই পাষাণ হয়ে আছে,কাব্যগ্রন্থ থেকে'আয় আরো বেঁধে বেঁধে

থাকি,কবিতাটি নেওয়া হয়েছে

আলোচ্য অংশে,গিরিখাদ হল- দুই পর্বতের মাঝে সৃষ্ট গভীর খাদ।পাহাড়ি পথের

বিপৎসংকুলতার মতোই বর্তমান বিশ্বে মানুষের জীবনে ছড়িয়ে থাকা প্রতিকূলতাকে

বোঝাতে শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।


৪। ‘আমাদের মাথায় বোমারু বলতে কী বলা হয়েছে?

উত্তর: শঙ্খ ঘোষের রচিত'জলই পাষাণ হয়ে আছে,কাব্যগ্রন্থ থেকে'আয় আরো বেঁধে বেঁধে

 থাকি,কবিতাটি নেওয়া হয়েছে।

আলোচ্য অংশ,যুদ্ধবাজ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যেমন বোমারু বিমান থেকে অতর্কিতে আক্রমণ

চালায়,তেমনই আচমকা আক্রমণে মানুষের জীবন আজ বিপন্ন। কবিতায় সেই বিপন্নতার

কথাই বলা হয়েছে।


৫।‘পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ‘পায়ে পায়ে বলতে কবিতায় কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: শঙ্খ ঘোষের রচিত'জলই পাষাণ হয়ে আছে,কাব্যগ্রন্থ থেকে'আয় আরো বেঁধে বেঁধে

থাকি,কবিতাটি নেওয়া হয়েছ।

কবিতায়‘পায়ে পায়ে বলতে মানুষের প্রতি পদক্ষেপকে বোঝানো হয়েছে। মানুষের চলার

 পথে নানান প্রতিকূলতা প্রতি মুহূর্তে বরফের দেয়ালের মতোই বাধা হয়ে দাঁড়ায়।‘হিমানীর

 বাঁধ সেই বাধার প্রতীক।


 ৬। ‘আমাদের পথ নেই কোনো' বলার কারণ কী?

উত্তর:'আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি,কবিতা অনুসারে বর্তমান পৃথিবীতে মানুষ বড়ো অসহায়

ও নিরুপায়। প্রতিনিয়ত তার চলার পথেরপ্রতিকূলতা এবং দিশাহীনতাকে ফুটিয়ে তুলতেই

কবি এমন মন্তব্য করেছেন।


৭।'আমরাও তবে এইভাবে/এ মুহূর্তে মরে যাব না কি?এ কথা বলার অর্থ কী?

উত্তর: শঙ্খ ঘোষের রচিত'জলই পাষাণ হয়ে আছে,কাব্যগ্রন্থ থেকে'আয় আরো বেঁধে বেঁধে

থাকি,কবিতাটি নেওয়া হয়েছ।

আলোচ্য অংশে,চারদিকের প্রতিকূলতা,হানাদারি শত্রুর আক্রমণে গৃহহারা মানুষ চোখের

সামনে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মৃত্যু দেখে নিজের বেঁচে থাকাতেও সংশয় } প্রকাশ করে ও

হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতি থেকেই সাধারণ মানুষের প্রতিভূ কবির এই উক্তি।


৮। ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি,- বলার কারণ কী?

উত্তর:বিশ্বব্যাপী প্রতিকূলতার মাঝে চারদিকে হতাশার ছবি স্পষ্ট হলেও কবির বিশ্বাস

পারস্পরিক সাহচর্য ও ঐক্যের জোরেই সমস্ত কিছু জয় করা সম্ভব। তাই কবি একতা আর

সংঘবদ্ধতার কথা বলেছেন।


 ৯।‘আমাদের ইতিহাস নেই-এ কথা বলা হয়েছে কেন?

উত্তর:শঙ্খ ঘোষের রচিত'জলই পাষাণ হয়ে আছে,কাব্যগ্রন্থ থেকে'আয় আরো বেঁধে বেঁধে

থাকি,কবিতাটি নেওয়া হয়েছ।

আলোচ্য কবিতায় কবি সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি।আর সাধারণ মানুষ কোনোদিনই

ইতিহাসে স্থান পায় না।তাদের ইতিহাস জনসমক্ষে প্রতিফলিত হয় না।তাই এমন উক্তি।


১০।'আমাদের চোখমুখ ঢাকা,-চোখমুখ ঢাকার কারণ কী?

উত্তর:শঙ্খ ঘোষের রচিত'জলই পাষাণ হয়ে আছে,কাব্যগ্রন্থ থেকে'আয় আরো বেঁধে বেঁধে

থাকি,কবিতাটি নেওয়া হয়েছ।

আলোচ্য অংশে,পৃথিবীর সমস্ত ইতিহাসই ক্ষমতাবানের ইতিহাস।দুর্বল,বিপন্ন মানুষের

ইতিহাস কখনোই সভ্যতার দর্পণে প্রতিফলিত হয় না। প্রকৃত সত্য জেনেও সাধারণ মানুষ

অন্ধ,আসল অবস্থা বুঝেও তারা বোবা। তাই তাদের চোখ মুখ ঢাকা।


১১।আমরা ভিখারি বারো মাস বলার কারণ কী?

উত্তর:শঙ্খ ঘোষের রচিত'জলই পাষাণ হয়ে আছে,কাব্যগ্রন্থ থেকে'আয় আরো বেঁধে বেঁধে

থাকি,কবিতাটি নেওয়া হয়েছ।

আলোচ্য অংশে,সাম্রাজ্যবাদী শক্তির শোষণে নিপীড়িত,বঞ্চিত ও হতভাগ্য জনগণ আজ

আশ্রয় ও জীবিকা হারিয়ে চিরভিখারীতে পরিণত হয়েছে।সেই সঙ্গে প্রতিকূলতা ও যুগযন্ত্রণায়

ভীরু দুর্বল সাধারণ মানুষের সামগ্রিক দৈন্য আজ বড় প্রকট।তাই কবি একথা বলেছে।


ছ। ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ৬০টি শব্দের মধ্যে প্রতিটি প্রশ্নের মান-৩


১।"আমাদের পথ নেই আর”-কেন আর পথ নেই?- ব্যাখ্যা দাও

উত্তর: শঙ্খ ঘোষের লেখা'জলই পাষাণ হয়ে আছে, কাব্যগ্রন্থ থেকে আয় আরো বেঁধে বেঁধে

থাকি কবিতায় বলা হয়েছে,বর্তমান পৃথিবীর এক ভয়ঙ্কর অবস্থার কথা,যেখানে চারপাশে

দেখা যাচ্ছে মৃত্যু অনিবার্য। কোথাও ‘ধ্বস,কোথাও ‘গিরিখাদ, কখনও ‘বোমারু,কখনও বা

‘হিমানী’।ঘরবাড়ি ছাড়া সাধারণ মানুষের দল পরবর্তী প্রজন্মের কাছেও জীবনের প্রতিশ্রুতি

রাখতে পারেনি। ফলে আজ তাদের বুকের মধ্যে মৃত্যুভয়ের বাসা বেঁধেছে।তাই তারা আজ

দিশাহারা, পথহারা।


২।"আমাদের ইতিহাস নেই”-কেন আমাদের ইতিহাস নেই?

উত্তর:আলোচ্য অংশটি শঙ্খ ঘোষের লেখা,জলই পাষাণ হয়ে আছে,কাব্যগ্রন্থ থেকে

সংকলিত ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি,কবিতায়একঅস্থির সময়ের সাধারণ মানুষের কথায়

উঠে এসেছে উক্তিটি। এই মানুষগুলোর চারপাশে প্রতি পদে পদে মৃত্যু ঘুরে বেড়াচ্ছে ।

সন্তানহারা মানুষগুলো তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা তারা পালন

করতে পারিনি।তাদের জন্য কোনো উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথ আর খোলা রেখে যেতে এরা

পারেনি। ভবিষ্যৎ ভয়ংকর বিপর্যস্ত বলে তাদের অতীতও ভয়ংকর অন্ধকার। এই অন্ধকার

 অতীত তাদের ইতিহাস থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে।


৩।"আমাদের কথা কে-বা জানে”-প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: আলোচ্য অংশটি শঙ্খ ঘোষের'জলই পাষাণ হয়ে আছে,কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত

‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি,কবিতায় দিনরাত্রি প্রতিমুহূর্তে যখন মৃত্যুর মিছিলের টের

পাওয়া যাচ্ছে,তখন সাধারণ মানুষ গুলো প্রাণের ভিক্ষা চেয়ে দোরে দোরে  ঘুরে বেড়ায়।

ঘরবাড়ি ছাড়া মানুষগুলো টেরও পায় না বাকি পৃথিবী জুড়ে আদৌ কোথাও জীবনের স্পন্দন

আছে কিনা। এই অসহায় মানুষগুলোর কথা শোনার মত কেউ কি আছে?এই প্রশ্ন বারবার

তাদের মধ্যে উচ্চারিত হয়েছে


৪।"আমাদের মাথায় বোমারু”—উদ্ধৃতিটি কীসের ইঙ্গিতবহন করছে?

উত্তর:কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা'আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি,কবিতায় এক ভয়ংকর সময়ের

ছবি উঠে এসেছে।মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াবে এটাই স্বাভাবিক।এই স্বাভাবিক নিয়ম যখন

ব্যর্থ হয়,তখন জীবনের সামনে এসে দাঁড়ায় হাজার হাজার প্রতিবন্ধকতা। হিংসায় পরিণত

হওয়ার আরেক নাম যুদ্ধ।কবিও লক্ষ করেছেন, মানুষ মারার অস্ত্র,বোমারু বিমান,সেই মৃত্যু-

বিভীষিকার প্রতীক। প্রতিনিয়ত তা ছায়া ফেলে সাধারণ মানুষের উপর।


৫।'আমরা ভিখারি বারোমাস।”—কবির এমন বক্তব্য বলার কারণ কী?

উত্তর:শঙ্খ ঘোষের লেখা জলই পাষাণ হয়ে আছে কাব্যগ্রন্থ থেকে আয় আরো বেঁধে বেঁধে

থাকি কবিতায় কবি এক ভয়ংকর সময়ের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে তিনি দেখেছেন,মানুষের

সমাজ থেকে কীভাবে হারিয়ে যাচ্ছে প্রেম- প্রীতির পরিবেশ। প্রাণের আর্তনাদ পরিণত

হয়েছে ব্যর্থ পরিহাসে। অতীত যেহেতু শূন্যগর্ভ,সেখান থেকে জীবনের কোনো রসদ সংগ্রহ

করা যায় না।এই শূন্যগর্ভে বিপন্ন সাধারণ মানুষকে সর্বশ্রান্ত করে দিয়েছে তাই তারা এখন

সমাজের দ্বারে দ্বারে জীবন ভিক্ষা করে বেড়ায়।


জ। বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী বা বড়োপ্রশ্নোত্তর ১৫০টি শব্দের মধ্যে প্রতিটি প্রশ্নের মান-৫


১।“আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি”–লাইনটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:কবি শঙ্খ ঘোষ রচিত'জলই পাষাণ হয়ে আছে,কাব্যগ্রন্থ থেকে'আয় আরো বেঁধে বেঁধে

থাকি,কবিতাটি গৃহীত।

আলোচ্য অংশে,প্রায় ধ্রুবপদ মতো দুটি স্তবকের শেষেই ফিরে ফিরে এসেছে“আয় আরো

বেঁধে বেঁধে থাকি”পঙ্ক্তিটি।এই কবিতার ছত্রে ছত্রে,পাকে পাকে জড়ানো আছে মৃত্যু

আকাঙ্খারঅনুভূতি।এখানে এই পৃথিবীতে ভয়ংকর পরিস্থিতির ছবি উঠে এসেছে। যেখানে

চারপাশে দাঁড়িয়ে আছে মৃত্যু,এখন ডান, বাম, ওপর,নীচ-কোনো দিকেই তাকানোর উপায়

নেই।কোথাও-বা ধ্বংসের ধস নেমেছে, কোথাও ফাটল ধরেছে জীবনে। মাথার ওপরে প্রতি

মুহূর্তে শক্তির প্রদর্শনী, প্রতি পদে-পদে মৃত্যুর শিউরে ওঠা জীবন।এমনকি, ভবিষ্যৎ

প্রজন্মের কাছেও এই দুঃসময়ের সাধারণ মানুষের জন্য কোনো অঙ্গীকার রেখে যেতে

পারেননি। তাদের স্বপ্নেও নেমেছে অত্যাচার। চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে মৃত সন্তানের শব।

কিন্তু যুদ্ধের পরেও বাঁচার প্রবল আকুলতা নিয়ে আছড়ে পড়ে জীবনের প্রতি ভালোবাসা।

একাকিত্বের এই প্রবল যন্ত্রণা বাঁচার জন্য মানুষ অতীত ইতিহাসকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে

চাই। এই ভয়ংকর সময়ে সাধারণ মানুষ ক্ষুদার্থ তারা ভিখারি বারোমাস। তবু তারা মৃত্যুর

মাঝে বেঁচে থাকতে চাই মানুষকে আঁকড়ে ধরে।তাই বীজ মন্ত্রের মতো বেজে ওঠে অন্তরের

উচ্চারণ আয় আরো হাতে হাত রেখে/ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি।


২।“আমাদের পথ নেই আর"-পথ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? কী কারণে সেই পথ অবরুদ্ধ? কাদের উদ্দেশ্যে কবি কেন বেঁধে বেঁধে থাকার আহবান জানিয়েছেন?

উত্তর:কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা জলই পাষান হয়ে আছে কাব্যগ্রন্থ থেকে আয় আরো বেঁধে

বেঁধে থাকি কবিতায়-‘পথ, বলতেএখানে বাঁচার পথ বা বিপদকে বুঝিয়েছেন।

আলোচ্য অংশে,এক অবক্ষয় সমাজের কথা উঠে এসেছে,যাকে চারিদিক থেকে নাগপাশের

 মত আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে মৃত্যুভয়ের আবহ। মানুষের জীবন বিপন্ন। তার চলার পথ

 নেই। ডান পাশে ধস,বাঁয়ে গিরিখাত, মাথায় বোমারু আর পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ।আগ্রাসী

 ঘাতকের হানায় উড়ে গেছে ঘর, চারিদিকে ছড়ানো রয়েছে শিশুদের মৃতদেহ।হিংসার

 দাবানলে পুড়ে ছাই মানুষের বাঁচার পরিবেশ। পরিচিত মুখগুলো এখন মুখোশে ঢাকা। বিপন্ন

 মানুষ হাতে তুলে নিয়েছে ভিক্ষার পাত্র। এক মুঠো অন্নের জন্য তারা মানুষের দোরে দোরে

 ঘুরছে। এই সীমাহীন বিপন্নতাই মানুষের বাঁচার পথকে অবরুদ্ধ করেছে।

এইভাবে সামাজিক বা রাষ্ট্রিক বিপন্নতা মানুষের মনে হতাশা নিয়ে আসে।বিচ্ছিন্ন করে দেয়

 মানুষের একতা জীবনকে।একশ্রেণির মানুষ নিজেরস্বার্থ সাধনায় মত্ত হয়ে মনুষ্যত্বকে ধ্বংস

 করে দেয়। তারা ভাবে না,অন্য মানুষটাও সমাজের বা রাষ্ট্রের এক অপরিহার্য অঙ্গ। তারা

 বারংবার জোটবদ্ধ মানুষের চলার জীবনের ছক ভেঙে দেয়,মানুষের মধ্যে তৈরি করে

 আতঙ্ক।শান্তি শৃঙ্খলা পরিবেশকে বিনষ্ট করাই তাদের লক্ষ্য। এই অবস্থায় বিপন্ন কি অবস্থা

 সাধারণ মানুষকে হতে হবে আত্মত্যাগী।গড়ে তুলতে হবে প্রতিরোধ।তার জন্য প্রয়োজন

 ঐক্য এবং সংহতি। জোট বদ্ধ জনশক্তিই পাড়ে শত্রুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে।তাই কবি

 আহ্বান বিপন্ন সাধারন মানুষ যেন আরো সঙ্গবদ্ধ ভাবে থাকে। ঐক্যবদ্ধ সমাজই পারে

 অন্যায় অবিচারের মোকাবিলা করতে মানুষের প্রতিরোধ দৃঢ় হলেই শত্রু পেছু হটে।তাই কবি

 সকলকে আরো বেঁধে বেঁধে থাকতে বলেছেন।


Contents:

আরো পড়ুন:

জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here

অসুখী একজন কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here

আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here

আফ্রিকা কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here

হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click Here

অভিষেক কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here

পথের দাবী গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here

প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here

সিন্ধুতীরে কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here

নদীর বিদ্রোহ গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here


the passing away of bapu question answer

Unit 1 Click Here

The passing away of bapu question answer

 unit 2 Click Here

The passing away of bapu question answer unit 3 Click Here


My Own True family poem Lesson 4 Click Here


























Post a Comment

0 Comments