মাইকেল মধুসূদন দত্ত
১। সূচিপত্র:
ক।লেখক পরিচিতি
খ।অভিষেক কবিতার উৎস
গ। অভিষেক কবিতার পূর্বকথা
ঘ।অভিষেক কবিতার বিষয়বস্তু
ঙ। কবিতার নামকরণ
চ। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখ (MCQ)প্রতিটি প্রশ্নের মান- ১
ছ।অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (SAQ)-২০টি শব্দের মধ্যে। প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
জ।ব্যাখ্যা ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।৬০টি শব্দের মধ্যে। প্রতিটি প্রশ্নের মান-
ঝ। বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী বা বড়ো প্রশ্নোত্তর।১৫০টি শব্দের মধ্যে।প্রতিটি প্রশ্নের মান-৫
e-book পেজটি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সুখবর-1st ইউনিট,2nd ইউনিট,3nd ইউনিট,টেস্ট
ফাইনাল পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণভাবে তোমাদের সাহায্য করবে।তাই এই সাফল্য
আমাদের কাছে বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ক।কবি পরিচিতি:মাইকেল মধুসূদন দত্ত
১৮২৪ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জানুয়ারি বর্তমান বাংলাদেশের যশোর জেলার অন্তর্গত সাগরদাঁড়ি
গ্রামে মধুসুদন দত্ত জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা রাজনারায়ণ দত্ত, মা জাহ্নবী দেবী।১৮৩৩
খ্রিস্টাব্দে মধুসূদন কলকাতার হিন্দু কলেজের জুনিয়র স্কুল বিভাগে ভরতি হন।পরের বছর
ওই স্কুলের বার্ষিকপুরস্কার বিতরণী সভায় শেকসপিয়রের কবিতা থেকে আবৃত্তির জন্য তিনি
পুরস্কার পান।১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে স্ত্রীশিক্ষা সম্বন্ধে ইংরেজিতে প্রবন্ধ লিখে স্বর্ণপদক লাভ
করেন।পরিবারের প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৯ ফেব্রুয়ারি মধুসূদন
কলকাতার ওল্ড মিশন গির্জায় খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন।
১৮৪৮-এ মধুসূদন চলে যান মাদ্রাজে এবং ব্ল্যাক টাউনের অ্যাসাইলাম স্কুলে ইংরেজির
শিক্ষকরূপে যোগ দেন।বিয়ে করেন মেরি রেবেকা ম্যাকটাভিসকে।১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের তাঁর
প্রথম কাব্য 'The Captive Ladie,১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে তাঁর বাবার মৃত্যু হয়। চার সন্তানের জননী
রেবেকার সঙ্গেও এই সময়েই তাঁর আট বছর বাদে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।পরের বছর তিনি
এমিলিয়া হেনরিয়েটা সোফিয়াকে বিয়ে করেন।অর্থকষ্ট ও স্থায়ী চাকরির অভাবের মধ্যেও
তিনি সাহিত্যচর্চা বন্ধ করেননি।১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারিতে তাঁর' শর্মিষ্ঠা নাটক, প্রকাশিত
হয়।সেপ্টেম্বরে নাটকটি বেলগাছিয়া নাট্যমঞ্চে অভিনীত ও প্রশংসিত হলে তিনি নাটক
রচনায় আরও উৎসাহী হয়ে ওঠেন। ১৮৬০-এর এপ্রিলে প্রকাশিত হয়'পদ্মাবতী নাটক,মে
মাসে প্রকাশ পায়'তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য,১৮৬১খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারিতে প্রকাশিত হয়
মেঘনাদবধ কাব্য-এর প্রথম খণ্ড। এ বছর ১২ ফেব্রুয়ারি ‘অমিত্রাক্ষর ছন্দ’ প্রবর্তনের জন্য
তিনি কালীপ্রসন্ন সিংহের বাড়িতে সংবর্ধিত হন। মার্চ মাসে পাদরি লঙ-এর ভূমিকা-সহ By a
Native ছদ্মনামে নীলদর্পণনাটকের ইংরেজি অনুবাদ করেন।জুলাই মাসে প্রকাশিত হয় তাঁর
ব্রজাঙ্গনা কাব্য,। ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে বীরাঙ্গনা কাব্য প্রকাশিত হয়।১৮৬২ খ্রিস্টাব্দের জুলাই
মাসে আইন পড়ার জন্য মধুসূদন ইংল্যান্ড যান। সেখানে তিনি চরম আর্থি সংকটে পড়েন
যা থেকে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তাঁকে মুক্ত করেন এখানে বসেই মধুসূদন তাঁর বিখ্যাত
সনেটগুলি রচনা করেন ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে তাঁর 'চতুর্দশপদী
কবিতাবলী,প্রকাশিত হয়। এ বছরের ১৭ নভেম্বর তিনি ব্যারিস্টারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে মধুসূদন কলকাতায় ফিরে আসেন এবং হাইকোর্টে
প্র্যাকটিস শুরু করেন।১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে মধুসূদন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সে বছরই ২৯ জুন রবিবার বিকেলে মধুসূদনপ্রয়াত হন।
খ।উৎস
মাইকেল মধুসূদন দত্তের'মেঘনাদবধ কাব্যর,প্রথম সর্গ অভিষেক থেকে পাঠ্য অংশটি
নির্বাচিত হয়েছে।
গ।কবিতার পূর্বকথা
এ কাব্যের কাহিনি শুরুই হয়েছে বীরবাহুর মৃত্যু দিয়ে।প্রচন্ড যুদ্ধে রাবণ ও চিত্রাঙ্গদার পুত্র
বীরবাহু ও তার সঙ্গীদের মৃত্যু হয়।শুধুমাত্র একজন যোদ্ধা বেঁচে ফেরে,মকরাক্ষ। সে-ই
এখানে ভগ্নদূতের ভূমিকা পালন করেছে,অর্থাৎ রাবণের রাজসভায় এই মৃত্যুসংবাদ বহন
করে এনেছে। এই শোকসংবাদে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন রাজা রাবণ, ইতিমধ্যেই তিনি
হারিয়েছেন ভাই কুম্ভকর্ণকে। রাবণ এখানে পুত্রশোকে কাতর।রানি চিত্রাঙ্গদার প্রবেশের পর
চিত্রাঙ্গদা এখানে তেজস্বিনী নারী। তিনিই প্রথম রাবণকে বলেন,নিজ কর্ম্মফলে, হায়,
মজালে রাক্ষসকুলে, তাঁর ভয়ংকর যুদ্ধপ্রস্তুতি সাগরেও আলোড়ন তোলে। সেখানে তখন
জলের দেবতা বরুণের পত্নী বারুণী বসে চুল বাঁধছিলেন। সেই আলোড়নে ব্যস্ত হয়ে তিনি
তাঁর সখী মুরলাকে পাঠান লক্ষ্মীর কাছে যুদ্ধের সংবাদ নিতে।কারণ,এই লক্ষ্মীহ স্বর্ণলঙ্কার
অধিষ্ঠাত্রী দেবী।সেখানে মুরলার মুখে বারুণীর যুদ্ধবার্তা শোনার ইচ্ছার কথা জানতে পেরে
দেবী লক্ষ্মী ছদ্মবেশে লঙ্কার রাজপথে বেরিয়ে পড়েন,পরিস্থিতি নিজের চোখে দেখবেন
বলে।সেখানে তিনি জানতে পারেন,স্বয়ং রাবণ যুদ্ধে চলেছেন। অনুমান করেন, রাবণপুত্র
ইন্দ্ৰজিৎ হয়ত এখনও এই সংবাদ জানেন না।লঙ্কা সম্পূর্ণ বীরশূন্য তো নয়,যে স্বয়ং
রাজাকেই এবার যুদ্ধে নামতে হবে। তখন লঙ্কার দেবী ইন্দ্রজিতের পালিতা মাতা প্রভাষা
রাক্ষসীর ছদ্মবেশে প্রমোদ-উদ্যানে ইন্দ্রজিতের কাছে যান। সেখানে তখন ইন্দ্রজিৎ তাঁর স্ত্রী
প্রমীলার সঙ্গে সুখ উপভোগ করছিলেন।এমন সময় হঠাৎ লঙ্কার রাজলক্ষ্মী ইন্দ্রজিত কাছে
উপস্থিত হন। এখান থেকে কবিতাটি শুরু হয়েছে।
ঘ।কবিতার বিষয়বস্তু
ইন্দ্রজিতের ধাত্রী রাক্ষসী প্রভাষার ছদ্মবেশে লক্ষ্মী এসে ইন্দ্ৰজিৎকে যখন দেখা দিলেন তখন
ইন্দ্ৰজিৎ প্রমোদ-কাননে স্ত্রীপ্রমীলার সঙ্গে আনন্দে মত্ত ছিলেন। প্রভাষাকে দেখে ইন্দ্ৰজিৎ
সোনার সিংহাসন ছেড়ে নেমে এসে তাঁকে প্রণাম করলেন এবং তাঁর আগমনের কারণ
জিজ্ঞাসা করলেন।লঙ্কার ভালো-মন্দ জিজ্ঞাসাও করলেন একই সঙ্গে।আশীর্বাদ দিয়ে তাঁর
মাথায় চুমো খেয়ে,বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ জানিয়ে বলেন যে, আজ তাঁর পিতা রাবণ
যুদ্ধযাত্রার সাজে সজ্জিত হচ্ছেন।
এই কথা শুনে ইন্দ্ৰজিৎ অত্যন্ত অবাক হয়ে যান।তিনি ইতিমধ্যেই রাত্রিকালে এক ভয়ংকর
যুদ্ধে রামচন্দ্রকে পরাজিত করেছেন।তাঁর তীক্ষ্ণ তীরবর্ষণে রামের দেহ খণ্ড খণ্ড হয়েছে।
তাহলে সেই রামই আবার কীভাবে বীরবাহুকে হত্যা করতে পারেন! লক্ষ্মীও দুঃখপ্রকাশ করে
জানান যে,রামচন্দ্র মায়াবান। মৃত্যুর পরেও সে আবার প্রাণ আবার ফিরে আসে।ইন্দ্রজিৎ এই
সংবাদ শুনে যুদ্ধপ্রস্তুতি শুরু করেন। কারণ, তিনি ছাড়া এই যুদ্ধে লঙ্কার রাক্ষসবংশের
সম্মানরক্ষার আর কেউ নেই। তারপরেই দ্রুতগতিতে শুরু হয় ইন্দ্রজিতের যুদ্ধযাত্রা ।তাঁর
যুদ্ধপ্রস্তুতি কখনও তারকাসুরহন্তা কার্তিকেয়কে, আবার কখনও বিরাটরাজার বৃহন্নলারূপী
অর্জুনকে মনে হয়।এমন সময়ে স্বামী বিরহবেদনায় কাতর হয়ে প্রমীলা কেঁদে পড়েন। যত
শীঘ্র সম্ভব ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি তাঁকে দিয়ে ইন্দ্ৰজিৎ উড়ন্ত রথে চড়ে ধনুকে টংকার
দিয়ে যাত্রা করেন রাবণের উদ্দেশে। সেখানে তখন প্রবল যুদ্ধ-উৎসাহে মেতে চতুরঙ্গ
সৈন্যদল যুদ্ধপ্রস্তুতি নিচ্ছে। এই সময়ে আকাশপথে উপস্থিত হন ইন্দ্রজিৎ। পিতার কাছে
যুদ্ধযাত্রার অনুমতি প্রার্থনা করেন। কিন্তু রাবণ আক্ষেপ করে বলেন, বারংবার এই ঘোর
যুদ্ধে পুত্রকে পাঠাতে তাঁর মন চাইনা। কিন্তু বিধাতার রোষে অসম্ভবও সম্ভব হয়েছে।
সাগরের জলে পাথর ভাসবার মতো অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটেছে, পুনর্জীবিত হয়েছে মৃত রাম।
কিন্তু ইন্দ্রজিৎ যদি নিজে প্রমোদে মেতে পড়ে থাকেন আর যুদ্ধযাত্রা করতে হয় তাঁর
পিতাকে তাহলে সারা জগতে এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু থাকবে না। দেবকুলেও কলঙ্ক
রটবে। রাবণ উত্তরে বলেন,তিনি তাঁর ভাই কুম্ভকর্ণকেও এই ভয়াল যুদ্ধে হারিয়েছেন। তবে
ইন্দ্রজিৎ যদি একান্তই যুদ্ধে যেতে চান, তাহলে তিনি বাধা দেবেন না। ইন্দ্রজিৎ যেন
সেইমতো নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে গিয়ে যথাবিধি যজ্ঞ করেন।রাবণ নিজের হাতে সেনাপতি
পদে তাঁকে বরণ করে নেবেন। আজ সূর্য প্রায় অস্ত যেতে বসেছে, কাল যেন ইন্দ্রজিৎ নব
উদ্যমে যুদ্ধযাত্রা করেন। এই বলে রাজা রাবণ নিয়মমতোই গঙ্গাজল নিয়ে ইন্দ্রজিতের
অভিষেক করেন।
ঙ। কবিতার নামকরণ
এই কাব্যাংশটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘অভিষেক। এখন দেখতে হবে যে, নামকরণটি
বিষয়ানুসারী হয়েছে কি না। যে-কোনো সাহিত্যের নামকরণ তিনটি উপায়ে হতে পারে।
প্রথমত, সেই নামটি ওই সাহিত্যিক রচনায় উল্লিখিত কোনো স্থাননাম, চরিত্রনাম বা বস্তুনাম
হতে পারে; দ্বিতীয়ত, নামটি ওই রচনার বিষয়বস্তুকে অবলম্বন করে হতে পারে, তৃতীয়ত,
নামটি ব্যঞ্জনাধর্মী হতে পারে। এক্ষেত্রে, দেখা যায় কাব্যংশটি শেষ হয় দ্বিতীয় দিনের যুদ্ধে
ইন্দ্রজিৎকে সেনাপতি পদে পাঠানোর প্রস্তুতি দিয়ে। লঙ্কেশ্বর রাবণ নিজের হাতে গঙ্গাজল
দিয়ে মঙ্গলাচরণ করে নিজের পুত্র মহাবীর ইন্দ্রজিৎকে সেনাপতিপদে অভিষিক্ত করেন।
সুতরাং ‘অভিষেক,নামটি এখানে কবি নির্বাচন করেছেন বিষয়বস্তুকে অবলম্বন করে।
চ। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখ (MCQ)প্রতিটি প্রশ্নের মান- ১
১।'মেঘনাদবধ কাব্য,টির প্রকাশকাল-
ক) ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দ
খ) ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দ
গ) ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দ
ঘ) ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে
উত্তর:(খ) ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দ
২। ন-টি স্বর্গে বিভক্ত'অভিষেক,শীর্ষক কাব্যাংশটি কোন স্বর্গ থেকে গৃহীত?
ক) নবম সর্গ
খ) প্রথম সর্গ
গ) তৃতীয় সর্গ
ঘ) নবম সর্গ
উত্তর:(খ) প্রথম সর্গ
৩। মহাবাহু হলেন-
ক) রামচন্দ্র
খ) রাবণ
গ) ইন্দ্রজিৎ
ঘ) বীরবাহু
উত্তর:(গ) ইন্দ্রজিৎ
৪।'এ বারতা' এ অদ্ভুত বারতা,---
ক) রাক্ষসী
খ) জননী
গ) ভাগবতী
ঘ) মাতঃ
উত্তর:(খ) জননী
৫।'কনক-আসন ত্যজি বীরেন্দ্রকেশরী,-বীরেন্দ্রকেশরী হলেন-
ক) ইন্দ্রজিৎ
খ) রাবণ
গ) রাঘব
ঘ) কুম্ভকর্ণ
উত্তর:(ক) ইন্দ্রজিৎ
৬।ধাত্রী প্রভাষার ছদ্মবেশে ইন্দ্রজিতের কাছে এসেছিলেন-
ক) দেবী সরস্বতী
খ) দেবী দুর্গা
গ) দেবী লক্ষী
ঘ) দেবী চণ্ডী
উত্তর:(গ) দেবী লক্ষী
৭।'দশাননত্মজ, হলেন-
ক) রাম
খ) বিভীষণ
গ) ইন্দ্রজিৎ
ঘ) লক্ষণ
উত্তর: (গ) ইন্দ্রজিৎ
৮।'হৈমবতীসুতা, হলেন-
ক) কার্তিকেয়
খ) গণেশ
গ) অর্জুন
ঘ) কুম্ভকর্ণ
উত্তর:(ক) কার্তিকেয়
৯।'বিহান্নলারুপী কিরীটি,-কিরীটি হলেন-
ক) ইন্দ্রজিৎ
খ) অর্জুন
গ) রাবণ
ঘ) বিভীষণ
উত্তর:(খ) অর্জুন
১০।'রথে চড়ে বীর চূড়ামণি বীরদর্পে,-বীর চূড়ামণি বলতে বলা হয়েছে-
ক) বিভীষণ
খ) ইন্দ্রজিৎ
গ) রামচন্দ্র
ঘ) রাবন
উত্তর:(খ) ইন্দ্রজিৎ
১১।'নিকুম্ভিলা যজ্ঞ সাঙ্গকর, বীরমনি,-বীরমণি হলেন-
ক) রাবণ
খ) ইন্দ্রজিৎ
গ) বীরবাহু
ঘ) কুম্ভকর্ণ
উত্তর:(খ) ইন্দ্রজিৎ
১২।'ঘুচাব এ অপবাদ,- কীভাবে ইন্দ্রজিৎ অপবাদ ঘুচাতে চেয়েছেন?
ক) চন্দ্রকে বধ করে
খ) লক্ষণকে বধ করে
গ) রিপুকুলকে বধ করে
ঘ) আত্মবিসর্জন দিয়ে
উত্তর:(গ) রিপুকূলকে বধ করে
ছ।অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (SAQ)-২০টি শব্দের মধ্যে। প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
১।‘কহিলা রাক্ষসপতি;’–‘রাক্ষসপতি কাকে বলা হয়েছে?
উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত'মেঘনাদবধ কাব্যে,এর প্রথম সর্গ থেকে'অভিষেক,
কবিতাটি নেওয়া হয়েছে।
আলোচ্য অংশে,স্বর্ণলঙ্কার অধীশ্বর রক্ষকুলপতি রাবণকে ‘রাক্ষসপতি বলাহয়েছে।
২। ‘কুম্ভকর্ণ বলী’– কুম্ভকর্ণ কে ছিলেন?
উত্তর:মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত'মেঘনাদবধ কাব্যে,এর প্রথম সর্গ থেকে'অভিষেক,
কবিতাটি নেওয়া হয়েছে।
আলোচ্য অংশে,বিশ্রবা এবং নিষার পুত্র। রাবণের মধ্যম ভ্রাতা। বহু ঋষি, অপ্সরা ও মানুষকে
ভক্ষণ করেছিলেন। প্রচুর পান-ভোজন করতেন। ব্রহ্মার কাছে ছ-মাসান্তে একবা নিদ্রাভঙ্গের
বর পান। রাম ঐন্দ্রশরে কুম্ভকর্ণকে বধ করেছিলেন।
৩। কুম্ভকর্ণের অকাল জাগরণকে কবি কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?
উত্তর:মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত'মেঘনাদবধ কাব্যে,এর প্রথম সর্গ থেকে'অভিষেক,
কবিতাটি নেওয়া হয়েছে।
আলোচ্য অংশে,‘অভিষেক’কবিতা অনুসারে, কুম্ভকর্ণের অকাল জাগরণকে কবি তুলনা
করেছেন সিন্ধুতীরে বজ্রাঘাতে ভূপতিত গিরিশৃঙ্গ কিংবা তরুর সঙ্গে।
৪। ‘এ কলঙ্ক,পিতঃ ঘুষিবে জগতে,- কোন্ কলঙ্কেরকথা বলা হয়েছে?
উত্তর:মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত'মেঘনাদবধ কাব্যে,এর প্রথম সর্গ থেকে'অভিষেক
, কবিতাটি নেওয়া হয়েছে।
মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে,যুবরাজইন্দ্রজিৎ নিজে সশরীরে উপস্থিত
থাকা সত্ত্বেও রক্ষোরাজ রাবণের যুদ্ধযাক্ষ্ ত্রাকে কলঙ্ক বলা হয়েছে।
জ। ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ৬০টি শব্দের মধ্যে প্রতিটি প্রশ্নের মান-৩
১।'অভিষেক,কবিতায় ইন্দ্রজিৎ কেন তাঁর সাজসজ্জা খুলে ফেললেন?
উত্তর:মাইকেলমধুসূদন দত্তের রচিত'মেঘনাদবধকাব্যে,প্রথম স্বর্গথেকে'অভিষেক,কবিতায়,ই
ন্দ্রজিতের ভাই যুদ্ধে মারা যান।পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর পুত্র শোকে রাজা
রাবণ কাতর হয়ে পড়েন এবং তিনি ভাবেন পুত্র ইন্দ্রজিৎ এইমাত্র রামকে বধ করে এখন
হয়তো সে প্রমোদে মত্ত।কিন্তু হঠাৎই প্রভাষারূপী লক্ষ্মীর মুখে ভাই বীরবাহুর মৃত্যুর সংবাদ
শুনে তিনি অবাক হয়ে যান। তিনি বলেন,রামচন্দ্র মহামানবী তাঁর মৃত্যু নেই তিনি অমর,সুস্থ
শরীরে সে জীবিত। এই সংবাদ শুনে ইন্দ্রজিৎ ক্ষোভে,রোষে তিনি সমস্ত সাজসজ্জা খুলে
ফেললেন।
২। ইন্দ্রজিতের যুদ্ধসজ্জার বর্ণনা দাও।
উত্তর:মাইকেলমধুসূদনদত্তেররচিত'মেঘনাদবকাব্যে,প্রথমসর্গথেকে'অভিষেক,কবিতায়,লঙ্কা
য় যুদ্ধে ভাই বীরবাহুর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ইন্দ্রজিৎ যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি শুরু করলেন।যুদ্ধ
যাত্রারপোশাকে ইন্দ্রজিৎকে কার্তিকেয় বা অর্জুনের সঙ্গে তুলনা করলেই চলে।তাঁর রথের
কালার ছিল নীল আকাশ। মাটির সঙ্গে সেই রথের চাকার ঘর্ষণে বিদ্যুতের ঝলকানি দিয়ে
যাচ্ছিল। রথের মাথার ওপরে পতাকার মতে রামধনুর রঙ দেখা যাচ্ছিল।রথের চাকা যখন
দ্রুত গতিতে ছুটছিল,তখন আকাশপথে উড়ে চলা রথকে উড়ন্ত মৈনাক পর্বত বলে মনে
হচ্ছিল।
৩।"বিদায় এবে দেহ বিধুমুখি”–কে, কার কাছে বিদায়চেয়েছেন ? প্রসঙ্গ উল্লেখ করো।
উত্তর:মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত মেঘনাদবধ কাব্য থেকে অভিষেক কবিতাটি নেওয়া
হয়েছে। আলোচ্য অংশে ইন্দ্রজিৎ তাঁর স্ত্রী প্রমীলার কাছ থেকে বিদায় গ্রহণ করছেন।তিনি
প্রমীলার সঙ্গে প্রমোদ উদ্যানে সুখ উপভোগ করছিলেন।এই সময় তিনি হঠাৎ বীরবাহুর
মৃত্যুসংবাদ পেয়েই যুদ্ধযাত্রা করার সিধান্ত নেন।এই অবস্থায় প্রমীলা ইন্দ্রজিতেবিরহে কাতর
হয়ে পড়েন। প্রমীলাকে সান্ত্বনা দিয়ে ইন্দ্রজিৎ বলেন যে,আমাদের ভালোবাসায় কেউ বাধা
দিতে পারবে না।তুমি কোন চিন্তা করোনা আমি ঠিক চলে আসব এই আশ্বাস দেন।
৪।"কহিলা কাঁদিয়া ধনী”-ধনীকে? তিনি কেন কাঁদছেন?তিনি কী বলেছেন?
উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত মেঘনাদবধ কাব্য থেকে অভিষেক কবিতায় ‘ধনি’
বলতে ইন্দ্ৰজিতের স্ত্রী প্রমীলার কথা বলা হয়েছে।'ধনি’ শব্দের অর্থ সুন্দরী নারী।প্রমীলার
সঙ্গে প্রমোদ কাননে সুখ ও করছিলেন এমন সময় হঠাৎ বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ শুনে এবং
লঙ্কার ভয়ংকর পরিস্থিতির কথা ভেবে ইন্দ্রজিৎ দ্রুত যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি নিতে থাকেন। সদ্য
বিরহের কথা ভেবে প্রমীলা কাঁদছেন।প্রমীলা ইন্দ্রজিতের পথ আটকিয়ে বলেছেন, বনের
হাতির পায়ে লতা জড়ালে হাতি তাকে পা থেকে খুলে ফেলে না।ইন্দ্রজিৎ প্রমীলাকে এইভাবে
ফেলে যেতে পারেন না।
৫।"কাঁপিলা লঙ্কা, কাঁপিলা জলধি !”- প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত মেঘনাদবধ কাব্য থেকে ‘অভিষেক’ কবিতায় ইন্দ্রজিতের
যুদ্ধযাত্রার বর্ণনার উল্লেখ করা হয়েছে।প্রমোদ উদ্যানে ইন্দ্রজিতপ্রমীলার কাছ থেকে বিদায়
নিয়ে আকাশপথে রাবণের রাজসভার দিকে এগিয়ে গেল ইন্দ্রজিতের রথ।কেবলমাত্রসোনার
ডানা মেলে উড়ে চলা মৈনাক পর্বতের সঙ্গেই সে রথের তুলনা দেওয়া হয়েছে।ইন্দ্রজিতের
ধনুকের টংকারের ভীষণ শব্দ শোনা যাচ্ছিল।সেই শব্দেই কেঁপে উঠেছিলস্বর্ণলঙ্কা এবং
লঙ্কাকে ঘিরে থাকা সমুদ্র।
৬।"সাজিছে রাবণরাজা, বীরমদে মাতি”— রাবণের যুদ্ধসজ্জার বর্ণনা দাও।
উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত মেঘনাদবধ কাব্য থেকে অভিষেক কবিতায়,ইন্দ্রজিৎ
এবং রাবণের যুদ্ধসজ্জার এক রাজকীয় বর্ণনা পাওয়া যায় । রাবণের সজ্জার মাধ্যমে সদ্য
পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুর সংবাদে রাবণের রোষ,ক্ষোভ প্রকাশিত হয়েছে শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে।
চারপাশে বেজে উঠছে রণবাদ্য। হস্তীপৃষ্ঠের আরোহী, অশ্বারোহী, রথী এবং পদাতিক-এই
চতুরঙ্গ সেনাদলের উল্লেখ এই যুদ্ধে পাওয়া যায়।হাতির গর্জনে এবং ঘোড়ার তীব্র
হ্রেষাধ্বনির মধ্য দিয়ে যুদ্ধপ্রস্তুতির ইঙ্গিত মেলে। রথের মাথায় উড়ছে পতাকা, বীরদের
সোনার বর্ম থেকে আকাশে বিচ্ছুরিত হতে থাকে।
ঝ। বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী বা বড়োপ্রশ্নোত্তর ১৫০টি শব্দের মধ্যে প্রতিটি প্রশ্নের মান-৫
১।"এ অদ্ভুত বারতা”–কে, কাকে এ কথা বলেছেন? তাঁর বার্তা অদ্ভুত বলে মনে হয়েছে
কেন? তাঁর কথার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কী জানতে পেরেছেন?
উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত মেঘনাদবধ কাব্যথেকে অভিষেক কবিতায়,উক্তিটি
ইন্দ্রজিৎ বলেছেন তাঁর ধাত্রী রাক্ষসী প্রভাষার ছদ্মবেশী লক্ষ্মীকে যিনি লঙ্কার অধিষ্ঠাত্রী দেবী
ছিলেন।
ইন্দ্রজিতের কাছে ধাত্রী প্রভাষা বীরবাহুর মৃত্যুর সংবাদ ‘অদ্ভুত’ বলে মনে হয়েছে। কারণ
তাঁর বিশ্বাস ছিল যে, তিনি যুদ্ধে রামকে বধ করেছেন। ফলে প্রভাষার কাছ থেকে যখন তিনি
শোনেন, যে রামের হাতেই তাঁর ভাই বীরবাহু নিহত হয়েছেন, সেই খবর তিনি কিছুতেই
বিশ্বাস করতে পারছেন না।
ইন্দ্ৰজিৎ প্রভাষা-রূপী লক্ষ্মীর কাছ থেকে জানতে পেরেছেন যে, রাম মায়ার শক্তিতেশক্তিধর।
তাই মায়াবলে তিনি প্রাণ হারিয়েও আবার প্রাণ ফিরে পান। ইন্দ্রজিতের অস্ত্রাঘাত তাঁর কোনো
ক্ষতিই করতে পারে নি।তিনি আরও বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তিনি যেন যুদ্ধক্ষেত্রে
পৌঁছান। কারণ, লঙ্কাপুরী এক ভয়ংকর সমস্যার মধ্যে ডুবে আছে।এই সমস্যা থেকে
লঙ্কাকে যিনি একমাত্র উদ্ধার করতে পারেন, তিনি হলেন ইন্দ্রজিৎ। কারণ, তিনি ‘রক্ষঃ-
চূড়ামণি’-রাক্ষসকুলের শ্রেষ্ঠ রত্ন। এই ঘোরতর যুদ্ধের পরিস্থিতি থেকে, লঙ্কাকে উদ্ধার
করতে একমাত্র তিনিই পারেন।তাই তাঁকেই এখন এই যুদ্ধের জন্য তৈরি হতে হবে।
২।“মৃদুস্বরে উত্তর করিলা তবে স্বর্ণলঙ্কাপতি” স্বর্ণলঙ্কাপতি কীসের উত্তর দিয়েছেন
স্বর্ণলঙ্কাপতি তার উত্তরে কী বলেছেন?
উত্তর:মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত মেঘনাদবধ কাব্য থেকে অভিষেক কবিতায়প্রভাষার
ছদ্মবেশধারিণী লক্ষ্মীর কাছ থেকে ইন্দ্রজিৎ জানতে পারেন, তাঁর হাতে পরাজিত রাম আবার
বেঁচে আছেন, শুধু তাই-ই নয়, রামের হাতেই নিহত হয়েছেন ইন্দ্রজিতের ভাই বীরবাহু। এ
কথা শোনার পরই তিনি যুদ্ধপ্রস্তুতি নিয়ে উপস্থিত হন তাঁর পিতা রাবণের কাছে এবং তাঁর
কাছে যুদ্ধে যাওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করেন। ইন্দ্রজিৎ বলেন, যদি পিতার অনুমতি থাকে,
তাহলে সে যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে তিনি রামকে যুদ্ধের দ্বারা ধ্বংস করবেন।তাঁকে তীরের প্রবল
আঘাতে ভস্ম করে, বায়ু-অস্ত্রে উড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন অথবা রামকেজীবন্ত বেঁধে
আনবেন পিতা রাবণের কাছে। স্বর্ণলঙ্কাপতি রাবণ এই কথার উত্তর দিয়েছেন।
ইন্দ্রজিতের কথার উত্তরে রাবণ বলেন,তিনি জানেন ইন্দ্রজিৎ যোগ্য বীর এবং পুত্রের
ক্ষমতার ওপরে তাঁর বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। তবুও ইন্দ্ৰজিৎ ইতিমধ্যেই দুই বার যুদ্ধে গেছেন।
প্রিয় পুত্র ইন্দ্রজিৎকে বারবার এই ভয়ানক যুদ্ধে ঠেলে দিতে তাঁর প্রাণ চায় না। বিধাতা তাঁর
প্রতি বিমুখ।নইলে কীভাবে অসম্ভবকেও সম্ভব করে তাঁর পরাজয় হয়। উত্তাল সাগরের বুকে
কীভাবে শিলা ভাসিয়ে রামের সেতুবন্ধন সম্ভব হয় আর কীভাবেই বা মৃত রামের পুনর্জীবন
লাভ হয়।
Contents:
আরো পড়ুন:
জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
অসুখী একজন কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
আফ্রিকা কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click Here
অভিষেক কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
পথের দাবী গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
সিন্ধুতীরে কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
নদীর বিদ্রোহ গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
the passing away of bapu question answer
Unit 1 Click Here
The passing away of bapu question answer
unit 2 Click Here
The passing away of bapu question answer unit 3 Click Here
My Own True family poem Lesson 4 Click Here
0 Comments