দাম
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
১। সূচিপত্র:
ক।লেখক পরিচিতি:
খ।গল্পটির উৎস
গ।'দাম,গল্পটির বিষয়বস্তু
ঘ।'দাম,গল্পটির নামকরণ
ঙ।সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখ।(MCQ) প্রতিটি প্রশ্নের মান- ১
চ।অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।(SAQ)-২০টি শব্দের মধ্যে।প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
ছ।ব্যাখ্যা ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর। ৬০টি শব্দের মধ্যে। প্রতিটি প্রশ্নের মান-৩
জ।বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী বা বড়ো প্রশ্নোত্তর।১৫০টি শব্দের মধ্যে।প্রতিটি প্রশ্নের মান-৫
,2ndইউনিট,3ndইউনিট,টেস্ট,ফাইনাল পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণভাবে তোমাদের
সাহায্য করবে।তাই এই সাফল্য আমাদের কাছে বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকব
ক।লেখক পরিচিতি:
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রকৃত নাম ছিল তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের ৪
ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত বাংলার দিনাজপুরের বালিয়াডিঙিতে (বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্গত)
তাঁর জন্ম হয়। তাঁদের আদি নিবাস ছিল বরিশাল জেলার বাসুদেব পুরের নাম চিড়া গ্রামে।
লেখকের বাবা প্রমথনাথ গঙ্গোপাধ্যায় পুলিশআধিকারিকহওয়ায়পিতারকর্মসূত্রেবাংলাদেশের
বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে তাঁর শৈশব কাটেবাবারবদলিরচাকরিরজন্যনারায়ণগঙ্গোপাধ্যায়ের
ছাত্রজীবনের দিনগুলি কেটেছে দিনাজপুর,ফরিদপুর,বরিশাল এবংকলকাতায়।১৯৩৩
খ্রিস্টাব্দে দিনাজপুর জেলা স্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন।পরেবরিশালের বিএম
কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে ভরতি হয়ে ১৯৩৬-এ ননকলেজিয়েট পরীক্ষার্থীহিসেবে তিনি কলা
বিভাগে বিএ পাস করেন।এই বিএম কলেজেই তিনি স্বনামধন্য কবিজীবনানন্দ দাশকে তাঁর
শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন।১৯৪১-এ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
এমএ পাস করেন এবং এই পরীক্ষায় অসামান্য ফলাফলেরজন্য তিনি ব্রত্নময়ী স্বর্ণপদক
পান।
১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবন
:এমএ পাস করার পর নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় অধ্যাপনাকেই নিজের পেশা হিসেবে বেছে
নেন। জলপাইগুড়ি কলেজে১৯৪২-৪৫ পর্যন্ত পড়ানোর পর তিনি কলকাতার সিটি কলেজে
১৯৪৫-৫৫ পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন।১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে
অধ্যাপনা শুরু করেন।ছাত্রাবস্থাতেই নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়েরসাহিত্য-প্রতিভারবিকাশ ঘটে।
এই সময় থেকেই তিনি কবিতা লিখতে শুরু করেন। কিন্তু পরবর্তীকালে ছোটোগল্প, উপন্যাস,
নাটক ইত্যাদি সাহিত্যকর্মের জন্যই তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েতাঁরপ্রথমগল্পটিবিচিত্রাপত্রিকায়
প্রকাশিত হয়।তাঁর বিখ্যাতউপন্যাস গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য-উপনিবেশ,সম্রাট ও শ্রেষ্ঠী,
মন্দমুখর,মহানন্দা,স্বর্ণসীতা,নিশিযাপন,শিলালিপি,ট্রফি,লালমাটি,কৃষ্ণপক্ষবিদূষক,বৈতালিক
,বিখ্যাত ছোটগল্প,নাটক,প্রবন্ধ প্রভৃতি।,সুনন্দ, ছদ্মনামে সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকায় তিনি
সুনন্দর জার্নাল নামে একটি কলাম লিখতেন।বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ১৯৪৬-এ আনন্দ পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে সাপ্তাহিক
বসুমতীর পক্ষ থেকে তাঁকে সম্মানিত করা হয়।১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের ৬ নভেম্বর কলকাতায়
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনাবসান হয়।
খ। উৎস
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের রচিত'দাম, ছোটোগল্পটি'তরুণের স্বপ্নতে,প্রথম প্রকাশিত হয়।
গ। বিষয়সংক্ষেপ
‘দাম’ গল্পের কথক হল সুকুমার। স্কুলজীবনে তাদের কাছে এক বিভীষিকা ছিল অঙ্কের
মাস্টারমশাই। তিনি অঙ্কে খুবই পারদর্শী ছিলেন।যে কোনো জটিল কঠিন অঙ্ক নিমেষে
ঝড়ের গতিতে করতেন এবং ব্ল্যাকবোর্ডে ছবির মতো সাজিয়ে দিতেন। কিন্তু সুকুমারের
মতো অঙ্কে কাঁচারা শুধু নয়; অঙ্কে যারা একশোয় একশো পেত, সেইসব ছাত্রেরাও তাঁর
ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে থাকত। মাস্টারমশাইয়ের হাতের প্রচণ্ড চড় খেয়ে মাথা ঘুরে গেলেও
কারও কাঁদ বার উপায় ছিল না। চোখে একটু জল দেখলেই তিনি ক্লাস ফাটিয়ে হুংকার
দিতেন।পা ধরে স্কুলের পুকুরে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার কথা বলতেন। কারণ পুরুষমানুষ হয়ে
অঙ্ক না পারা তাঁর কাছে ছিল চূড়ান্ত অপমানের ও লজ্জার। এইভাবে স্কুলের গণ্ডি পার
হওয়ার পর অঙ্কের হাত থেকে এবং মাস্টারমশাইয়ের হাত থেকে মুক্তি পেলেও, সুকুমারের
মন থেকে সেই বিভীষিকা মুছতে সময় লেগেছিল। তার দুঃস্বপ্নেও বারবার ফিরে আসত সেই
সমস্ত আতঙ্কের দিন। তবে ততদিনে সে কলেজে অধ্যাপনার চাকরী মাধ্যমে পেয়ে গেছে।
একবার একটি পত্রিকায় ছেলেবেলার গল্প লেখার ফরমাশ পেল সুকুমার।কাগজ-কলম নিয়ে
বসার পর সুকুমারের মনে এল স্কুলের সেই মাস্টারমশাইয়ের কথা,ব্ল্যাকবোর্ডে অঙ্কের ক্লাসে
যিনি খড়ি দিয়ে ঝড় তুলতেন।গল্প লিখতে গিয়ে সুকুমার সেইমাস্টারমশাই সম্পর্কে যা
লিখলেন,তার সবটাই খুব উজ্জ্বল নয়। মনের ভীতি পত্রিকার ও বিভীষিকায় অনেকটা
কল্পনার খাদও মিশেছিল।সুকুমারের গল্প পত্রিকায় ছাপা হলে কর্তৃপক্ষ খুশি হয়ে দশ টাকা
দক্ষিণাও দিয়েছিল। অর্থাৎ মাস্টারমশাইকে ব্যবহার করে দশ টাকা লাভ হয়েছিল
সুকুমারের। এরপর বহু বছর পার হয়ে গেছে। সেই লেখার কথা আর একটুও মনে নেই তার।
হঠাৎ একদিন বাংলাদেশের প্রত্যন্ত একটি কলেজের বার্ষিক উৎসবে অতিথি হিসেবে নিমন্ত্রণ
রক্ষা করতে সুকুমার গিয়ে পৌঁছোল।উচ্ছ্বাসে সুকুমারের মন ভরে গেল। সাফল্যে
রোমাঞ্চিত হয়ে পড়ল সুকুমার।সভায় দেশের তরুণ ছেলেমেয়েদের জেগে ওঠার মন্ত্রে
উদ্বুদ্ধ করে,সে বক্তৃতা শেষ করল।বয়স্ক প্রিন্সিপাল পর্যন্ত মুগ্ধ হয়ে গেলেন। প্রশংসার
বন্যায় ভেসে যাচ্ছিল সুকুমার।এমন সময় একটি ছেলে এসে জানাল, একজন বয়স্ক
ভদ্রলোক সুকুমারের সঙ্গে দেখা করতে চান। মাঠের অন্ধকারে কুঁজো,লম্বা চেহারার একজন
মানুষ সুকুমারের নাম ধরে ডাকলেন।সুকুমার চমকে উঠল। স্মৃতির অন্ধকার ভেদ করে
আশ্চর্য ওই গলার স্বর ছোটোবেলার ভয়ের কঙ্কালটাকে বিদ্যুতের আলোর মতো উদ্ভাসিত
করে তুলল।সেই অঙ্কের মাস্টারমশাই-যাকে নিয়ে সুকুমার গল্প লিখেছিল।সুকুমারের মাথা
নীচু হয়ে এল মাস্টারমশাইয়ের পায়ে। অনেক আশীর্বাদ করলেন তিনি। রিটায়ার করার পর
এখানে এসেই মাথা গুঁজেছেন, সে-কথা জানালেন। আরও বললেন যে আজ সুকুমার ৯
এখানে বক্তৃতা করবে জেনেই তিনি ছুটে এসেছেন। সুকুমারের বক্তৃতা খুব ভালো
লেগেছে।সুকুমারের অনেক প্রশংসা করলেন তিনি।সুকুমার কিন্তু খুশি হতে পারল না। সে
বুঝতে পারল, তার বক্তৃতার ফাঁপা ফানুসে অন্যান্য বহু মানুষের মতো মাস্টারমশাইও খুশি
হয়েছেন। আর মাস্টারমশাই সুকুমারকে বললেন, ছাত্রদের তিনি কিছুই দিতে পারেননি।
শুধুই শাসন-পীড়ন করেছেন। তবু যে সুকুমার তাঁকে মনে রেখেছে, সেইজন্য তাঁর বুক
আনন্দে ভরে গেছে। জামার পকেট থেকে শতচ্ছিন্ন-জীর্ণ সেই পত্রিকাটি বের করে
দেখালেন। যেখানে সুকুমারের গল্প প্রকাশিত হয়েছিল। মাস্টারমশাই সবাইকে সেই লেখা
দেখিয়ে বলেছেন, প্রিয় ছাত্র তাঁকে অমর করে দিয়েছে। লজ্জায় আত্মগ্লানিতে সুকুমার যেন
মাটিতে মিশে গেল। অথচ মাস্টারমশাই সুকুমারের সমালোচনা কেউ খোলা মনে মেনে
নিয়েছেন। ছাত্রকে অংক শেখানোর সময় না হলেও সুকুমারের সাফল্য আজ তিনি গর্বিত।
সুকুমার দেখল আবছা অন্ধকারে মাস্টারমশাইয়ের দুই চোখ দিয়ে জল পড়ছে। এই
ভালোবাসাকে সুকুমার মাত্র ১০ টাকায় বিক্রি করেছিল। এই অপরাধ আর লজ্জা আছে
কোথায় লুকাবে।
ঘ।'দাম, গল্পটির নামকরণ:
গল্পের নামকরণ খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গল্পের নামকরণ থেকে আমরা গল্পের বিষয়বস্তুর
আগাম ধারণা পেতে পারি। নামকরণ হতে পারে বিষয়বস্তু ধর্মী ব্যঞ্জনাধর্মী প্রকৃতি ।
লেখক‘দাম’গল্পটিতে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ককে অনন্য মানবিকতার আলোয় ফুটিয়ে
তুলেছেন। কাহিনির কথক সুকুমার ও তাঁর সহপাঠীদের কাছে স্কুলের অঙ্কের মাস্টারমশাই
ছিলেন বিভীষিকা-স্বরূপ। তাঁদের অঙ্কভীতিকেছাপিয়ে যেত মাস্টারমশাইয়ের মারের ভয়।
ম্যাট্রিকুলেশনের পর অঙ্ক ওমাস্টারমশাইয়ের হাত থেকে মুক্তি পেলেও সেই ভয় সুকুমারকে
বহুকাল তাড়া করে ফিরেছে।
পরবর্তীকালে বাংলার অধ্যাপক সুকুমার লেখক হিসেবে অল্পবিস্তর নাম করলে একটি
অনামি পত্রিকা তাঁকে বাল্যস্মৃতি লেখার প্রস্তাব দেয়।সুকুমার অঙ্কের মাস্টারমশাইকে নিয়ে
তাঁর ছোটোবেলার বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার কথা লেখেন সেই স্মৃতিকথায়। সঙ্গে ছিল
লেখকসুলভ কল্পনার খাদ আর মাস্টারমশাইয়ের সমালোচনা।লেখাটির জন্য তিনি দশ টাকা
পারিশ্রমিকও পান।
এর বহুকাল পর বাংলাদেশের একটি কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে প্রৌঢ়
সুকুমারের সঙ্গে হঠাৎ বৃদ্ধ মাস্টারমশাইয়ের দেখা হয়। সুকুমার জানতে পারেন তাঁর লেখা
অনামি পত্রিকার সেই বাল্যস্মৃতিটি এখন মাস্টারমশাইয়ের সর্বক্ষণের সঙ্গী। ছাত্র তাঁর কথা
মনে রেখেছে,শুনে বৃদ্ধ অংকের মাস্টার গর্বিত।ছাত্রের আলাপ আলোচনা মাস্টার মশাই
নিজের সন্তান বলে মনে করতেন। সুকুমার অংকের মাস্টার মশাইকে শুধু ভয়ের চোখে
দেখতেন কিন্তু ছাত্রের প্রতি যে ভালোবাসা আছে সেটা সে বুঝতে পারেনি।মাস্টারমশাইয়ের
পড়ানোয় হয়তো কিছু পদ্ধতিগত ভুল ছিল, কিন্তু তাঁর নিষ্ঠার কোনো অভাব ছিল না। গুরু-
শিষ্য উভয়ের উপলব্ধির আলোয় এই কাহিনিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে ছাত্র-শিক্ষকের
মানবিক সম্পর্ক, যা আজকের যুগের দিক থেকে খুবই সময়োপযোগী।
পৃথিবীতে এমন অনেক জিনিস আছে যাকে দাম দিয়ে কেনা যায় না, যেমন—স্নেহ,
ভালোবাসা, মমতার সম্পর্কগুলি। মাস্টারমশাইকে নিয়ে তাঁর ছোটোবেলার অভিজ্ঞতা বিক্রি
করে সুকুমার দশ টাকা দাম পেয়েছিলেন—এটাই তাঁকে চরম আত্ম-অনুশোচনায় ভোগায়।
মাস্টারমশাইয়ের উদ্দেশে করা সমালোচনা দাম দিয়ে বিক্রি করা যায়, কিন্তু তাঁর স্নেহ দাম
দিয়ে কেনা যায় না। সবদিক আলোচনা করে বলা যায় যে,গভীর ব্যঞ্জনাময় দাম নামটি এই
কাহিনিটির ক্ষেত্রে যথাযথক এবং সার্থক।
ঙ।সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখ।(MCQ) প্রতিটি প্রশ্নের মান- ১
১।স্কুলে যে ভদ্রলোক বিভীষিকা ছিলেন তিনি কোন বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন?
ক) ভূগোল
খ) বাংলা
গ) ইংরেজি
ঘ) অঙ্ক
উত্তর:(ঘ) অঙ্ক
২.।'একবার মাত্র তাকিয়ে দেখতেন তার দিকে,-এখানে তার বলতে বোঝানো হয়েছে-
ক)কোনো জটিল অঙ্ককে
খ) ক্লাসের ব্ল্যাকবোর্ডকে
গ)খড়িকে
ঘ)কোন বিশেষ ছাত্রকে
উত্তর:(ক) কোন জটিল অঙ্ককে
৩।ঝড়ের গতিতে কী এগিয়ে চলত?
ক)ঘড়ি
খ) ছড়ি
গ) খড়ি
ঘ) দড়ি
খ) অঙ্ক
উত্তর:(গ)খড়ি
৪।'.. বিরক্ত হয়ে টুকরো দুটো আমাদের দিকে ছুঁড়ে..,– তাঁর এই বিরক্তির কারণ—
ক) অঙ্কটা মিলছে না কিছুতেই
খ) ছেলেদের অঙ্কে ভুল হচ্ছে বারবার
গ) হাতের খড়ি দু-টুকরো হয়ে গেছে
ঘ) ক্লাসের ছেলেরা নিজেদের মধ্যে
অত্যন্ত কথা বলছে
উত্তর:(গ) হাতের খড়ি দু-টুকরো হয়ে গেছে
৫।“পৃথিবীতে যত অঙ্ক ছিল, সব যেন ওঁর-
ক) কণ্ঠস্থ
খ) ঠোঁটস্থ
গ) তটস্থ
ঘ) মুখস্থ
উত্তর:(ঘ) মুখস্ত
৬। অংকে যারা একশোর মধ্যে একশোর পায় তারা-
ক) ওঁর ভয়ে কান্নাকাটি করত
খ) ওঁর ভয়ে অজ্ঞান হত
গ) ওঁরজন্য অপেক্ষা করত
ঘ) ওঁর ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকত
উত্তর:(ঘ) ওঁর ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকত
৮।'আমাদের মতো যেসব অঙ্ক-বিশারদের টেনেটুনে ও উঠতে চাইত না-
ক)কুড়ি
খ) দশ
গ) তিরিশ
ঘ) পঁচিশ
উত্তর:(ক) কুড়ি
৯। সুকুমারপেশায় ছিলেন-
ক) ডাক্তার
খ) অধ্যাপক
গ) ইঞ্জিনিয়ার
ঘ) সাংবাদিক
উত্তর:(খ) অধ্যাপক
১০।'স্কুলে কী বিভীষিকায় যে ছিলেন,- স্কুলে বিভীষিকা ছিলেন-
ক) মাস্টারমশাই
খ) ভদ্রলোক
গ) সুকুমার
ঘ) কর্তৃপক্ষ
উত্তর:(ক) মাস্টার মশাই
ছ।ব্যাখ্যা ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর। ৬০টি শব্দের মধ্যে। প্রতিটি প্রশ্নের মান-৩
১।'কী বিভীষিকায় যে ছিলেন ভদ্রলোক,-ভদ্রলোকটি কে? কাকে বিভীষিকা বলা হয়েছে কেন?
উত্তর: নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের রচিত দাম গল্পে ভদ্রলোকটি ছিলেন গল্পকথক সুকুমার এর
স্কুলের অংকের মাস্টারমশাই।মাস্টার মশাই দক্ষতার সঙ্গে যে কোন অংকই মুহূর্তের মধ্যে
সমাধান করে ফেলতেন এবং ছাত্রদের শেখাতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন অংক না জানলে
জীবন মূল্যহীন। ছাত্ররা অংক না পারলে মাস্টারমশাই প্রচন্ড রেগে গিয়ে হাতের প্রচন্ড চড়
থাপ্পর তাদের পিঠে পড়তো কিন্তু ছাত্রদের কাঁদবার উপায় ছিল না। এই কারণেই তিনি
বিভীষিকা ছিলেন।
২।'দু-চোখ দিয়ে তার আগুন ঝরছে,-যার কথা বলা হয়েছে,তাঁর দুই চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে
কেন?
উত্তর:নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের রচিত দাম ছোটগল্পে সুকুমারের স্কুলে অংকেরমাস্টারমশায়ের
দু-চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে।সুকুমার অংকে খুব দুর্বল ছিল কিন্তু সে এমএপাস করার পরেও
স্বপ্ন দেখতেন সেই মাস্টারমশায়ের ভয়ংকর পরিস্থিতি। সুকুমারেরক্লাসের ঘন্টা পড়ার সময়
হয়ে গেলেও কিন্তু তার একটি অংক মিলছে না। কিন্তুমাস্টারমশাই এসে দাঁড়িয়ে দেখতো।
ছাত্র অংক পারছে না দেখে মাস্টার মশায়ের দু- চোখথেকে আগুন ঝরছে।
৩।'সভায় জাঁকিয়ে বক্তৃতা করা গেল,-কে বক্তৃতা করেন?বক্তৃতার বিষয় কি ছিল?
উত্তর: নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় রচিত দাম ছোটগল্পের কথক সুকুমারবাবু জাঁকিয়ে বক্তৃতা
দিয়েছিলেন।বাংলাদেশের একটি কলেজে কথক বক্তৃতা দেন। তাঁর বক্তৃতার বিষয় ছিল
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বারোটা উদ্ধৃতি ছিল। বক্তৃতার প্রায় শেষের দিকে দেশের যুবকদের
জাগ্রত করার উদ্দেশ্যে টেবিলে একটা প্রকাণ্ড কিল মেরে তিনি বক্তৃতা শেষ করেছিলেন।
৪।'আমি চমকে উঠলুম,-কে,কেন চমকে উঠেছিল?
উত্তর: নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় রচিত দাম ছোটগল্পের কথক সুকুমার চমকে উঠেছিলেন।
বাংলাদেশের এক কলেজে বার্ষিক উৎসবে সুকুমার বক্তৃতা দিতে আসেন। বক্তৃতার শেষে
একটি ছেলে বলে যে একজন বৃদ্ধ কথকের সঙ্গে দেখা করতে চান। সুকুমার বাইরে বেরিয়ে
এসে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকা এক বৃদ্ধ কথককে সুকুমার বলে ডাকেন সেই ডাকে সুকুমার
চমকে ওঠেন। সে স্কুলের মাস্টারমশায়ের গম্ভীর কণ্ঠস্বর বিভীষিকা তার চমকে কারন।
জ।বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী বা বড়ো প্রশ্নোত্তর।১৫০টি শব্দের মধ্যে।প্রতিটি প্রশ্নের মান-৫
১।'আমি তাকে দশ টাকায় বিক্রি করেছিলুম,- কে, কাকে কি বিক্রি করেছিলেন?এরপর বক্তার
মনে যে আত্মগ্লানি সৃষ্টি হয়েছিল তা নিজের ভাষায় লিখো।
উত্তর: নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় রচিত দাম ছোটগল্পের কথক সুকুমার তার অজান্তে তাঁর স্কুলের
অংকের মাস্টারমশাই ১০ টাকা দিয়ে পত্রিকা কিনেছিলেন।সুকুমার ম্যাট্রিপুলেশনের পর
অংক ও মাস্টারমশায়ের হাত থেকে রেহাই পেলেও,দীর্ঘদিন ধরে সেই ভয় সুকুমারকে তাড়া
করতো। বহুদিন পর বাংলার অধ্যাপক সুকুমার একটি অনামি পত্রিকায় মাস্টার মশাইকে
নিয়ে বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার স্মৃতি কথা লিখেছিলেন।পত্রিকার কর্তৃপক্ষ তাকে দশ টাকা
পারিশ্রমিক ও দিয়েছিলেন।সুকুমারের ধারণা ছিল পত্রিকাটি কেউ পড়বে না। বহুবছর পর
সেই ভুল তার ভেঙেছিল,যখন তিনি জেনেছিলেন যে,মাস্টার মশাই স্বয়ং লেখাটি পড়ছেন।
বহু বছর পর তাঁর জীবনের বিভীষিকা অংকের মাস্টারমশায়ের সঙ্গে দেখা হতে,তাকে শ্রদ্ধা
জানাতে তাঁর এতটুকু দেরি হয়নি। তিনি মাস্টার মশাই কে ভয় পেয়েছেন কিন্তু অশ্রদ্ধা
করেননি। আবেগ প্রবন বৃদ্ধ মানুষটির সঙ্গে কথা বলতে বলতে সুকুমার যেন তাকে নতুন
করে আবিষ্কার করেন। যে স্নেহ মায়া-মমতা ক্ষমা মহাসমুদ্র মাস্টারমশায়ের স্মৃতিকে তিনি
দশ টাকায় বিক্রি করেছেন, সেই মানুষটি অমূল্য স্নেহ তাঁর মাথায় ঝরে পড়েছে--এই ভেবে
সুকুমার আত্মগ্লানিতে জর্জরিত হন।
২।'আমার ছাত্র আমাকে অমর করে দিয়েছে,-- বক্তা কে? বক্তার মানসিকতার পরিচয় দাও।
উত্তর: নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের রচিত দাম ছোটগল্পে বক্তা হলেন সুকুমারের স্কুলের অংকের
মাস্টারমশাই।কর্মজীবনে মাস্টারমশাই ছিলেন তার ছাত্রদের কাছে বিভীষিকা।অঙ্কে যথেষ্ট
জ্ঞান ছিল এবং যেকোনো জটিল অঙ্গকে ঝড়ের বেগে খুব সহজ করে ছাত্রদের বোঝাতে।
ছাত্ররা অংক না পারলে তিনি প্রচন্ড রেগে গিয়ে চড় থাপ্পড় মারতেন। এইজন্য ছাত্ররাও
তাকে যমের মত ভয় পেতো।
স্কুলের মাস্টারমশায়ের ছাত্র সুকুমার সে ছিল অংকে খুব দুর্বলপরবর্তীকালেসুকুমারঅধ্যাপক
হয়ে একটি বাল্য স্মৃতিতে মাস্টারমশাই সম্পর্কে একটি গল্প লিখেন। সুকুমারমাস্টারমশায়ের
সম্পর্কে সমালোচনা করে বলেন,এইভাবে জোর করে ভয় দেখিয়ে মেরেছাত্রদের কোন
বিষয় শেখানো যায় না,সেই দিক থেকে বিচার করলে মাস্টারমশায়ের শিক্ষা
পদ্ধতি ছিল ভুল।
ঘটনাচক্রে মাস্টারমশাই সুকুমারের লেখাটি পড়েছিলেন। তিনি লেখাটি পড়ে সুকুমারের
ওপর রেগে না গিয়ে উদারমনে সন্তানের অধিকার বলে গ্রহণ করেছিলেন।এত বছর পরে
সুকুমার তার কথা মনে রেখে গল্প লিখেছে এটা আনন্দ এবং গর্বের বিষয় হয়ে উঠেছিল।
ছাপার অক্ষরে নিজের নামটি দেখে তার মনে হয়েছিল যে সুকুমার তাকে অমর করে
দিয়েছে।
CONTENTS:
আরো পড়ুন:
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশের প্রশ্ন উত্তর Click Here
ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
দাম গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
নব নব সৃষ্টি প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click Here
হিমালয় দর্শন গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
Teles of Bhola grandpa Lesson1 Unit 1 Click Here
Teles of Bhola grandpa Unit 2 Click Here
All about a Dog Lesson 2-Unit -1 -Click Here
All about a Dog Lesson 2 Unit 2 Click Here
Autumn poem Lesson 3 Part 1 Click Here
A Day in the zoo Lesson 4 Part 1 Click Here
0 Comments