হারিয়ে যাওয়া কালি কলম
শ্রীপান্থ
১। সূচিপত্র:
ক।লেখক পরিচিতি।
খ। হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের উৎস
গ।হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের আলোচনা বা বিষয়বস্তু
ঘ।সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখ।(MCQ) প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
ঙ।অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।(SAQ)-২০টি শব্দের মধ্যে।প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
চ।ব্যাখ্যা ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।৬০টি শব্দের মধ্যে।প্রতিটি প্রশ্নের মান-৩
ছ।বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী বা বড়ো প্রশ্নোত্তর ১৫০টি শব্দের মধ্যে।প্রতিটি প্রশ্নের মান-৫
ebookপেজটিছাত্রছাত্রীদেরজন্যসুখবর-1stইউনিট,2ndইউনিট,3ndইউনি,টেস্ট,ফাইনালপক্ষা
প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণভাবে তোমাদের সাহায্য করবে।তাই এই সাফল্য আমাদের কাছে
বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ক।লেখক পরিচিতি: শ্রীপান্থ:
সাহিত্যিক প্রাবন্ধিক নিখিল সরকার শ্রী প্রান্থ ছদ্মনামে লিখতেন। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান
বাংলাদেশের ময়মনসিংহের অন্তর্গত গৌরীপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের স্নাতক শ্রীপান্থ তরুণ বয়স থেকেই সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত
ছিলেন। যুগান্তর পত্রিকায় কর্মজীবনের সূচনা,পরে আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকীয়
বিভাগে দায়িত্ব সামলানোরপাশাপাশিচালিয়েছেননিরন্তরগবেষণা,লিখেছেনবহুগবেষণামূলক
প্রবন্ধতাঁরলেখাউল্লেখযোগ্যগ্রন্থগুলিহল'আজবনগরী,শ্রীপ্রান্তের কলকাতা,দেবদাসী,বটতলা,
ঠর্গী,মঙ্গলপান্ডের বিচার,যখন ছাপাখানা এলো,- প্রভৃতি। বাংলায়প্রথম ধাতব হরফের ছাপা
বই হ্যালোহেডের 'আ'গ্রামার অব দ্য বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ এর সাম্প্রতিক একটি সংস্করণের
দীর্ঘ ভূমিকা তিনি লিখেছেন।১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি'আনন্দপুরস্কার,লাভ করেন।২০০৪
খ্রিস্টাব্দে ১৭ই আগস্ট মঙ্গলবার কলকাতার সল্টলেকের বাসভবনে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ
করেন।মৃত্যু কালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।
খ।হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের উৎস:
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম,প্রবন্ধটি শ্রীপান্থর'কালি আছে কলম নেই কাগজ আছে মন
নেই,গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
গ।হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের বিষয়বস্তু:
প্রাবন্ধিক নিজের ছাত্রজীবনের লেখালেখির ইতিহাস খুব গভীরভাবে মনে করেছেন।তাঁর
বর্তমান কর্মস্থলটি অফিসিয়াল হলেও সেখানে কারোর কাছে কলম ছিল না তারা সবাই
কম্পিউটারে কাজ করেন।লেখক ছাড়া সেখানে সবাই কম্পিউটার ব্যবহার করেন। এমনকি
কখনো ভালোবেসে তারা লেখকের লেখাটাও কম্পিউটারে লিখে দেন।কোন দিন কলম নিয়ে
যেতে ভুলে গেলেই বিপদ।অফিসে কারোর কাছে কলম থাকে না।আবার কলম পেলেও
তাতে ভালো লেখা হয় না। লেখালেখি অফিস হওয়ার সত্বেও কারোর কাছে কলম থাকে না
তবুও তারা সবাই মুন্সী।
লেখকের মতো যাঁরা গ্রামে জন্মেছেন।তারা জানেন কিভাবে কলম আর কালি বাড়িতেই তৈরি
করা হত। বাসের কঞ্চি কেটে তৈরি করা হত কলম তার ছুঁচোলো মুখটা চিরে দিতে হত, যাতে
কালি ধীরে ধীরে চুঁইয়ে পড়ে আর লেখার পাতা বলতে ছিল কলাপাতা।সেই কলাপাতা কেটে
কাগজের মত সাইজ করে ছাত্ররা তাকে হমটাক্স করত।সেই পাতার বান্ডিল স্কুলে নিয়ে
যাওয়া হত।তারপর মাস্টার মশাই দেখে বুঝে আড়াআড়িভাবে ছিঁড়ে ফেরত দিতেন
ছাত্রদের। ছাত্ররা সেগুলো আবার পুকুরে ফেলে দিত।কেননা,সমাজে একটা কথা চালু ছিল
যে লেখার পাতা গরুতে খেলে অমঙ্গল হয়। আর গরুকে অক্ষর খাওয়ানো নাকি একটা পাপ বলে ধরা হয়।
লেখক কালি তৈরীর পদ্ধতির কথা জানিয়েছেন-
প্রাচীনলোকেরাবলতেন,তিল,ত্রিফলা,শিমুলছাল,আর ছাগলের দুধ মিশিয়ে লোহার পাত্রে
কালি তৈরি করা হলে,সেই কালি খুব টেকসই বা পাকা কালি হয়।তখনকার দিনে বাড়িতে
কালি তৈরি করা হত। তখন তো প্রতি বাড়িতেই রান্না হত কাঠের উনুনে তাতে কড়াইয়ের
তলায় জমত কালি।লাউপাতা দিয়ে ঘষে সেই কালি একটি পাত্রে নিয়ে জল দিয়ে গুলে নিলে
হয়ে যেত লেখার কালি।কেউ কেউ আবার ওই কালো জলে হরিতকী ঘষত।অনেক সময়
আতপ চাল ভেজে তা পুড়িয়ে বেঁটে ওতে মেশানো হত।তারপর একটু গরম করে নিলেই
হত।ন্যাকড়ায় ছেঁকে নিলে হয়ে যেত ভালো দারুন কালি।আর তখন দোয়াত বলতে ছিল
মাটির দোয়াত।
প্রাচীনকালে মিশরে নীলনদের তীর থেকে নলখাগড়া তুলে এনে তা দিয়ে কলম বানানো হত।
ফিনল্যান্ডের লোকেরা হাড় দিয়ে কলম বানাত।সম্রাট জুলিয়াস সিজারের কলমের নাম ছিল
স্টাইলাস অর্থাৎ একটি ব্রোঞ্জনির্মিত শলাকা। চীনারা লিখতেন তুলিতে।কিছু দেশে আবার
পাখির পালককেও কলম হিসাবে ব্যবহার করা হত। বর্তমানকালে সেইসব কলমের জায়গা
দখল করেছে ফাউন্টেন্ পেন বা ঝরনা কলম।
কলমের দুনিয়ায় বিপ্লব ঘটিয়েছে ঝরনা কলম
অনুমান করা যায় নামটা রবীন্দ্রনাথের দেওয়া। লুইস অ্যাডসান ওয়াটারম্যানের স্রষ্টা।লেখক
জানিয়েছেন তার কলম কেনার অভিজ্ঞতার কথা।তিনি একবার কলকাতার কলেজ স্ট্রিটে
ঝর্না কলম কিনতে গিয়েছিলেন দোকানদার তাকে পার্কার,ওয়াটারম্যান,পাইলট ইত্যাদি
নানা নামের কলমের কথা শোনান। লেখক কিনেছিলেন জাপানি পাইলট।তিনি জাপানি
পাইলট কলমটিকে অনেকদিন ধরে তার সংগ্রহে রেখেছিলেন। বিখ্যাত লেখক
শৈলজানন্দের সংগৃহে ডজন দুয়েক ফাউনডেন পেন ছিল তাতে পার্কার ছিল বেশ কয়েক
রকমের। জনপ্রিয় কথা শিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কলম সংগ্রহের নেশা ছিল।
আদিতে এই ফাউন্টেন পেনের নাম ছিল রিজার্ভার পেন।ওয়াটারম্যান তাকে উন্নত রূপ দিয়ে
তৈরি করেছেন ফাউন্ডেনপেন।লেখক জানিয়েছেন যে ফাউন্টেন এলেও তিনি অনেকদিন
পর্যন্ত দোয়াত ও কালির কলম ব্যবহার করেছেন। ধীরে ধীরে বাজারের এলো ফাউন্টেন
পেন।দেশ-বিদেশে বিভিন্ন কলম কালিতে বাজার ছেয়ে গেল।উন্নত কলমও বাজারে এল।
সোনা ও প্লাটিনাম দিয়ে নিব তৈরি হল।শ্বেতপাথর,ব্রোঞ্জ,পিতল,ভেড়ার সিং-এমনকি সোনার
তৈরির দোয়াত এল।এইসব দেখে লেখকের আক্ষেপ হয়।এই দোয়াতের কালি দিয়েই
কালিদাস,কাশীরামদাস,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,বঙ্কিমচন্দ্র,শরৎচন্দ্র সাহিত্যিকরা অমর রচনা লিখে
গেছেন। এরপর বাজারে এল বলপেন-ডটপেন। লেখকের মনে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে
বলপেনের আবিষ্কার হয়েছে।এই বল পেনেও সোনার ও হীরের হয়,-একটি পেনের দাম
আড়াই হাজার পাউন্ড পর্যন্ত হতে পারে।
কলমের জায়গা দখল করেছে কম্পিউটার। বঙ্কিমচন্দ্র একদিন লিখেছিলেন-"লাঠি তোমার
দিন ফুরাইয়াছে"তেমনি এবার বলা যায়,"কলম তোমার দিন ফুরাইয়াছে"।কলম ছিল বলে
লিপিকরদের খ্যাতি ছড়িয়েছিল বিশ্বজগতে।বলা হয়ে থাকে কলম তলোয়ারের চেয়েও বেশি
শক্তিশালী।এখনো অনেক লেখক পুরনো ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন এমনকি সত্যজিৎ রায় শেষ
দিন পর্যন্ত নিজের কলমের মর্যাদা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন।
লেখক একটি ঘটনার কথাবলেছেন, শোনা যায় কঙ্কাবতী ডমরুধর এর রচয়িতা
ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় হাতের কলম ও কিভাবে বুকে বিঁধে মারা গিয়েছিলেন।অর্থাৎ
লেখক বলতে চেয়েছেন কলমকেও অনেক সময় সন্ত্রাসের ভূমিকায় দেখা গেছে।
ঘ।সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখ।(MCQ) প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
১। শ্রীপান্থের আসল নাম-
ক)অন্নদাশঙ্কর রায়
খ)নিখিল নাথ রায়
গ)নিখিল সরকার
ঘ)সুবোধ ঘোষ
উত্তর:(গ)নিখিল সরকার
২।লেখকের হাতে ছাড়া আর কারোর হাতে কী নেই?
ক) সময়
খ) কাজ
গ) ঘড়ি
ঘ) কলম
উ:(ঘ) কলম
৩।লেখক ছাড়া তাঁর অফিসের আর সকলের সামনেই রয়েছে-
ক) টাইপ রাইটার
খ) কম্পিউটার
গ) ক্যালকুলেটর
ঘ) টেলিফোন
উ:(খ)কম্পিউটার
৪।লেখকরা হোম টাস্ক করতেন-
ক) শালপাতায়
খ) পদ্মপাতায়
গ) শুকনো তালপাতায়
ঘ) কলাপাতায়
উ:(ঘ) কলাপাতায়
৫।অক্ষরজ্ঞানহীনকে লোকে বলে-
ক) চোখ থাকতেও অন্ধ
খ) ক অক্ষর গোমাংস
গ) সাপের বর
ঘ) অন্ধের কিবা দিন কিবা রাত
উ:(খ) ক অক্ষর গোমাংস
৬।কড়াইয়ের তলার কালি ঘষে তোলা হত-
ক) লাউ পাতা দিয়ে
খ) গাঁদা পাতা দিয়ে
গ) কুমড়ো পাতা দিয়ে
ঘ) কচু পাতা দিয়ে
উ:(ক) লাউ পাতা দিয়ে
৭।ছোটবেলায় লেখকদের লেখালেখির প্রথম উপকরণগুলি ছিল-
ক)খাগের কলম,মাটির দোয়াত,ভউজপত্র,ভেষজ কালি
খ)পালকের কলম,কাঁচের দোয়াত,ঘরে বানানো কোলিন
গ) বাঁশের কলম,মাটির দোয়াত,কলাপাতা,ঘরে তৈরি কালি
ঘ) পেন্সিল,রং
উ:(গ) বাঁশের কলম,মাটির দোয়াত,কলাপাতা,ঘরে তৈরি কালি
৮।স্টাইলাস আসলে কী?
ক) লৌহ শলাকা
খ) তামার শলাকা
গ) ব্রোঞ্জের শলাকা
ঘ) সোনার শালাকা
উ:(গ) ব্রোঞ্জের শলাকা
৯। কুইল হল-
ক) খাগের কলম
খ) পালকের কলম
গ) কঞ্চির কলম
ঘ) খাগড়ার কলম
উ:((খ) পালকের কলম
১০)কলমের দুনিয়ায় সত্যিকারের বিপ্লব ঘটায়-
ক) ব্রঞ্জের শলাকা
খ) ফাউন্টেন পেন
গ) বলপেন
ঘ) কুইল বা পালকের পেন
উ:(খ) ফাউন্টেন পেন
১১)ফাউন্টেন পেনের বাংলা নাম'ঝরনা কলম,নামটি দেন-
ক)বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
খ)রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
গ)শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
ঘ)মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
উত্তর:(খ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১২)ফাউন্টেন পেনের স্রষ্টা হলেন-
ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
খ) লুইস অ্যাডসন
গ) লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান
ঘ) গিটার পার্কার
উ:(গ) লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান
ঙ।অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।(SAQ)-২০টি শব্দের মধ্যে।প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
১।'কিন্তু আমি ছাড়া কারও হাতে কলম নেই।—কেন?
উত্তর:লেখক শ্রীপান্থ কাজ করতেন একটি সংবাদপত্র অফিসে।সেখানে একমাত্র তিনিই
কলমে লিখতেন, বাকি সকলেই লিখতেন কম্পিউটারে। তাই কারোর হাতে কলম থাকতো
না।
২।'আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই,-কালিতৈরির পদ্ধতিটি কীরূপ ছিল?
উত্তর:কড়াইয়ের ভুসো কালি জলে গুলে তাতে হরীতকী ঘষে বা আতপ চাল পোড়া মিশিয়ে,
খুন্তিকে লাল করে পুড়িয়ে সেই জলে ছ্যাকা দিয়ে কালি তৈরি হত।
৩।‘দোয়াত মানে মাটির দোয়াত,-দোয়াত বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর:দোয়াত হল কালি রাখার পাত্র। ছোটোবেলায় কালি তৈরির পর ন্যাকড়ায় ছেঁকে
লেখকরা মাটির দোয়াতে ঢেলে রাখতেন। দোয়াত লিখতেন। কলম নিতে ভুলে গেলে কলম
পাওয়া ভার ছিল। আর } মাটি ছাড়াও কাচ ও অন্যান্য ধাতুর হত।
৪।প্রাচীনদের কালি তৈরি প্রসঙ্গে অভিমত কী ছিল?
উত্তর:প্রাচীনেরা তিল, ত্রিফলা আর শিমুল ছাল ছাগলের দুধে ফেলে লোহার পাত্রে
রেখে অন্য একটি লোহার খুন্তি দিয়ে উপকরণগুলি ঘষে কালি বানাতেন।
৫।কলম সেদিন খুনিও হতে পারে বইকি। – বক্তব্যটি স্পষ্ট করো।
উত্তর:খ্রিস্টের জন্মের আগে রোমের অধীশ্বর জুলিয়াস সিজার ব্রোঞ্জের কলম বা স্টাইলাস
দিয়ে কাসকাকে আঘাত করেছিলেন।সে-কথাই এখানে বলা হয়েছে।
৬।কুইল কী?
উত্তর:পালকের কলমের ইংরেজি নাম ‘কুইল’। কার্জন বাঙালি সাংবাদিকদের ইংরেজি দেখে
নাম দেন বাবু কুইল ড্রাইভারস। এখন এই কুইল কেবল পুরোনো দিনের ছবিতেই দেখা যায়।
৭। ফাউন্টেন্ট পেনের আবিষ্কারক কে?
উত্তর: ফাউন্টেন পেন এর আবিষ্কারক হলেন লুইস অ্যডসন ওয়াটারম্যান।
৮। লেখক শ্রীপান্থ ছোটবেলায় কিসে হোমটাস্ট করতেন?
উত্তর:লেখক শ্রীপান্থ ছোটবেলায় কলাপাতা কেটে কাগজের মতো সাইজ করে নিয়ে তাতে
হোম টাস্ক করতেন।
৯।'সেই আঘাতেরই পরিণতি নাকি তাঁর মৃত্যু,- কোন আঘাতের পরিণতি কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: বাংলা সাহিত্যে'কঙ্কাবতী ও ডমরউধর,এর স্রষ্টা ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় নিজের
হাতের কলম অসবধানতাবশত বুকে বিঁধে মারা যান। সেই ঘটনার কথা বলা হয়েছে।
১০।'নামটা রবীন্দ্রনাথের দেওয়াও হতে পারে,- রবীন্দ্রনাথের দেওয়ার নামটি কি?
উত্তর:রবীন্দ্রনাথের দেওয়া ফাউন্টেন পেনের নামটি হল ঝরনা কলম।
১১।দুজন সাহিত্যিকের নাম করো, যাঁদের নেশা ছিল ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ করা।
উত্তর:শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় এবং শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় হলেন সেই দুজন সাহিত্যিক
যাঁদের নেশা ছিল ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ করা।
১২।'জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন্ট,-ফাউন্টেন পেনের জন্মবৃত্তান্তটি উল্লেখ কর?
উত্তর:লুইস আ্যডসন ওয়াটারম্যান একবার এক চুক্তিপত্র সই করার সময় দোয়া উল্টে
যাওয়ায় চুক্তি বাতিল হয়ে যায় এরই বিহিত করতে তিনি ফাউন্টেন পেন আবিষ্কার করেন।
১৩।লেখক কোথা থেকে তাঁর জীবনের প্রথম ফাউন্টেন পেনটি কিনেছিলেন?
উত্তর:লেখক শ্রীপান্থ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বেশ কয়েক বছর পরে কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের
এক নামি দোকান থেকে তাঁর জীবনের প্রথম ফাউন্টেন পেনটি কিনেছিলেন।
ঝ।বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী বা বড়োপ্রশ্নোত্তর ১৫০টি শব্দের মধ্যে প্রতিটি প্রশ্নের মান-৫
১।"জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন।”—কীভাবে ফাউন্টেন পেনের জন্ম হল?এই প্রসঙ্গে লেখকের
ফাউন্টেন পেন কেনার অভিজ্ঞতাটি বর্ণনা করো।
উত্তর:শ্রীপান্থর রচিত'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম, প্রবন্ধটি'কালি আছে কলম নেই কাগজ
আছে মন নেই,গ্রন্থ থেকে গৃহীত।আলোচ্য অংশে,আমরা দেখি লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান
সেকালের ব্যবসায়ীর মতো দোয়াত কলম নিয়ে ব্যবসায় বের হতেন।
তিনি একবার চুক্তিপত্র সই করতে গিয়েছেন একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে।দলিলের কিছুটা অংশ
লেখা হয়েছে,এমন সময় দোয়াতের কালি হঠাৎ উপুড় হয়ে দলিলের ওপর পড়ে যায়। তিনি
আবার ছোটেন কালির সন্ধানে।ফিরে এসে শোনেন ইতিমধ্যে আর একজন ব্যবসায়ী সঙ্গে
চুক্তিপত্রে সই হয়ে গেছে।ওয়াটারম্যান মনে মনে সংকল্প করেন এবং এই সংকল্প থেকেই
তিনি আবিষ্কার করেন ফাউন্টেন পেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বেশ কয়েক বছর পর লেখক কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের একটা নামী
দোকানে ফাউন্টেন পেন কিনতে যান। দোকানি তাঁকে নানারকম ফাউন্টেন পেনের নাম
বলে চললেন—পার্কার,শেফার্ড,ওয়াটারম্যান,সোয়ান,পাইলট ইত্যাদি।কোন পেনের কত দাম
তা দোকানদার বললেন এবং তা শুনে তিনি হতভম্ব হয়ে গেলেন। দোকানি একটা সস্তা
জাপানি পাইলট ছুড়ে দেন একটা কাঠের বোর্ডের ওপর। তারপর কলমটি বোর্ড থেকে খুলে
নিয়ে তিনি দেখান তার নিবটি ঠিক আছে। দু-একলাইন লিখেও দেখান। লেখক এই জাদু-
পাইলটটি নিয়েই ঘরে ফিরে আসেন।
২।"আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই।”—লেখক বর্ণিত কালি তৈরির পদ্ধতিটি
আলোচনা করো।
উত্তর:শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে লেখক শ্রীপান্থ তাঁর ছোটোবেলায়
বাড়িতে কালি তৈরির পদ্ধতি বিবরণ দিয়েছেন। লেখকেরা নিজেরাই কালি তৈরি করলেও এ
কাজে মা,পিসি, দিদিরাও সাহায্য করতেন। পুরোনো মানুষেরা কালি তৈরির পদ্ধতি হিসেব
করে বলতেন—“তিল ত্রিফলা সিমুল ছালা,ছাগলের দুগ্ধে,করি, লৌহ পাত্রে রেখে গরম করে
ফেটে কালি তৈরি করা হতো।কিন্তু সেই পদ্ধতি ছিল একটু কঠিন। তাঁরা সহজ পদ্ধতি
হিসেবে বাড়িতে কাঠের উনুনে রান্নার কড়াইয়ের নীচে জমে থাকা কালি লাউপাতা দিয়ে ঘষে
তুলে একটা পাথরের বাটিতে রাখা জলে গুলে নিতেন। এরপর ছোটোরা হরীতকী ঘষত।
কখনো-কখনো মাকে দিয়ে আতপ চাল ভাজিয়ে,পুড়িয়ে,বাটিয়ে মিশিয়ে নেওয়া হত।সব
ভালো করে মিশিয়ে একটা খুন্তির গোড়ার দিকটা ভালো করে পুড়িয়ে সেই জলে ছ্যাঁকা
দেওয়া হত। তারপর তা ন্যাকড়ায় ছেঁকে মাটির দোয়াতে ঢালা হত।এভাবেই লেখকরা
ছেলেবেলায় কালি তৈরি করতেন।
৩।“দোয়াত যে কতরকমের হতে পারে, না দেখলে বিশ্বাস করা শক্ত।”-দোয়াত সম্পর্কে
লেখকের মতামত বর্ণনা করো।
উত্তর:লেখক শ্রীপান্থর রচিত‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে লেখক পুরোনো দিনের কালি
ও কলম-সংক্রান্ত আলোচনায় মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন ধরনের দোয়াতের কথা এনেছেন। তাঁর
মতে,দোয়াত যে কত রকমের হতে পারে তা না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন-যেমন,কাচের
কাট-গ্লাসের, পোর্সেলিনের,শ্বেতপাথরের,জেডের,পিতলের, ব্রোঞ্জের,ভেড়ার শিংয়ের
এমনকি সোনারও তৈরি।লেখক ছেলেবেলায় দেখেছেন,গ্রামে কেউ দু-একটা বড়ো পরীক্ষায়
পাস করলে গ্রামের বয়স্ক মানুষেরা আশীর্বাদ দিয়ে থাকেন“বেঁচে থাকো বাছা,তোমার সোনার
দোয়াত কলম হোক"-একথা মিথ্যা নয়,
আক্ষরিক অর্থে সত্যিই যে সোনার দোয়াত হত, তা লেখক প্রত্যক্ষ করেন সুভো ঠাকুরের
বিখ্যাত দোয়াতের সংগ্রহ করতে গিয়ে। লেখক লক্ষ করেন,সাহিত্য এবং ইতিহাসের বহু
চরিত্র কোনো কোনো দোয়াতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। লেখক ভাবেন এমনই সব দোয়াতের
কালি দিয়ে শেকসপিয়র,দান্তে,মিলটন,কালিদাস,ভবভূতি, কাশীরাম দাস, কৃত্তিবাস ওঝা
থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়,শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ
লেখকরা তাঁদের সব কালজয়ী রচনা লিখে গেছেন।
৪।"বিস্ফোরণ। কলম বিস্ফোরণ”–এই কলম বিস্ফোরণের প্রভাব কীভাবে হারিয়ে যাওয়া কালি
কলম প্রবন্ধে আলোচনা করো।
উত্তর: শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে ‘বিস্ফোরণ বলতে লেখক কলমের
বিস্তার ও প্রসারকে বুঝিয়েছেন।লেখক বলেছেন আগেকার দিনে লেখার জন্য কালি-দোয়াত
ব্যবহৃত হত। আর লেখার জন্য কালি লেখকরা নিজেরাই তৈরি করতেন। ‘কালি-দোয়াত
হারিয়ে সেই জায়গায় এল ফাউন্টেন পেন,তারপর ডট-পেন এলো। সেই সময়ে একপ্রবাদ
চালু ছিল এবং বলা হত-“কলমে কায়স্থ চিনি,গোঁফেতে রাজপুত।” অর্থাৎ কলম থাকতো এক
বিশেষ গণ্যমান্য ব্যক্তির কাছে।কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কলম বা গোঁফ,কোনোকিছুই আর
বিশেষ ব্যক্তি নয়।কথায় কথায় লেখক মজা করে বলেছেন-"কালির অক্ষর নাইকো পেটে,
চণ্ডী পড়েন কালীঘাটে।” অযোগ্যের হাতে ক্ষমতা চলে এলে কলমের অধিকারী হয়ে ওঠার
কথা লেখক বলতে চেয়েছেন। কলম যে এখন সবাই ব্যবহার করছে তা দেখে লেখকের
মনের ভিতরে কষ্ট হচ্ছে। কলমকে ঘিরে তাঁর শৈশব দিনের কথাগুলি মনে পড়ে আর কষ্ট
লাগে।কলম বাজারে এত সস্তা হয়েছে যে আজকাল আর পকেটমাররাও পকেট মারে না।
কলম যে তাদের কাছেও অস্পৃশ্য লেখক সে-কথা জানিয়েছেন।
Contents:
আরো পড়ুন:
জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
অসুখী একজন কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
আফ্রিকা কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর Click Here
অভিষেক কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
পথের দাবী গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
সিন্ধুতীরে কবিতার প্রশ্ন উত্তর Click Here
নদীর বিদ্রোহ গল্পের প্রশ্ন উত্তর Click Here
the passing away of bapu question answer
Unit 1 Click Here
The passing away of bapu question answerunit 2 Click Here
My Own True family poem Lesson 4 Click Here
0 Comments